শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার আ.লীগ নেতাকর্মীর প্রভাবে নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের সংবর্ধনা বাতিল

অপরাধ ঠেকাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে বসছে কাঁটাতারের প্রাচীর

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে অপরাধ ঠেকাতে নিরাপত্তা আরও জোরদারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সেজন্য নতুন করে দুই ব্যাটালিয়ন আর্মড পুলিশ মোতায়েনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

একই সঙ্গে অপরাধপ্রবণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাম্পগুলোর চারপাশে তিন ফুট উচ্চতার কাঁটাতারের প্রাচীর নির্মাণ করারও প্রক্রিয়া চলছে। মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্দ্ধতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ, হত্যা-ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, মাদক, মানবপাচার, আধিপত্য বিস্তারের ঘটনা দিন দিন বেড়েছে। যে কারণে প্রাচীর নির্মাণ ও পুলিশ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, “ক্যাম্প এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে দু’টি আর্মড ব্যাটালিয়ন গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব আসার পরপরই প্রাথমিক পর্যায়ে ৫৮০ জনের এক আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশ পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরে তা বাতিল করে ৮৮০ জনের টিম গঠন করে পাঠানোর উদ্যোগ চলছে।’

অন্যদিকে, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের প্রস্তাবে ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাম্পের ভেতরে পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাবের যৌথ ক্যাম্প স্থাপনেরও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এজন্য জরুরী ভিত্তিতে স্থান চিহ্নিত করে জমি বরাদ্দের উদ্যোগের কথা জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র।

শরণার্থী এবং অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অপরাধ সংঘটিত হওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে পারে সরকার। তবে তা স্থায়ী কোনো সমাধান নয়।’ বিশাল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা দেওয়ার মতো সক্ষমতা সরকারের নেই, সেজন্য স্থায়ীভাবে কমিউনিটি পুলিশের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে, অপরাধ বন্ধ এবং ক্যাম্পের বাইরে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে অপরাধ না করতে পারে সেজন্য কাঁটাতারের প্রাচীর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ৭টি আশ্রয় শিবিরের ১৫৭ কিলোমিটার জুড়ে এই প্রাচীর নির্মাণ করা হবে। তিন ফুট উচ্চতার গাঁথুনির ওপর এ প্রাচীর নির্মাণের প্রক্রিয়া এরইমধ্যে শুরু করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সূত্রে জানা গেছে, দাপ্তরিক উদ্যোগ শেষ করে এনেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মাঠপর্যায়ে প্রাচীর নির্মাণের কাজ সেনাবাহিনীর করার কথা রয়েছে। শিগগিরই এ প্রক্রিয়া শুরু হবে।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক শাহিদুজ্জামান মনে করেন, এভাবে প্রাচীর দিয়ে রোহিঙ্গাদের আটকে রাখা যাবে না। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সরকারের ব্যর্থতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশাল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের ফেরত না পাঠাতে পারলে স্থানীয় নিরাপত্তা যেমন হুমকির মুখে পড়বে, তেমনি তার প্রভাব জাতীয় নিরাপত্তায়ও পড়বে।’

পাশাপাশি কক্সবাজার ও বান্দরবানের ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গারা এখন ক্যাম্প থেকে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তিন স্তরের নিরাপত্তা চেকপোস্ট থাকার পরেও কোনোভাবে আটকে রাখা যাচ্ছেনা তাদের।

শরর্ণাথী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী গত দুই বছরে ৫৮ হাজার ৩৫১ জন রোহিঙ্গাকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধরে এনে ক্যাম্পে পাঠিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আর এ কাজে সহযোগিতা করার জন্য ৫৩৬ দালালকে ধরে এনে আটক করা হয়েছে।

এছাড়া নানা অপরাধে গত দুই বছরে ৪০ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। এসব ঘটনায় শতাধিক গ্রেফতার হলেও মামলা হয়েছে সাড়ে চারশো।

সম্প্রতি স্থানীয় যুগলীগ নেতা হত্যার ঘটনায় গোটা ক্যাম্প এলাকায় আইনশৃঙ্খলা জোরদার করা হয়। ওই ঘটনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারাও ক্যাম্প পরিদর্শনে যান।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ