শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার আ.লীগ নেতাকর্মীর প্রভাবে নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের সংবর্ধনা বাতিল

থ্যালাসিমিয়া চিকিৎসায় হোমিওপ্রতিবিধান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ

থ্যালাসিমিয়া রক্তের এমন একটি মারাত্মক রোগ যা শিশুরা বংশগতভাবে তাদের পিতা- মাতা থেকে পেয়ে থাকে। বিজ্ঞানীদের মতে, সাধারণত চাচাত ভাই- বোনদের মধ্যে বিয়ে হলে সন্তানদের থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই রোগীদের রক্তের লাল কণিকা (RBC) তাড়াতাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। ফলে তাদের রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম থাকে এবং আয়রণের পরিমাণ বেড়ে যায়।

এ কারণে এদেরকে ২০ থেকে ৩০ দিন পরপর রক্ত দিতে হয় এবং শরীর থেকে অতিরিক্ত আয়রণ বের করার জন্য ঔষধ খেতে হয়। খুব ছোট শিশুদের মধ্যে রক্তশূণ্যতা, জ্বর,শারীরিক বৃদ্ধি না হওয়া, প্লীহা বড় হয়ে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখে থ্যালাসেমিয়া রোগ সন্দেহ করেন এবং রক্তের বিশেষ মাইক্রোস্কোপিক পরীক্ষার মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হন।

যেহেতু এই রোগের চিকিৎসায় প্রচুর টাকা খরচ হয়, সেহেতু মধ্যবিও বা দরিদ্ররা এ রোগে আক্রান্ত হলে ভিখারী হতে বেশী সময় লাগে না। এতো পয়সা খরচ করেও এসব শিশুদেরকে সাধারনত বিশ-ত্রিশ বছরের বেশী বাচাঁনো যায় না। ধ্বংসপ্রাপ্ত লাল কণিকা থেকে নির্গত আয়রণের লিভার, হৎপিন্ড এবং পেনক্রিয়াসে জমা হতে থাকে একংশরীরের অতিরিক্ত আয়রণের বিষক্রিয়ায় এরা লিভার সিরোসিস, হার্ট ফেইলিওর, প্লীহা বড় হওয়া ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হয়।

এদের শরীরে যৌবনের আগমণ ঘটে বিলম্বে আর এদের শারীরিক বৃদ্ধিও তেমন একটা ঘটে না। আর এটি একটি মারাক্তক জেনিটিক ডিজিজ বিধায় খুব একটা নিরাময় হয় না বলে সবাই বিশ্বাস করত। তবে ইদানীং বিভিন্ন দেশের অনেক হোমিওবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অগণিত থ্যালাসিমিয়া রোগীকে সমপুর্ণরুপে আরোগ্য করার দাবি করেছেন যাদের ডিসচার্জ করার পর পাচঁ ছয় বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও রক্ত দেয়ার প্রয়োজন হয়নি।

হোমিওস্পেশালিষ্টদের মতে, শতকরা ৫০ ভাগ থ্যালাসেমিয়া রোগীকে হোমিওচিকিৎসার মাধ্যমে পুরোপুরি রোগ মুক্ত করা আল্লাহর রহমতে সম্ভব।আর অবশিষ্ট থ্যালাসেমিয়া রোগীরা পুরাপুরি রোগমুক্ত না হলেও হোমিওচিকিৎসায় তাদের অবস্থা এতটাই উন্নত হয় যে,অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা নিলে মাসে বা বছরে একবার রক্ত নিলেই চলে। হ্যাঁ,হোমিওপ্যাথিতে মনো-দৈহিক গঠনগত চিকিৎসা কন্সটিটিউশনাল নামে এক ধরণের চিকিৎসা পদ্ধতি প্রচলিত আছে যার অর্থ হলো রোগের লক্ষণ, রোগীর শারীরিক লক্ষণ, রোগীর মানসিক লক্ষণ, রোগীর বংশগত রোগের ইতিহাস ইত্যাদি বিচার করে ঔষধ নির্বাচন করা। এতে চিকিৎসক একজন রোগীর পেছনে প্রচুর সময় দিতে হয় এবং তাকে অনেক চিন্তা-ভাবনা করতে হয়।

হোমিওপ্যাথির দুইশ বছরের ইতিহাসে দেখা গেছে যে, এমন সব কঠিন রোগও খুব সহজে নিরাময় হয়ে যায় যা অন্যান্য চিকিৎসা বিজ্ঞানে একেবারে অবিশ্বাস্য মনে করা হয়ে থাকে। থ্যালাসেমিয়া থেকে মুক্তির জন্য একজন হোমিওবিশেষজ্ঞেরর পরামর্শ মতো চলা উচিত, যিনি রোগীর শারীরিক, মানসিক, পারিবারিক লক্ষণ বিবেচনা করে সঠিক ঔষধ নির্বাচন করে থাকে।

কিন্ত দুঃখের বিষয় যে, ইদানিং কিছু কিছু হোমিওচিকিৎসক বের হয়েছে তারা কোন রোগীর লক্ষণ নির্বাচন না করে, থ্যালাসেমিয়ার রোগীকে পেটেন্ট, টনিক দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে থাকে, ঐসব ডাক্তার বাবুদেরকে ডা. হানেমান বলে থাকে শংকর জাতের হোমিওপ্যাথ।

হোমিও প্রতিবিধান: রোগ নয় রোগীকে চিকিৎসাকরা হয়। এই জন্য অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসকগন যেই সব ঔষধ ব্যবহার করে থাকে, সিয়ানোথাস, এসিড সালফ, ফেরাম মেট, আর্সেনিক এল্ব, অ্যান্ড্রাগ্রাফিস, চায়না, কার্ডুয়াস মেরী, ক্যালকেরিয়া ফ্লোর, ইউক্যালিপটাস, আলফালফা, থুজা, মেডোরিনামসহ আরো অনেক ঔষধ লক্ষণের উপর আসতে পারে। সাবধান অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসক ছাড়া ঔষধ নিজে নিজে ব্যাবহার করলে রোগ আরো জটিল আকারে পৌঁছতে পারে।

লেখক: ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ, কো-চেয়ারম্যান হোমিওবিজ্ঞান গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বিশেষজ্ঞ হোমিওগবেষকও জটিল রোগীর চিকিৎসক।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ