আওয়ার ইসলাম: শ্রীলঙ্কা হামলার ঘটনায় প্রধান আসামি জেহরান হাশিম মিশরীয় ইসলামি স্কলার ড. ইউসুফ আল কারজাভি কর্তৃক প্রভাবিত বলে প্রকাশিত সংবাদকে ভিত্তিহীন প্রমাণ করলেন মাওলানা সালমান নদভী ও ড. ইউসুফ কারজাভি।
ড. ইউসুফ কারজাভি ও মাওলানা সালমান নদভী বলেন, মুসলমানদের সাথে এ হামলার কোনো সম্পর্ক নেই। বিশ্বের যেখানেই কোনো হামলা হয় তার দোষ মুসলমানদের ওপর চাপানো হয়। আর মুসলমানরা চরম মাজলুম হিসেবে ভূমিকা রাখে। মূলত মুসলমানদের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। খবর বাসিরাত অনলাইন-এর।
শ্রীলঙ্কায় সিরিজ হামলার পর দুবাইভিত্তিক একটি সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদনে বিশ্বের প্রভাবশালী এই দুই মুসলিম ব্যক্তির বিরুদ্ধে ওই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
সংবাদ সংস্থাটি জানায়, শ্রীলঙ্কা হামলার প্রধান আসামি জেহরান হাশিমি এর মাওলানা ইউসুফ কারজাভীর সাথে যোগাযোগ ছিলো এবং হামলার পূর্বে তিনি তার সাথে দেখাও করেছেন। প্রতিবেদনের সাথে হামলাকারী জেহরান হাশিমি, মাওলানা সালমান নদভী ও ড. ইউসুফ কারজাভীর একটি যৌথ ছবি প্রকাশ করে বলা হয় ‘এটি হামলাকারীর ছবি’।
তবে সংবাদমাধ্যমটিতে প্রকাশিত এ ছবির ব্যাপারে ড. ইউসুফ কারজাভির নিজস্ব ওয়েবসাইটৈ বলা হয়, ওই সংবাদে প্রকাশিত ছবিতে আমার ডানে যাকে দেখা যাচ্ছে তিনি জেহরান হাশিম নন বরং মাওলানা আদেল হারেজি। ওই ছবিটি ফেব্রুয়ারী মাসে তোলা হয়েছিলো।
ভারতের নদওয়াতুল উলামার শিক্ষা সচিব মাওলানা লুকমান নদভী এ ব্যাপারে বলেন, "শ্রীলঙ্কায় কত নির্দোষ শিশু নিহত হয়েছে। সেটা নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা নেই। উল্টো মিথ্যা অপবাদ লাগানোর প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। এটা ইহুদীদের ষড়যন্ত্র। আর এ ষড়যন্ত্রে আরব চ্যানেলটিও শামিল”।
এ সম্পর্কে মাওলানা সালমান নদভি বলেন, কয়েকটি আরব রাষ্ট্রের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠা "আল ইত্তেহাদুল আলম লী উলামায়িল মুসলিমীন" এর সভাপতি ড. ইউসুফ কারজাভি। এই সংগঠন সর্বদা হকের কথা বলে। ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে সংগঠিত সকল বিষয়ের কঠিন বিরোধীতা করে। কিন্তু আরব নিউজের এটা সহ্য হচ্ছে না। তারা ইত্তেহাদের এ মহামান্য ব্যক্তিকে মেনে নিতে পারছেন না। তাই তারা অপবাদ আরোপ করছেন।
মাওলানা সালমান নদভি আরো বলেন, ড. ইউসুফ কারজাভি ৯৫ বছরের বৃদ্ধ মানুষ। সর্বজন স্বীকৃত আলেম। তার সম্পর্কে পূর্বেও এ চ্যানেলটি মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে। তিনি নাকি মিশরের কয়েদীদের আজাদ করে দিয়েছেন এবং লাঠি হামলা চালিয়েছেন। যা কোনো বুদ্ধিমান মানুষ বিশ্বাস করতে পারবে না। কেননা তিনি মাজুর। অন্যের সাহায্য ছাড়া এক কদম চলতেও পারেন না। তেমনিভাবে সম্প্রতি ওই চ্যানেলটি যে সংবাদ প্রকাশ করেছে সেটিও একটি অপবাদ, যার কোনো হাকিকত নেই।
তিনি আরব নিউজ কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, কিছু ইতিবাচক কাজ করুন এবং একটি ভাল সমাজ গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখুন।
উল্লেখ্য, রোববার (২১ এপ্রিল) খিস্টানদের বড় ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডে উদযাপনের সময় শ্রীলঙ্কায় তিনটি গির্জা ও চারটি হোটেলে ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলা হয়। এরপরই বাড়তে থাকে নিহত সংখ্যা। শেষপর্যন্ত ৩৫৯ এ গিয়ে ঠেকে। যা থেকে পরে গণনায় ভুল হয় বলে ১০৬ জন কমে ২৫৩ তে এসে দাঁড়ায়। এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত তাদের তদন্তে সিরিয়া ও মিশরের বিদেশিসহ অন্তত ৭৬ জনকে আটক করেছে।
(বাসিরাত অনলাইন থেকে অনুবাদ করেছেন মোস্তফা ওয়াদুদ)
আরএম/