শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬


নুসরাতের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন, যা আছে তাতে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির লাশের সুরতহাল সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার কিছু পর সুরতহাল সম্পন্ন হয়। সুরতহাল প্রতিবেদন লেখেন শাহবাগ থানার এসআই শামসুর রহমান।

সুরতহাল প্রতিবেদনের শুরুতে সূত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে আজ সকালে শাহবাগ থানায় করা সাধারণ ডায়েরি (নম্বর-৬০২)। এতে নুসরাত জাহানের বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ১৮ বছর।

লিখিত সুরতহাল প্রতিবেদনটির স্ক্যান কপি গণমাধ্যমের হাতে এসে পৌঁছেছে। নিচে তা হুবহু তুলে ধরা হলো-

নুসরাতের বয়স ১৮ বছর। মাথার চুল কালো ও পোড়া, লম্বা অনুমান ১৮ ইঞ্চি। কপাল স্বাভাবিক। উভয় চোখ ও মুখ বন্ধ, নাক দিয়ে সাদা ময়লা বেরিয়ে এসেছে। মুখমণ্ডল গোলাকার, উভয় কান, থুঁতনি, গলা, ঘাড়সহ পোড়া ও ঝলসানো। উভয় হাতের আঙুল পর্যন্ত রাউন্ড গজ-ব্যান্ডেজ, যাতে পোড়া ঝলসানো। গলার নিচ থেকে বুক-পেট-পিঠ-যৌনাঙ্গ-মলদ্বারসহ উভয় পায়ের পাতা পর্যন্ত রাউন্ড গজ-ব্যান্ডেজ, যাতে পোড়া ঝলসানো। গায়ের রঙ ফর্সা, লম্বা অনুমান ৫ ফুট ২ ইঞ্চি। পরনে রাউন্ডগজ ছাড়া কিছু নেই, সরকারি চাদর দিয়ে ঢাকা।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদে ও ঢামেক বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক স্বাক্ষরিত মৃত্যুর প্রমাণপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়— গত ৬ এপ্রিল সকাল অনুমান পৌনে ১০টায় ফেনী জেলার সোনাগাজী থানার সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার সাইক্লোন সেন্টার ভবনের ছাদে নুসরাত জাহানের গায়ে কেরোসিন অথবা পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন।

আহতাবস্থায় লোকজন তাকে চিকিৎসার জন্য সোনাগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সর্বশেষ উন্নত চিকিৎসার জন্য একই তারিখে অর্থাৎ ৬ এপ্রিল বিকাল ৩টায় ঢামেকের বার্ন ইউনিটের আইসিইউ ওয়ার্ডের রেড ইউনিটে এনে তাকে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসাধীন ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নুসরাতকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর কারণ হাসপাতালের দেয়া মৃত্যু সনদে উল্লেখ থাকলেও নুসরাতের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।’

এসআই মোহাম্মদ শামসুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে স্ট্রেচারে চিৎ হয়ে শোয়ানো অবস্থায় নুসরাত জাহান রাফির মরদেহ দেখতে পান। নুসরাতের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ আলী (৩৫) তাকে শনাক্ত করেন। সাক্ষীদের উপস্থিতিতে আয়া চাঁন বিবির সহায়তায় মরদেহটি ওলট-পালট করে দেখেন।

সুরতহাল প্রতিবেদনে নুসরাত প্রকৃতপক্ষে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কিনা সে বিষয়ে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের মতামত জানতে চাওয়া হয়।

সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় এসএই শামসুর রহমানের সঙ্গে হাসপাতালে এএসআই মিনারা খাতুন ও কনস্টেবল মো. রমজান আলী উপস্থিত ছিলেন।

সুরতহাল প্রতিবেদনের পর নুসরাতের ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ হস্তান্তর করা হযেছে নুসরাতের স্বজনদের কাছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ময়নাতদন্ত শুরু হয়ে শেষ হয় ১২টায়। তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড ময়নাতদন্তে অংশ নেন।

ময়না তদন্ত করেন নুসরাতের ময়নাতদন্তের জন্য গঠিত বোর্ডের প্রধান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. সোহেল মাহমুদ। তার সঙ্গে ছিলেন বোর্ডের দুই সদস্য প্রভাষক ডা. প্রদীপ বিশ্বাস ও প্রভাষক ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ