শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
উত্তপ্ত খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা নেতানিয়াহুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ইসরায়েলি নাগরিক গ্রেপ্তার ‘উলামায়ে কেরামদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন অসম্ভব’ নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার গাজাজুড়ে ইসরায়েলের নৃশংস হামলা, নারী-শিশুসহ নিহত ২৮ ফিলিস্তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত 'ঢাবি ও জাবির হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে' ঢাবিতে যুবক হত্যায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জন আটক কওমী মাদরাসার ছাত্রদেরকে বিসিএস এ অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া বৈষম্য: মুফতী ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই 

পশ্চিমা সেক্স এডুকেশন আমাদের শিশু পাঠ্য! কোন দিকে ধাবমান আমরা?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি লুতফর রহমান ফরায়েজী
আলেম, লেখক ও শিক্ষক

গত ২৬ মার্চ ২০১৯ বিবিসি বাংলা নিউজ করেছে, "স্কুলে যৌন শিক্ষা: বাংলাদেশে ‘জেনারেশন ব্রেকথ্রু’ প্রকল্পের ক্লাসরুমে যা পড়ানো হচ্ছে"। সাথে রয়েছে একটি ভিডিও প্রতিবেদন।

প্রতিবেদনটা পড়ে ও ভিডিওটা দেখে বিস্ময়ে হতবাক হলাম। প্রতিবেদন বা সংবাদটির মধ্যকার কিছু অংশ তুলে দিচ্ছি-

"কোর্সটি অনেকটা পশ্চিমা দেশগুলোর বিদ্যালয়ে পড়ানো সেক্স এডুকেশন বা যৌন শিক্ষার আদলে সাজানো। যদিও সংশ্লিষ্টরা এই কোর্সকে যৌন শিক্ষা বলতে নারাজ।"

"বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্র আমাকে বলছিল, "আমার অন্যান্য স্কুলের যেসব বন্ধু আছে তারা এইসব শব্দ শুনলে অনেক লজ্জা পায়। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে আর এসব হয় না।"

"অষ্টম শ্রেণীর একজন ছাত্রী বলছিল, "প্রথম প্রথম আমি নিজেও এইসব ব্যাপারে অনেক সংকীর্ণ ছিলাম। যেসব বিষয় আমি আমার মা কিংবা বন্ধুদেরকে বলতে পারতাম না, পরামর্শ চাইতে পারতাম না, এখন অবলীলায় তা পারি।"

'জেমস ক্লাস করবার পর আমরা অনেক বেশী ফ্রি হয়ে গেছি', বলছিল সপ্তম শ্রেণীর আরেক ছাত্রী।" (বিবিসি বাংলা)

পশ্চিমারা শিশু কিশোরদের যৌন শিক্ষা দিয়ে তাদের দেশটাকে কী বানিয়েছে এর একটি ছোট্ট নজীর দেই-

"বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে আমেরিকায়। এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশটিতে ধর্ষণের শিকার নারীর পরিসংখ্যান ৯১% এবং ৮% পুরুষ। অপর একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, এ দেশে ছয় জন নারীর মধ্যে এক জন ধর্ষণের শিকার। পুরুষদের ক্ষেত্রে পরিসংখ্যানটা ৩৩ জনে ১ জন ধর্ষণের শিকার।

এই দেশে ১৪ বয়স থেকেই ধর্ষণের মত অপরাধের প্রবণতা তৈরী হয় শিশু মনে।" (বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২৬ অক্টোবর, ২০১৬ ঈসাব্দ)

লেখাটা জটিল মনে হচ্ছে। আমি কী বলতে চাই হয়তো অনেকের কাছে পরিস্কার নয়। একটু খোলাসা করি-

প্রথমে বিবিসির নিউজটা থেকে পশ্চিমা আদলে যৌন শিক্ষা গ্রহণ করা বাংলাদেশী ছাত্র ছাত্রীর মন্তব্যগুলো দেখুন। ৬ষ্ঠ, ৭ম ক্লাসের শিশু কিশোর শিক্ষার্থীরা বলছে যে, যৌন মিলন, কনডম, ঋতুস্রাব ইত্যাদি সেক্স বিষয়ক আলোচনা তারা আগে করতে লজ্জাবোধ করলেও এখন তা অবলীলায় বাবা, মা এবং বন্ধুদের সাথে করতে পারে। কোন সংকোচ বা লজ্জাবোধ হয় না।

এই যে শিশুদের মানসিক পরিবর্তন। কম বয়সেই সাহসী মনোবৃত্তি। তা তাদের কোথায় নিয়ে যাবে? পরিণতি কী হতে পারে? শিশুর হাতে ধারালো অস্ত্র তুলে দেবার মত আহমকী নয়তো?

পশ্চিমারা শিশুদের এসব শিক্ষা দিয়ে কী পেয়েছে তা "বাংলাদেশ প্রতিদিন" এর নিউজ থেকে পরিস্কার। আমেরিকায় মাত্র ১৪ বছর বয়স থেকেই ধর্ষণ প্রবণতা তৈরী হয়ে যায় শিশু মনে।

এমন ছোট্ট কিশোরদের মনে ধর্ষণ প্রবণতা আমেরিকান শিশুটার হয় কোত্থেকে? কিভাবে তার মনে ধর্ষণের মত জঘন্য খাহেশের জন্ম নেয়? সে কোথায় পেল এ শিক্ষা?

এটাও কি বলে দিতে হবে যে, এ শিক্ষা পেয়েছে সে তার ক্লাসের যৌন শিক্ষা থেকেই!

আমরা আমাদের কোমলমতী শিশুদের কেমন দেখতে চাই? কী তাদের ভবিষ্যত? শিক্ষার নামে তাদের কী শিখাচ্ছি? পরিণতি কী হবে? ভাবার সময় হবে কি? নাকি অন্ধের মত পশ্চিমাদের পা চাটাই আমাদের নিয়তি!

এ বিষয়ে এখনি সোচ্চার হওয়া দরকার। যৌন বিষয়ক মৌলিক শিক্ষা থাকা জরুরী। এটা আমরাও বিশ্বাস করি। কিন্তু এর মানে ছষ্ঠ শ্রেণীর বাচ্চাদের এসব শিখানোর মানে কি? কমপক্ষে দশম শ্রেণীর পর শিক্ষা দেয়া যেতে পারে।

তাই আমাদের কোমলমতি শিশুদের আখলাক, চরিত্র রক্ষা করতে, সর্বোপরি আমাদের মাতৃভূমিকে আবাসযোগ্য সভ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে অসভ্য বর্বর পশ্চিমাদের উদ্ভট সংস্কৃতির অন্ধ অনুসরণ বাদ দিয়ে ইসলামের শালীন ও নৈতিক শিক্ষাকে প্রাধান্য দেয়া এখন সময়ের দাবী।

আল্লাহ তাআলা বুঝার তৌফিক দান করুন। আমীন।

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ