সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫ ।। ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১ ।। ১০ রমজান ১৪৪৬

শিরোনাম :
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন আনিসুজ্জামান চৌধুরী বিরতিকে কাজে লাগিয়ে মুসলিম ফুটবলারদের ওমরা পালন ধর্ষণের বিচারে শরয়ি আইন থাকলে, কোন শিশু আর ধর্ষিত হতো না: উলামা-জনতা ঐক্য পরিষদ শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় ঈদে নতুন নোট বিতরণ স্থগিত ধর্ষণ এবং নারীর পরিচয় নিয়ে অবমাননায় ১৫১ আলেমের বিবৃতি ১০ম তারাবির নামাজে তিলাওয়াতের সারমর্ম ত্রাণ বন্ধের পর এবার গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করছে ইসরায়েল তারাবিতে ফাইভ জি স্পিডে তেলাওয়াত করবেন না: আজহারী ‘আলেমদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তোলা জিহাদ নয়, সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

ওজনে কুরবানির পশু কেনাবেচা কি জায়েজ?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আল মামুন সাখি: এবছর বেশ কিছু গণমাধ্যমে খবর এসেছে কুরবানির পশু ওজন করে বিক্রি হচ্ছে। এতে মানুষের সন্দেহ দেখা দিয়েছে এমনটা বৈধ কিনা। ওজন করে কুরবানির পশু কিনলে তা শরিয়তের কোনো বিধি নিষেধে পড়ে কিনা।

আবার অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছে কুরবানির পশু গোশত প্রতি কেজি ৪০০–৪৫০ টাকা দরে কিনব? তাহলে গোশত খাওয়া উদ্দেশ্যে এসে যা, এতে তো কুরবানি হবে না।

যারা এমন ধারণা করছেন বা ভাবছেন এভাবে কুরবানির পশু কিনে কুরবানি দিলে সহিহ হবে না তাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।

আর এ জন্য জানা দরকার কুরবানি কবুল হওয়ার শর্তগুলো। কুরবানি কবুল হওয়ার জন্য চারটি শর্ত রয়েছে।

১. কুরবানি কবুল হওয়ার জন্য প্রথম শর্ত হলো ছহি নিয়্যত। কুরবানি হবে শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যে। নিয়তের পরিশুদ্ধতা না থাকলে কুরবানি কবুল হবে না।

২. কুরবানির পশু যেন সেই শ্রেণি বা বয়সের হয় যে শ্রেণি ও বয়স শরিয়ত নির্ধারিত করেছে। সেগুলো হলো- উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা। এগুলোকে কুরআনের ভাষায় বলা হয় বাহিমাতুল আনআম।

৩. শরিয়তের দৃষ্টিতে কুরবানির পশুর বয়সের দিকটা খেয়াল রাখা জরুরি। উট পাঁচ বছর, গরু বা মহিষ অন্তত দুবছর, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা হতে হবে এক বছর বয়সের।

৪. কুরবানির পশু যাবতীয় দোষ-ত্রুটি মুক্ত হতে হবে। যেমন- অন্ধ, রোগাক্রান্ত, পঙ্গু, আহত।

উল্লেখিত শর্তগুলো যদি ওজনে কুরবানির পশু কেনাবেচা সময় বিদ্যমান থাকে তাহলে কুরবানি হবে না।

এখন আসুন কেন আমরা ওজনে কুরবানির পশু কেনাবেচা করব? তার অনেকগুলো দিক রয়েছে।

১. যিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন হলো ইবাদতের মাস। ইবনে হাজার রহ. ফাতহুল বারিতে বলেন, এই দশ দিন বিশেষ বৈশিষ্ট্য মণ্ডিত হওয়ার কারণ হিসেবে আমার কাছে এটাই প্রতিভাত হচ্ছে যে, এ দিনগুলোতে সালাত, সিয়াম, দান-সদকা, হজ ইত্যাদি মৌলিক ইবাদতগুলোর সমাবেশ ঘটেছে। এ ছাড়া অন্য কখনো এগুলো একসাথে পাওয়া যায় না।

আর আমরা কুরবানির পশুর জন্য এই দশ দিনে পশুর হাটে ভিড় জমাই। যদি ওজনে কুরবানির পশু কেনাবেচা হয় তাহলে পশুর হাটে কম সময় দিয়ে বেশির সময় ইবাদতে থাকা যাবে।

২. যারা কুরবানির পশুর হাটে গেছেন তারা বুঝেন সাধ্য অনুযায়ী প্রিয় কুরবানির পশু কিনতে কতই না কষ্টদায়ক ও বিড়ম্বনা শিকার হইতে হয়। কুরবানি পশুর হাটে পশু ক্রয় করার সময় ক্রেতা এবং বিক্রেতার মাঝে দাম নিয়ে মন কষাকষি শুরু হয়ে যায়, এক পর্যায়ে হয়ত ক্রেতা লাভবান হয় নয়ত বিক্রেতা।

এতে করে দুই জনের মধ্যে সন্দেহ ও আফসুস থেকেই যায়। এমনকি বিক্রেতা লাভের আসায় কুরবানির শেষ রাতটুকু পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকে, আর এদিকে ক্রেতাও লাভের আশায় হাটে চলে আসে পরে দেখা যায় দুই জনের কোনো একজনকে লোকশানের হাত গুনতে হয়।

ইসলামে ক্রয় বিক্রয়ে একটি মাপকাঠি আছি তাহলো ক্রেতা এবং বেক্রেতা কোন জিনিস লেনদেনের সময় দুজনের কোন একজন প্রতারিত অথবা লোকসান গুণতে হয় তাহলে সেই ব্যবসা এবং কেনা বেচা হারাম।

ওজনে কুরবানির পশু ৪০০-৪৫০ টাকা দরে কিনলে এখানে উভয় পক্ষ সন্তুষ্ট থাকছে, তাহলে হারাম বা না যায়েজের কোনো কারণ নেই।

৩. কুরবানির পশুর হাটে দালাল ও সিন্ডেকেট চক্র রয়েছে যাদের কারণে ক্রেতা এবং বিক্রেতা লোকসান এবং প্রতারণার ফাঁদে পড়েন।

 ব্যবসায় হিসাবের দুঃশ্চিন্তা দূর করতে এলো বিসফটি- ক্লিক

যদি ওজনে ডিজিটাল স্কেল মেশিন দিয়ে কুরবানির পশু কেনাবেচা করা হয়, তাহলে ক্রেতা এবং বেক্রেতা উভয় জন প্রতারণা ও লোকসান থেকে মুক্ত থাকবে। অবশ্যই সরকার এ ব্যাপারে একটি সুবিন্যস্ত নীতিমালা একান্ত প্রয়োজন।

সবশেষে বলবো, যদি কোন ব্যক্তি ওজনে কুরবানির গোশত খাওয়া নিয়তে কেনে তাহলে তার কুরবানি ছহিহ হবে না। বরং কুরবানি আল্লাহ তায়ালার জন্য এবং কুরবানির পশু গোশত আল্লাহ তায়ালার মেহমান গরিব, মিসকিনদের আপ্যায়ন করানো নিয়তে কুরবানি দিতে হবে।

(যদি ওজনে কুরবানির পশু কিনেন তাহলে মোট ওজনের পর ৪০% বর্জ্য অপসরনে চলে যাবে যেমনটা ফার্মের মুরগীর ক্ষেত্রে হয়ে থাকে।)

ওজনে বিক্রি হচ্ছে কুরবানির পশু

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ