আবদুল্লাহ তামিম: বেশ কিছুদিন ধরে হাটহাজারী মাদরাসার প্রবীন উস্তাদ ও আলেম মাওলানা মুমতাজুল করিম (বাবা হুজুর) এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিমের মধ্যে উত্তরাধিকার সম্পত্তি বণ্টন নিয়ে মন্তব্য পাল্টা মন্তব্যের আলোচনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সরব ছিল।
সম্প্রতি সে ভুল বুঝাবুঝির নিরসন হয়েছে বলে জানা যায়। এর সঙ্গে জরিত ব্যক্তিগণ জানিয়েছেন কিছু মানুষের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত টার্গেটে পরিণত হয়ে সমস্যাটির উদ্ভব হয়েছিল। প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসায় সেটি নিরসন হয়ে গেছে।
মাওলানা মুমতাজুল করিমের দাবি অনুযায়ী, চরমোনাই পীরের সৎচাচা সৈয়দ রশিদ আহমদ ফেরদাউসের অভিযোগের উপর এ সমস্যা তৈরি হয়েছিল।
চরমোনাই অনুসারী আলেমদের দাবি, সৎচাচা সৈয়দ রশিদ আহমদ ফেরদাউস সময় অসময় চরমোনাই পীরের পরিবারের নামে মিথ্যা বানোয়াট সংবাদ প্রচার করে আসছে। সে ধারাবাহিকতারই একটি অংশ উত্তরাধিকার সম্পত্তি নিয়ে অপপ্রচার।
মাওলানা মুমতাজুল করিম এ বিষয়ে বলেন, ফেরদাউস সাহেব হাটহাজারী এসেছিলো আমার সঙ্গে দেখা করতে। তিনি আমাকে বুঝিয়েছেন মুফতি ফয়জুল করিমের কাছে আমার বিবির পাওনা মিরাসী সম্পত্তি আছে।
আমি ভেবেছি সম্পত্তি বন্টনের পরও হয়তো আরো জমি বাকি আছে। অথচ জমিজমা তো সব আগেই বন্টন হয়েছে!
তিনি বলেন, ফেরদাউস এমনভাবে বুঝিয়েছে আমি মনে করতে বাধ্য হয়েছি আমি ফয়জুল করিমের কাছে জমি পাই। সে আমাকে ঠকাচ্ছে।
https://www.facebook.com/Habiburrahmanmisba/videos/997279573786254/
তাই ফেরদাউসের নিয়ে যাওয়া কাগজে আমি স্বাক্ষর করি, ফোনেও তাদের সঙ্গে রাগারাগি করি। কিন্তু এখন আমি বুঝতেছি আমাকে ষড়যন্ত্রে ফাঁসানো হয়েছে।
https://www.facebook.com/Habiburrahmanmisba/videos/997294643784747/
বাবা হুজুরের এ বক্তব্যের ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে ফেসুবকে। তিনি ফোন করে সৈয়দ রশিদ ফেরদাউসের সঙ্গে অনেকটা ক্ষোভের সঙ্গেই বলেন, কেনো আমার সঙ্গে এমন করলি, আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করলি।
এদিকে পীর সাহেব চরমোনাই এর মিরাস সম্পর্কে বাবা হুজুরের বক্তব্যের পর মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীমের একটি সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়। সেখানে তিনি বলেন, তারা আমার চাচা ও ফুফা। তাদের সম্পর্কে আমি কী বলবো, তারা যদি দলিল প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারে তো আমি এর দশগুণ বেশি সম্পদ তাদের দিয়ে দেবো।
এছাড়াও সাক্ষাৎকারে তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেন, আমাদের বাড়ি ছাড়া দাদার কোনো সম্পত্তি আমরা ভোগ করছি না। তারা যে অভিযোগ করেছে তা যদি প্রমাণ করতে পারে তাহলে আমি পীরালি এবং ওয়াজ নসিহত ছেড়ে দেবো।
https://www.facebook.com/Habiburrahmanmisba/videos/996056027241942/
মাওলানা মুমতাজুল করিম বাবা হুজুর আলোচিত সেই উত্তরাধিকার সম্পত্তির আসল সত্যতা জানতে পেরে ব্যথিত হন। তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বুঝতে পেরে তিনি একটি চিঠিও লিখেন মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম বরাবর।
তিনি চিঠিতে লিখেন, তাদের নিকটাত্মীয়ের কেউ আমাকে এমন কিছু বিষয় অবগত করে, মূলত যার কোনো ভিত্তি ছিলো না।
ফলে আমি তার প্রতি রাগান্বিত হই। পরে বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে অবগত হবার পর, আমি তাদের বিরুদ্ধে যা বলেছি, তা থেকে রুজু করলাম।
আল্লাহ তয়ালা বলেন, যারা ক্রোধ সংবরণ করে ও মানুষদের ক্ষমা করে, আল্লাহ তয়ালা সে সকল অনুগ্রহশীলদের ভালোবাসেন। আমি তাকে (ষড়যন্ত্রকারীকে) ক্ষমা করে দিলাম।
তিনি মিরাস নিয়ে এ গভীর ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরে তা নিরসনের জন্য চরমোনাই দরবারে যাওয়ার ইচ্ছে করেছিলেন বলে খবর পাওয়া গেছে। নির্বাচন নিয়ে সবাই ব্যস্ত থাকায় আপাতত সে সফর বাতিল করেন তিনি।
উত্তরাধিকার সম্পত্তির মতো পারিবারিক ভুল বুঝাবুঝি কেন? এমনটার উত্তরে মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম ভিডিওতে বলেন, মানুষের মধ্যে খুব সহজে বাজে ধারণা পৌঁছানো যায় উত্তরাধিকার সম্পত্তি নিয়ে। এ নিয়ে কোনো অভিযোগ এলে মানুষ ধরেই নেয় হয়তো কোনো প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে চরমোনাইয়ের বদনাম করতে তারা এ ফাঁদটি পেতেছে।
রাজধানীর মারকাজুত তাকওয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক, বিশিষ্ট ওয়ায়েজ মুফতি হাবিবুর রহমান মিসবাহ এ বিষয়ে আওয়ার ইসলামকে বলেন, কিছু ট্রলবাজ নিন্দুক চরমোনাইকে অভিযুক্ত করতে এমন মিথ্যার আশ্রয় সব সময় নিয়ে থাকে। এটা তারই বহিপ্রকাশ।
কিন্তু হকের বিপরীতে কখনো মিথ্যা তথ্য ও তুহমত টিকতে পারে না। ইনশাল্লাহ এখানেও নিন্দুকরা সফল হবে না।