শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

শবে বরাতে আত্মশুদ্ধির শিক্ষা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাওলানা ইমদাদুল হক
শিক্ষক ও খতিব

আল্লাহ তাআলা মহিমাময়। তাঁর করুণা অপার। তিনি তো বিমূর্ত সময়কেও দান করেছেন মাহাত্ম্য, করেছেন মহিমান্বিত। তাঁর প্রেরিত দূত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম থেকে ৮ জন সাহাবি রা.র মাধ্যমে বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত হয়েছে মধ্য শাবানের রাতের মাহাত্ম্য।

আল্লাহ তাআলা মধ্য শাবানের রাতে বিশেষভাবে নজর দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষপোষণকারী ব্যতিত সবাইকে ক্ষমা করে দেন (সুনান ইবন মাজাহ: ১৩৯০; মুসনাদ আহমাদ-৬৬৪২; সুন্নাহ ইবন আবি আসিম-৫০৯ ও ৫১০; মুসনাদ বাযযার-৮০, ২৭৫৪ ও ৯২৬৮; তাওহীদ ইবন খুযায়মা-৪৮; সহীহ ইবন হিববান-৫৬৬৫; আল মু’জামুল আওসাত তাবারানি-৬৭৭৬; আল মু’জামুল কাবীর তাবারানি-২১৫ ও শুআবুল ঈমান বায়হাকি-৩৫৫২)।

হাদীসটিতে জীবনব্যাপী দুটি বিষয় বর্জনের মাধ্যমে ওই রাতের সাধারণ ক্ষমা লাভের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বিষয় দুটি অন্তকরণের সাথে সম্পৃক্ত। আর মহান আল্লাহর নিকট দেহ ও কর্মের পারিপাট্যের চেয়ে আত্মশুদ্ধির মূল্য অনেক বেশি (আলকুরআন: ২২/৩৭; সহীহ মুসলিম-২৫৬৪)।

কেননা মহান আল্লাহ মানুষের সমগ্র জীবনের কল্যাণ ও সফলতা চান। আর এ কল্যাণ ও সফলতা লাভের জন্য আমাদের দুই ধরনের অধিকারের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। একটি স্রষ্টার অধিকার, অন্যটি সৃষ্টির অধিকার। আমরা খেয়াল করলে দেখব, আল্লাহর দেওয়া শরীআত ইসলামের সকল বিধিবিধান মূলত এদুটি অধিকার কেন্দ্রিক।

মানুষের বিশ্বাস, দৃষ্টিভঙ্গি ও অন্তরের ধারণা তার কর্মকে নিয়ন্ত্রণ করে। সুতরাং স্রষ্টার অধিকার যথাযথভাবে আদায় করতে হলে তাঁর ব্যাপারে অন্তর থাকতে হবে স্বচ্ছ, পরিস্কার; দৃষ্টিভঙ্গি হতে হবে ইতিবাচক।

কিন্তু শিরক হচ্ছে স্রষ্টার ব্যাপারে সৃষ্টির অন্তরের নেতিবাচক ও পঙ্কযুক্ত সর্বনিকৃষ্ট ধারণার নাম। সৃষ্টির অধিকার আদায়ের জন্যও চাই তার ব্যাপারে অন্তরে ইতিবাচক ধারণার উপস্থিতি। কিন্তু হিংসা-বিদ্বেষ, ঘৃণা-শত্রুতা সৃষ্টির প্রতি এমন চূড়ান্ত অবজ্ঞার নাম যা অধিকার আদায় দূরে থাক, অধিকার নষ্ট করতেই সর্বতভাবে প্ররোচিত করতে থাকে।

সুতরাং শিরক ও হিংসা-পঙ্কিল হৃদয়ের অধিকারী ব্যক্তি স্রষ্টা ও সৃষ্টির অধিকার সচেতন থেকে কল্যাণ ও সফলতার পথে এগিয়ে যেতে পারে না। বরং সে তখন তার বিশ্বাস, দৃষ্টিভঙ্গি ও কর্মের মাধ্যমে এমনভাবে অধপতনের দিকে যেতে থাকে যে, অপার দয়া ও ক্ষমার আধার মহান স্রষ্টার কাছ থেকে ক্ষমা পাবারও অযোগ্য করে তোলে নিজেকে।

উল্লিখিত হাদীসের মত আরেকটি হাদীসে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এই একই কথা বলেছেন, প্রতি সপ্তাহে দুইবার- সোমবার ও বৃহস্পতিবার মানুষের আমল (আল্লাহর দরবারে) পেশ করা হয়।

মহান আল্লাহ সেদিন এমন সবাইকে ক্ষমা করে দেন যারা তাঁর সঙ্গে শরীক করে না। তবে ওই দুই ব্যক্তিকে ক্ষমা করেন না, যারা পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করে। (তাদের সম্পর্কে) বলা হয়, পরস্পর মিলে যাওয়া পর্যন্ত এদেরকে মওকুফ রাখো; পরস্পর মিলে যাওয়া পর্যন্ত এদেরকে মওকুফ রাখো। (সহীহ মুসলিম-২৫৬৫)।

সুতরাং মহান আল্লাহর ক্ষমা লাভের জন্য অন্তরকে ন্যূনতম যে পঙ্ক ও কলুষ থেকে পবিত্র রাখা দরকার তা হচ্ছে শিরক ও বিদ্বেষ।

এ দুটি অপরাধের প্রকৃতি, পরিণতি ও ভয়াবহতা নিয়ে কুরআন ও হাদীসে বিভিন্নভাবে আলোচনা এসেছে। মানুষ সৃষ্টিগতভাবেই দুর্বল। জীবন চলার পথে তার ভুল ও পদস্খলনের শিকার হওয়াই স্বাভাবিক।

কিস্তু তার স্রষ্টা মহান প্রতিপালক সর্বশক্তিমান, দয়া ও ক্ষমার আধার, সর্বত কল্যাণকামী। পদস্খলনের শিকার মানুষ তাই যখন অনুতপ্ত হৃদয় নিয়ে আপন রবের নিকট ফিরে আসে, প্রার্থনায় কাতর হয়, তিনি আনন্দিত চিত্তে ক্ষমা করেন, শুধু ক্ষমা করে পাপ মুছে দেন তা-ই নয়; বরং পাপকে পুণ্যে পরিবর্তন করে দেন।

কিন্তু শিরকি যুলুমে নিমজ্জিত ব্যক্তি নিজেকে এতটাই অধপতনে নামিয়ে নিয়ে যায় যে, মহান স্রষ্টা তাকে সৃষ্টির শুরুতেই তাঁর নিকটতম সৃষ্টি ফেরেশতাদের সিজদার মাধ্যমে সকল সৃষ্টির উপর তাকে যে সম্মান ও মর্যাদা দান করেছিলেন, সে তা হারিয়ে ফেলে তার চেয়ে ইতর সৃষ্টির কাছে চাওয়া-পাওয়া ও প্রার্থনা নিয়ে ধরনা দেয়। এখানে ওখানে, এর কাছে এর কছে ছুটে বেড়ায়।

এভাবে সে নিশ্চিত পরম নির্ভরতার গন্তব্য ছেড়ে নিজেকে করে বেদিশা, দিকভ্রান্ত, পেরেশান, মযলুম। মহান আল্লাহ তার দুরাবস্থার দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন, একটি লোকের উপর পরস্পরবিরোধী কয়েক জন মালিক রয়েছে, আরেক ব্যক্তির প্রভু মাত্র একজন- তাদের উভয়ের অবস্থা কি সমান? সমস্ত প্রসংশা আল্লাহর। কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না (আলকুরআন: ৩৯/২৯)।

সুতরাং শিরক হচ্ছে একই সাথে নিজের উপর যুলুম এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর হক নষ্ট করার প্রধান বা একমাত্র ভাইরাস। আর পৃথিবীতেও যত যুলুম, অত্যাচার ও বিশৃঙ্খলা- সবকিছুরই সূচনাবিন্দু এই শিরক। তাই কুরআন স্বীকৃত আদর্শ পিতা মহামতি লুকমান, যিনি সন্তানের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ এবং পৃথিবী ও পৃথিবীবাসীর শৃঙ্খলা, শান্তি ও স্বস্তি সম্পর্কে সচেতন ও সতর্ক ছিলেন, আপন পুত্রকে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেন, বৎস, আল্লাহর সাথে অংশী স্থাপন কোরো না; নিশ্চয় শিরক বড় যুলুম (আলকুরআন: ৩১/১৩)।

দয়া ও করুণা মহান আল্লাহর গভীর, ব্যাপক ও সর্বব্যাপ্ত ব্যতিক্রমী গুণ। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেন, মহান আল্লাহ সৃষ্টির সূচনাতেই নিজের ব্যাপারে লিখে নিয়েছেন আর তা নিজের কাছে আরশের উপর রাখা আছে, যে, নিশ্চয় আমার দয়া বা রহমত আমার ক্রোধকে অতিক্রম বা পরাজিত করেছে (সহীহ বুখারি-৭৫৫৩; সহীহ মুসলিম-২৭৫১)।

কিন্তু ক্যান্সার যেমন নিরাময় অযোগ্য ব্যাধি, শিরকও তেমনই ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। শুধু তাই নয়, শিরক-লিপ্ত ব্যক্তির পূর্বজীবনের অর্জনও ব্যর্থ ও অকেজো হয়ে যায়। মহান আল্লাহ তাই তাঁর সাধারণ ও বিশেষ সকল বান্দাকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সতর্কবার্তা দিয়েছেন। নবী-রাসূলগণ মহান আল্লাহর মনোনীত ব্যক্তিবর্গ।

তিনি নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করে বলেছেন, তোমার প্রতি আর তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয়েছে, যদি তুমি শিরক কর তোমার কর্মফল বাতিল হয়ে যাবে আর অবশ্যই তুমি হবে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত। বরং একমাত্র আল্লাহরই ইবাদত করো এবং হও শোকরগোজারদের অন্তর্ভুক্ত (আলকুরআন: ৩৯/৬৫-৬৬)।

তিনি আরো বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক স্থাপনকে ক্ষমা করেন না, এছাড়া যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন; আর যে আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করল সে তো মহাঅপবাদ আরোপ করল/ দূরবর্তী ভ্রান্তিতে নিপতিত হল (আলকুরআন ৪/৪৮ ও ১১৬)।

শিরক ও শিরক-পঙ্কিল হৃদয়ের প্রকৃতি ও পরিণতি বোঝার জন্য আশা করি এতটুকু আলোচনাই যথেষ্ট হবে।

মধ্য শাবানের রাতে ক্ষমা পাওয়ার জন্য হাদীস শরীফে অন্তরকে দ্বিতীয় যে ব্যাধি থেকে পরিশুদ্ধ রাখার শর্তারোপ করা হয়েছে তা হল হিংসা-বিদ্বেষ। মুমিনের হৃদয়ে হিংসার ঠাঁই হয় না। কেননা হিংসা ও ঈমান পরস্পরবিরোধী। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেন, কোনো বান্দার অন্তরে ঈমান ও হিংসা একত্রিত হয় না (সুনান নাসায়ি-৩১০৯)।

মুমিন হয় মিত্রতাপ্রবণ। সে ভালোবাসে, তাকেও ভালোবাসা হয়। ওই ব্যক্তির মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই যে মিত্র হয় না এবং যাকে মিত্র বানানো হয় না (মুসনাদ আহমাদ-২২৮৪০)। দীন তো কল্যাণকামিতার নাম। সকল ক্ষেত্রে মুমিনের আদর্শ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম। তিনি তো প্রাণের শত্রুরও কল্যাণ কামনায় পেরেশান থাকতেন।

প্রিয় খলীলের সে অবস্থার বর্ণনা দিয়েছেন মহান আল্লাহ স্বয়ং। তারা যদি এই বিষয়বস্তু তথা কুরআনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করে (মুমিন না হয়) তবে তাদের পশ্চাতে পরিতাপ করতে করতে সম্ভবত আপনি নিজের প্রাণই নিপাত করবেন (আলকুরআন: ১৮/৬ ও ২৬/৩)।

সকল সৃষ্টি মহান আল্লাহর পরিবারভুক্ত; সকল মানুষ এক আদমের সন্তান। মুমিনগণ পরস্পরের ভাই, একে অপরের আয়না স্বরূপ; সকলে মিলে একটি দেয়ালের ন্যায়- যার এক অংশ অন্য অংশকে শক্তিশালী করে; একটি শরীরের মত- যার এক অঙ্গের ব্যথায় অন্য অঙ্গ কাতর হয়, নির্ঘুম রাত জাগে। মুমিনকে ভালো না বেসে কারো ঈমানের দাবি পূর্ণ হয় না।

মৌখিক দাবিসর্বস্ব মুমিনেরাই শুধু পারে অন্য মুমিনের দোষ খুঁজতে। পরিণামে পরওয়ারদেগারও লেগে যান তার দোষ অন্বেষণে এবং তাকে আপন ঘরেই লাঞ্চিত করে ছাড়েন।
মুমিন ও দীনদারের যে হৃদয়বৃত্তির কথা বিবৃত হয়েছে হিংসা তার সম্পূর্ণ বিপরীত বিষয়। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, পূর্ববর্তী ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিগুলোর ব্যাধি- হিংসা ও বিদ্বেষ তোমাদের মাঝেও সঞ্চারিত হয়েছে।

এই ব্যাধি মুণ্ডন করে দেয়। আমি বলি না যে তা চুল মুণ্ডন করে, বরং দীন মুণ্ডন করে দেয়। যাঁর হাতে আমার প্রাণ তাঁর কসম, মুমিন না হলে তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর একে অপরকে ভালো না বাসলে তোমরা মুমিন হতে পারবে না (সুনান তিরমিযি-২৫১০ ও মুসনাদ আহমাদ-১৪১২)।

শিরকের মতই হিংসার প্রকৃতি। আগুন যেমন শুকনো কাঠকে নিঃশেষ করে দেয় হিংসা তেমনি তার অন্যান্য নেক কর্মগুলোকে পর্যন্ত ধ্বংস করে ফেলে (সুনান আবু দাউদ-৪৯০৩)। হিংসুকের তাই ক্ষমা হয় না, তার কোনো অর্জন থাকে না।

শরী‘আতের দৃষ্টিতে শবে বরা‘আত

আমরা যদি শিরক ও হিংসা থেকে হৃদয়কে পবিত্র রেখে স্রষ্টা ও সৃষ্টির হকের ব্যাপারে সচেতন থাকতে পারি, তাহলেই আমরা আমাদের রবের দয়া ও ক্ষমার ধারায় প্রতিনিয়ত সিক্ত হতে থাকব। মুআয ইবন জাবাল রা. বলেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম আমাকে সম্বোধন করে বললেন, হে মুআজ, তুমি জান কি, বান্দার উপর আল্লাহর কী অধিকার আর আল্লাহর নিকট কী অধিকার বান্দার? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই অধিকজ্ঞাত।

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বললেন, বান্দার উপর আল্লাহর অধিকার হচ্ছে, সে তাঁর ইবাদত করবে, শিরক করবে না। আর আল্লাহর নিকট বান্দার অধিকার হচ্ছে, যে শিরক করবে না তিনি তাকে শাস্তি দেবেন না (সহীহ বুখারি-২৮৫৬; সহীহ মুসলিম-৩০)।

ইরশাদ হয়েছে, আর যে ব্যক্তি তাওহীদে বিশ্বাসী, নিজের উপর করে নি শিরকের অত্যাচার তার জন্য রয়েছে নিরাপত্তা আর সে তো সফলতার মহাসড়কের পথিক (আলকুরআন: ৬/৮২; সহীহ বুখারি-৩৪২৯)।

তেমনই নবীজি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম আনাস ইবন মালেক রা.কে বলেছেন, বেটা, যদি এমনভাবে দিন অতিবাহিত করতে পার যে, তোমার হৃদয়ে কারো প্রতি বিদ্বেষ নেই, তাহলে এভাবেই থাকো। বেটা, এটি আমার সুন্নাত। আর যে আমার সুন্নাতকে যিন্দা করে সে আমাকে ভালোবাসে। যে আমাকে ভালোবাসে সে আমার সঙ্গে জান্নাতে থাকবে (সুনান তিরমিযি-২৬৭৮)।

মহান আল্লাহর দয়া ও ক্ষমা উপলক্ষ খোঁজে। কখনো বিশেষ সময়ে অগ্রবর্তী হয়ে আমাদের দ্বারে এসে কড়া নাড়ে। আমাদেরকে সে জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। হৃদয়পাত্রকে উপযুক্ত রাখতে হবে সে দান গ্রহণের। উপরের আলোচনা থেকে আমরা জেনে গেছি, আল্লাহর দান শিরক ও হিংসা-পঙ্কিল হৃদয়কে উপযুক্ত পাত্র মনে করে না।

শবে বরাত বা মধ্য শাবানের রাত সাময়িক কোনো উৎসবী উপাসনা নয়, বরং জীবন-জোড়া এই শুদ্ধতার শিক্ষাই দিতে এসেছে। উপরের আলোচনার পর এখন শবে বরাত বা মধ্য শাবানের রাতের ফযীলতের হাদীসটির দিকে আরেকবার দৃষ্টি দিলেই বিষয়টি আমাদের কাছে পরিস্কার হয়ে যাবে।

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা মধ্য শাবানের রাতে বিশেষভাবে নযর দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষপোষণকারী ব্যতিত সবাইকে ক্ষমা করে দেন’।

লেখক: শিক্ষক; মাদরাসাতুত তাকওয়া- আনন্দধাম, আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ