শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

যিরয়াব; স্টাইলের সুলতান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সাখাওয়াত উল্লাহ : কখনও ভেবে দেখেছেন আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় টুথপেস্টে

আবিষ্কারক কে? কেন আমরা তিন ধাপে খাবার খেয়ে থাকি? কিভাবে বিশ্বের প্রথম সঙ্গীতের ক্লাস শুরু হয়? কিভাবে ইউরোপে চমৎকার মৃৎশিল্পের আবির্ভাব ঘটেছিল?

বললে অবাক হবেন, এসবের পেছনে শুধুমাত্র একজনের হাত রয়েছে। আবুল হাসান আলি ইবনে নাফি। যার ডাকনাম ছিল যিরয়াব। তার জন্ম ৭৮৯ সালে ইরাকে।

তার মধুর গলা এবং গাঢ় বর্ণের জন্য তাকে ‘দ্য ব্ল্যাকবার্ড’ নামেও ডাকা হত। তিনি একজন গীতিকার এবং ফ্যাশন ডিজাইনার ছিলেন। নবম শতাব্দীতে তিনি ইরাক থেকে আন্দালুসিয়ায় আসেন।

সেসময়ে আন্দালুসিয়া ছিল মুসলিম সভ্যতার একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। এই আন্দালুসিয়ায় তিনি ফ্যাশন, খাবারের ভদ্রতা, কাপড় এবং সঙ্গীতের প্রচলন ঘটান, যা এখনও টিকে রয়েছে।

তিনি ছিলেন একজন চমৎকার গীতিকার। তিনি ১ হাজার টিরও বেশি সঙ্গীত জানতেন। তিনি সঙ্গীতের নেশা থেকেই বিশ্বের প্রথম মিউজিক ক্লাস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

তিনি আন্দালুসিয়ায় চমৎকার খাদ্যাভাস এবং ভদ্রতা আনেন যা থেকে মানুষ শিখতে শুরু করে। তিনি আন্দালুসিয়ার মানুষদের তিন ধাপে খাবার খাওয়া, টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত মাজার প্রয়োজনীয়তা এবং খাবার একটি টেবিল ক্লথের ওপর পরিবেশন করা শেখান।

এছাড়াও মাটি এবং ভারী ধাতব পাত্রের বদলে ক্রিস্টালের পাত্রের প্রচলন শুরু করেন।

তাকে ‘স্টাইলের সুলতান’ হিসেবে ডাকা হত। বিশ্বের প্রথম টুথপেস্টের উদ্ভাবনার সাথে সাথে তিনি কাপড় ধোয়ার জন্য লবণের ব্যবহার করার কথা বলেছিলেন। তিনি সুগন্ধি নিয়েও বেশ কিছু বছর গবেষণা চালিয়েছিলেন।

তিনি চার ঋতুর জন্য চার ধরনের পোশাক ব্যবহার করার কথাও বলেছিলেন। এছাড়াও ভারতীয় এবং বাগদাদের জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের সাহায্যে তিনি করডোভায় বিভিন্ন খেলার প্রচলন শুরু করেছিলেন, যা সময়ের আবর্তমানে পুরো ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে।

তিনি পরিণত হয়েছিলেন বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। তিনি আন্দালুসিয়ার করডোভাতে তৎকালীন খলিফা আবদুর রহমান দ্বিতীয়’র কাছে মাসিক ২০০ স্বর্ণমুদ্রা বেতনে স্থায়ীভাবে থেকে গিয়েছিলেন।

ইউরোপে তার বদৌলতে ফ্যাশন, খাবার দাবারের অভ্যাস এবং ভদ্র আচার আচরণ বেশ ছড়িয়ে পড়েছিল।

ইতিহাসে যিরয়াবের মত মানুষ খুব বেশি নেই। তবে যিরয়াবের এতোটা অবদান থাকা সত্ত্বেও ইতিহাসের পাতায় তাঁকে খুব একটা উল্লেখ করা হয়নি। এর মূল কারণ হচ্ছে যে ঐতিহাসিক মুসলিম সভ্যতাকে বর্তমান যুগের মানুষ ইতিহাসের পাতায় একটি ‘কালো অধ্যায়’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

তবে সে সময়টি ছিল ইতিহাসের জন্য এক স্বর্ণযুগ কেননা এই সময়ে বিশ্বের অন্যতম সকল আবিষ্কার এবং সংস্কৃতি চালু হয়েছিল, যা এটিকে এক অনন্য মাত্রা এনে দিয়েছিল।

মুসলিম হেরিটেজ থেকে সাখাওয়াত উল্লাহ’র অনুবাদ

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ