সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫ ।। ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১ ।। ১০ রমজান ১৪৪৬

শিরোনাম :
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন আনিসুজ্জামান চৌধুরী বিরতিকে কাজে লাগিয়ে মুসলিম ফুটবলারদের ওমরা পালন ধর্ষণের বিচারে শরয়ি আইন থাকলে, কোন শিশু আর ধর্ষিত হতো না: উলামা-জনতা ঐক্য পরিষদ শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় ঈদে নতুন নোট বিতরণ স্থগিত ধর্ষণ এবং নারীর পরিচয় নিয়ে অবমাননায় ১৫১ আলেমের বিবৃতি ১০ম তারাবির নামাজে তিলাওয়াতের সারমর্ম ত্রাণ বন্ধের পর এবার গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করছে ইসরায়েল তারাবিতে ফাইভ জি স্পিডে তেলাওয়াত করবেন না: আজহারী ‘আলেমদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তোলা জিহাদ নয়, সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

সমাজের চোখে ছেলেটা কি এতোটা ঘৃণ্য??

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আশিকুর রহমান

ছেলেটার পরিচয় আমার জানা নেই। ছবিতেই চেনা-জানা। চকলেট চোর! ছবিটা দেখে প্রথমে বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম। সমাজের চোখে ছেলেটা কতটা ঘৃণ্য তাই ভাবছিলাম। কিন্তু আমার চোখে সে নিষ্পাপ। পাপস্পর্শহীন অবুঝমনা। নীরবে ঝরে পড়া অনেকটা গোলাপকুঁড়ির মতো।

যে বয়সে বন্ধুদের সাথে মাঠ দাঁপিয়ে বেড়ানোর কথা, সে বয়সে সে রাস্তায় কুকুরছানার সাথে খেলা করে। যে বয়সে বাবার বাইকে করে স্কুলে যাবার কথা, সে বয়সে ছেলেটা মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে ফকিরা পুলে।

যে সময়ে মায়ের মমতাভরা বুক আর বাবার পাঁজর জড়িয়ে তুলোর বিছানায় ঘুমোনোর কথা, সে সময়ে ছেলেটা স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনের জীর্ণ বগীটাতেই রাত অতিক্রম করেছে।

ছেলেটা হয়তো বন্ধুত্বের সংশ্রব না পেয়ে কুকুরের সাথে খেলে কুকুরের ভাষা রপ্ত করেছে। এ জন্যই সম্ভবত মানুষের ভাষা সে বুঝে না। 'কুত্তার বাচ্চা' বলে গালিটার অর্থ সে জানে না।

দূর থেকে দাঁড়িয়ে কেবল একটি সুখী পরিবারের আদুরে ছেলে হবার দুঃস্বপ্ন দেখে। আপনার ছেলের ফেলে দেয়া ভ্যানিলা আইসক্রীমের কাপটা রাস্তা থেকে তুলে সে উচ্ছিষ্ট দুধে আঙুল চুষে, লেহন করে বাকিটুকুন খেয়েছে।

একটা ডেইরি মিল্ক, একটা কিটকেট চকলেট পয়সা দিয়ে কেনা হয়তো তার জন্য আকাশ-কুসুম কল্পনা। সে জন্যই মনের চাহিদা মেটাতে চকলেট চুরি করতে গিয়ে পাকড়াও হয়েছে।

ফেসবুকে ছবিসহ তা পোস্ট করা হয়েছে। হোক সেটা ফানি পোস্ট। এই অনাথ ছেলেটা হয়তো জানে না, তার ছবি দেখে কতোজন তার বাবা-মায়ের নাম মুখে তুলে গালি দিয়েছে। কতোজন রাস্তায় কিংবা জানালার ওপাশে থুথু ফেলেছে ওর মুখ দেখে।

আর অসংখ্য মানুষ হয়তো মুখ ভেটকিয়ে হেসে ওঠেছে। অপরাধ যেই করে, শাস্তি তার প্রাপ্য। চকলেট চুরি করার দায়ে ছেলেটাকে কয়েকটা চড়-থাপ্পড় মেরে ছেড়ে দেয়া যেতো। এভাবে গলায় ঝুলিয়ে সাদা প্রিন্টেড কাগজ! (চকলেট চোর, সি,সি ক্যামেরায় ধরা পড়ছে) যিনি এমনটি করেছেন, তা কতটা যুক্তিবল আমার জানা নেই। (কোনো একজন আমার আগে মজা করে পোস্ট করেছিলেন)

অফটপিক : আমাদের সমাজ বহুল শ্রেণিতে বিন্যস্ত। বড়লোক, মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে বিভক্ত। আমরা যখন শপিং করি, দামি খাবার খাই কিংবা স্কুল ছুটির পর নিজের ছেলে অথবা ভাই-বোনের হাতে একটা চকলেট, আইসক্রীম কিনে দিচ্ছি, তখন আশেপাশে হালকা নজর দিলেই হয়তো দেখবো একটা অনাথ, এতিম ছেলে মুখটা শুকিয়ে আপনার দিকে তাকিয়ে আছে।

তখন একটা চকলেট ছেলেটার হাতে গুজে দিলে হয়তো এই ছেলেটি চুরি করার মতো গর্হিত কাজ করবে না। অসৎ পথে যাবে না। অনুভব করতে পারবেন, কারো কাছ থেকে কোনো কিছু পাবার আনন্দের চেয়ে দেয়ার আনন্দ কতগুণ বেশি।

সমাজ আমাদের হাতেই গড়া। আমরা ইচ্ছে করলেই একটা সমাজকে সুন্দর, সুশ্রী ও সবুজের মতো রঙিন করে দিতে পারি।

আসুন! আমরা ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ হই। হাতে হাত রেখে সমাজের নৈতিক দায়িত্বগ্রহণ করি। ঠিকমতো যাকাত প্রদান করি। আল্লাহ তা'আলা আমাদের তৌফিক দান করুন।

যে ৫ দাবিতে উত্তাল কোটা সংস্কার আন্দোলন

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ