সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫ ।। ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১ ।। ১০ রমজান ১৪৪৬

শিরোনাম :
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন আনিসুজ্জামান চৌধুরী বিরতিকে কাজে লাগিয়ে মুসলিম ফুটবলারদের ওমরা পালন ধর্ষণের বিচারে শরয়ি আইন থাকলে, কোন শিশু আর ধর্ষিত হতো না: উলামা-জনতা ঐক্য পরিষদ শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় ঈদে নতুন নোট বিতরণ স্থগিত ধর্ষণ এবং নারীর পরিচয় নিয়ে অবমাননায় ১৫১ আলেমের বিবৃতি ১০ম তারাবির নামাজে তিলাওয়াতের সারমর্ম ত্রাণ বন্ধের পর এবার গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করছে ইসরায়েল তারাবিতে ফাইভ জি স্পিডে তেলাওয়াত করবেন না: আজহারী ‘আলেমদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তোলা জিহাদ নয়, সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে দিল্লির সহযোগিতা চান প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে দিল্লির সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনে ‘বাংলাদেশ ইন্ডিয়া মিডিয়া ডায়ালগ’-এ অংশগ্রহণকারী ভারতীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে চাপ দিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী প্রত্যাশা প্রকাশ করেন, অব্যাহত ভারতীয় চাপে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে পারে। কর্মসংস্থানের অভাবে শরণার্থী রোহিঙ্গারা জঙ্গিবাদে ঝুঁকে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কা জানিয়ে তাদের প্রত্যাবাসনকে ভারত-বাংলাদেশ উভয়ের জন্য জরুরি বলে আখ্যা দেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো কূটনীতিক সূত্রের বরাত দিয়ে বলছে, রোহিঙ্গা সংকটে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ভারতের শক্ত ভূমিকা প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ইনস্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট, ‘ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (আইসিএলডিএস) গণভবনে ওই মিডিয়া সংলাপের আয়োজন করে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ লাখ রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর ভারতের চাপ প্রত্যাশা করে বলেছেন, বাংলাদেশে তাদের অবস্থান দীর্ঘায়িত হলে জঙ্গিবাদ সংক্রান্ত নিরাপত্তার ঝুঁকির সৃষ্টি হতে পারে। তার বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বাসস জানিয়েছে, বাংলাদেশ মানবিক কারণে প্রায় ১০ লাখ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারে আশ্রয় দিয়েছে। বর্ষার মওসুম ঘনিয়ে আসছে।

এ সময় রোহিঙ্গাদের এভাবে রাখা বাংলাদেশের এবং ভারতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, বর্ষায় কাজের অভাব রোহিঙ্গাদের জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন ‘যখন জনগণের মধ্যে হতাশা এসে পড়ে এবং কোনো কাজ থাকে না তখন তাদের কেউ কেউ জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়তেই পারে। যদিও আমরা লক্ষ্য রাখছি এ ধরনের কোনো ঘটনা যেন না ঘটে।’

গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ৬ লাখ ৮৮ হাজার রোহিঙ্গা।

আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পালিয়ে আসা বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি সম্পন্ন হলেও তা কার্যকরের বিষয়টি এখনও প্রক্রিয়াধীন। এদিকে আগের মতো রোহিঙ্গা এখন অনুপ্রবেশ ঠেকানো যায়নি। রোহিঙ্গাদের ওপরে এমন নিধনযজ্ঞ এবং তাদের প্রত্যাবাসন প্রশ্নে বিশ্বের অনেক দেশ কথা বললেও ভারত একরকম নীরব ভূমিকা পালন করে আসছে।

প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা দিল্লির সহযোগিতা চাই, তারা যেন মিয়ানমারের নাগরিকদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। যদি ভারত মিযানমারকে চাপ অব্যাহত রাখে তাহলে হয়তো তারা তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে।’

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশনা দিয়েছেন যে ৫টি দেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্ত রয়েছে তাদের সঙ্গে সংলাপ আয়োজনের। যাতে করে তারাও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নিতে পারে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে আলোচনাও চলছে এবং নেপিডো ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সম্মত হয়েছে।

আগস্টে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ জোরালো হওয়ার পর তিনদিনের মিয়ানমার সফরে নরেন্দ্র মোদি একটি কথাও বলেননি। বরং জানিয়েছেন, রাখাইনে ‘জঙ্গি সহিংসতা’ রুখতে তার সরকার সর্বতোভাবে মিয়ানমার সরকারকে সাহায্য করবে। পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দিকে তাকিয়ে ভারত যে অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি নিয়ে এগোতে চাইছে, মিয়ানমার হলো সেই অভিযানের প্রথম স্টপেজ। আসিয়ান জোটের দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে ভারত খুবই আগ্রহী।

রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও বিদেশ থেকে আগত সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলোচনায় বাংলাদেশ-ভারত ও বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন, তিস্তার পানি বণ্টন, যোগাযোগ এবং বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলের ভারতে সম্প্রচার সম্পর্কিত বিষয় উঠে আসে।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, আইসিএলডিএস চেয়ারম্যান এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ জমির, আইসিএলডিএস ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, উপদেষ্টা মোজাম্মেল বাবু, আহবায়ক শ্যামল দত্ত এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহ্সানুল করিম এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ