শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার আ.লীগ নেতাকর্মীর প্রভাবে নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের সংবর্ধনা বাতিল আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা ইসলামি লেখক ফোরামের বৈঠক অনুষ্ঠিত, আসছে নতুন কর্মসূচি সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান কারাগারে উত্তপ্ত খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা নেতানিয়াহুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ইসরায়েলি নাগরিক গ্রেপ্তার

চার পুলিশের গণধর্ষণ; বিচার না পেয়ে কিশোরীর আত্মহত্যা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: উর্দিধারীরাই তাকে গণধর্ষণ করেছে। অভিযোগ ছিল বছর চোদ্দোর এক দলিত কিশোরীর। উর্দিধারীরাই সেই বয়ান বদলের জন্য চাপ দিয়েছে। এমনকী, টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার মতো গুরুতর অভিযোগও ছিল তার।

ঘটনাটি ভারতের ওড়িশা প্রদেশের।

সোমবার আত্মহত্যা করেছে ওই কিশোরী। তার পরিবারের অভিযোগ, সুবিচার না মেলাতেই আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে সে। ঘটনার পর শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।

কিশোরীর পরিবারের দাবি ছিল, গত বছরের ১০ অক্টোবর স্কুলে যাওয়ার পথে লাঁজিগড় জঙ্গলের ভিতর চার জন পুলিশকর্মী তাদের মেয়েকে গণধর্ষণ করে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ, গণধর্ষণের অভিযোগে পুলিশের নাম উঠে আসতেই তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা শুরু করে পুলিশ-প্রশাসন।

ওডিশার কোরাপুট এলাকার ওই জায়গাটি মাওবাদী প্রভাবিত। ফলে স্থানীয়দের সুরক্ষার জন্য ওই এলাকায় সব সময়েই পুলিশকর্মী ও আধাসামারিক বাহিনীর পাহারা থাকে। পুলিশের দাবি, অনেক সময়েই পুলিশের উর্দি পরে ঘুরে বেড়ায় মাওবাদীরা। পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকেরা মাওবাদীদের ঘাড়েই সমস্ত দোষ চাপান। এর পর মাওবাদীদের তরফে বিবৃতি দিয়ে দাবি করা হয়, এই ঘটনার সঙ্গে তারা কোনও ভাবেই জড়িত নয়।

দাবি-পাল্টা দাবিতে উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহল। এর পর গত ৭ নভেম্বর ওডিশা পুলিশের মানবাধিকার রক্ষা সেল একটি মেডিক্যাল রিপোর্ট উদ্ধৃত করে দাবি করে, ওই মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়নি। তাতে আরও বিতর্ক তৈরি হয়।

এর পরের দিনই ওই ঘটনায় দু’টি আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেন ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। অপরাধদমন শাখা ছাড়াও এক জন সিনিয়র বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে গোটা ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন তিনি।

গোটা ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ করে ওই কিশোরী। ২৯ ডিসেম্বর ভুবনেশ্বরে একটি অনুষ্ঠানে জনসমক্ষেই ক্লাস নাইনের ওই স্কুলপড়ুয়ার অভিযোগ ছিল, বয়ান বদলের জন্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল আর পি শর্মা তাকে ৯০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে চেয়েছেন।

তবে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে সে দাবি উড়িয়ে দেন আর পি শর্মা। ওই কিশোরীর অভিযোগকে ‘ভুয়ো, মনগড়া, ইচ্ছাকৃত এবং উদ্দেশ্যমূলক’ বলে আখ্যা দেন তিনি।

মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই কিশোরীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই তার দেহ নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন গ্রামবাসীরা। ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন কিশোরীর বাড়ির লোকজনও। পুলিশ-প্রশাসনের উপরেই তাদের মেয়ের মৃত্যুর দায় চাপিয়েছেন তাঁরা। পরিবারের দাবি, সুবিচার না মেলায় এবং সামাজিক কলঙ্কের জন্য আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে তাদের মেয়ে। তার মৃত্যুর জন্য পুলিশ-প্রশাসনই দায়ী।

গোটা রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে বিরোধী দলগুলিও। বিধানসভায় কংগ্রেসের হুইপ তারাপ্রসাদ বাহিনিপতি মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের পাশাপাশি এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন। ঘটনা নিয়ে এ দিন রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে বিজেপি-র মহিলা শাখা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা ওডিশার নেতা ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, “আমার মনে হয়, রাজ্য সরকার এই কেসটাকে একটু সিরিয়াসলি নিলে ওই মেয়েটি আজ বেঁচে থাকত।”

আনন্দবাজার পত্রিকাে

এইচজে


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ