আওয়ার ইসলাম: রাজধানীর সাত সরকারি কলেজের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয়ের অধিভুক্তির বিষয়ে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে ছাত্রদের যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সরকারের সবাইকে যত্নবান হতে আহ্বান জানিয়েছেন বানিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার দলের সিনিয়র সংসদ সদস্য বানিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এ আহ্বান জানান।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার প্রশ্নোত্তর পর্বের পর স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী অনির্ধারিত আলোচনার সূত্রপাত ঘটান। এর পর জাতীয় পার্টির ফিরোজ রশীদ, সরকার দলের এনামুল হক ও সব শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখেন।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন অধিভুক্ত সাত কলেজ নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান ও এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে সংসদে ৩০০ বিধিতে বিবৃতি দেওয়ার দাবি তোলেন।
ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘এই সংসদে আমরা অনেকেই রয়েছি, যারা বিভিন্ন সময়ে ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছি। পাকিস্তানি সব শোষণ-বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন এই ছাত্ররাই করেছেন। বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, আগরতলা, সত্তরের নির্বাচন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ সব কিছুতেই ছাত্রসমাজ নেতৃত্ব দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ছাত্রসংগ্রাম মুক্তিযুদ্ধে সবার আগে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল।
কিন্তু দুঃখের বিষয় এই স্বাধীন দেশে ন্যায্য আন্দোলন করতে গিয়ে একজন ছাত্র তার দুটি চোখই হারিয়েছেন। তার কী অপরাধ ছিলো। এতদিন পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ স্বীকার করেছে, অপরিকল্পিতাবে সাতটি কলেজকে অধিভুক্ত করায় অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে।
আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে টানাপড়েন, অসমঞ্জস্য। ছাত্ররা এখনও তাদের পরীক্ষার ফল পায়নি। এটার জন্য কে দায়ী। বিশ্ববিদ্যালয় দুটি, নাকি ছাত্ররা? ছাত্ররা তো পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আন্দোলন করছে। সময়মতো পরীক্ষা না হওয়ায় তাদের শিক্ষা জীবন ঝরে যাওয়ার ক্ষতিপূরণ কে দেবে? কোথাও কোনও জবাবদিহিতা নেই।’
অপরিকল্পিতভাবে সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছে, অভিযোগ তুলে ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘যে সাতটি সরকারি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছে, তার সবগুলোই প্রথম শ্রেণির। সবার ফলাফল ভালো। তারা তো স্বাধীনভাবেই চলতে ছিল। কী দরকার ছিল এগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা।
আরেফিন সিদ্দিকী সাহেব (ঢাবির সাবেক ভিসি) মনে করলেন ‘আমার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য এই সাতটি কলেজকে অধিভুক্ত করতে হবে।‘ একটি সিনেট নির্বাচনও দিলেন না। এখন তিনি ভাইস চ্যান্সেলর নেই। কিন্তু বাড়ি দখল করে রেখেছেন। এর জবাব কে দেবেন?’’
এ বিষয়ে সংসদে শিক্ষামন্ত্রীর ৩০০ বিধিতে বিবৃতি দাবি করে সাবেক ছাত্রনেতা ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীকে বলবো- এই বিষয়ে সংসদে ৩০০ বিধিতে বক্তব্য দেবেন। শিক্ষামন্ত্রীকে বলবো, দয়া করে এই সমস্যার অবসান করুন। বিবৃতি দিয়ে এই সংসদকে অবহিত করুন।
আমাদের আশ্বস্ত করুন শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে কোনও শিক্ষাবর্ষ নষ্ট হবে না। তারা যাতে ঠিকমতো পড়াশুনা করতে পারে, সেই ব্যবস্থা নিন’।
এসএস/