শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা নেতানিয়াহুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ইসরায়েলি নাগরিক গ্রেপ্তার ‘উলামায়ে কেরামদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন অসম্ভব’ নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার গাজাজুড়ে ইসরায়েলের নৃশংস হামলা, নারী-শিশুসহ নিহত ২৮ ফিলিস্তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত 'ঢাবি ও জাবির হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে' ঢাবিতে যুবক হত্যায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জন আটক কওমী মাদরাসার ছাত্রদেরকে বিসিএস এ অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া বৈষম্য: মুফতী ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই  সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকায় সাংবাদিকদের বিক্ষোভ সমাবেশ

রোহিঙ্গা ট্রাজেডি : শুধু বিবৃতিতেই সমাধান চাচ্ছে বিশ্বনেতারা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মাদ শোয়াইব : মিয়ানমারে যা ঘটছে মুসলিম উম্মাহর জীবনে তা নতুন ট্রাজেডি নয়।  ১৯৪৮ সালে ইসরাইল রাষ্ট্র সৃষ্টির পর থেকে দীর্ঘ সাত দশকের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনে যা ঘটেছে এবং এখনও ঘটছে মিয়ানমারের বেদনাদায়ক ঘটনাপ্রবাহ তারই প্রতিচ্ছবি।

রোহিঙ্গা এবং ফিলিস্তিনি উভয় জনগোষ্ঠী বারবার নিপীড়নের শিকার হয়ে দেশান্তরিত হয়েছে। হারিয়েছে তাদের বাড়িঘর ও সহায়-সম্বল। হাজার হাজার লোককে হত্যা করা হয়েছে। গোটা পরিবারকে জীবিত অবস্থায় আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। গ্রামের পর গ্রাম আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। পাঁচ বছর বয়সী শিশুদেরও শিরুচ্ছেদ করা হয়েছে। নারীদের ধর্ষণ এবং সীমান্তে স্থলমাইন পুঁতে রাখা হয়েছে।

হাজার হাজার নির্দোষ বেসামরিক লোক বাংলাদেশের নিরাপদ ভূখণ্ডে পালিয়ে জীবন বাঁচানোর জন্য যখন প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে, তখন মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সীমান্ত এলাকা ও নোম্যানস ল্যান্ডে ল্যান্ডমাইন পুঁতে রাখছে।

১৯৮২ সালের বর্মী নাগরিকত্ব আইনের বাস্তবায়নের পর থেকে রোহিঙ্গারা সরকারিভাবে নাগরিত্ব হারায়। এরপর নিপীড়নের মাত্রা বাড়তে থাকে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম হলেও সংখ্যালঘু রয়েছে হিন্দু।

২০১৫ সালের আগের রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কট এবং ২০১৬ ও ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দমনাভিযানে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী প্রায় ১৩ লাখের মধ্য থেকে এ পর্যন্ত ৯ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল এবং পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

এক লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে শিবিরেই আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তারা বাড়িঘর ও ভিটেমাটি ছাড়া, অর্থাৎ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত।

১৯৭৮, ১৯৯১-৯২, ২০১২, ২০১৫ এবং ২০১৬-১৭ সালে বারবার সামরিক দমনাভিযানের শিকার হতে হয়েছে রোহিঙ্গাদের। কিন্তু এই জঘন্য অন্যায়ের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত বিশ্ব সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে বিশেষত মুসলিম বিশ্বের পক্ষ থেকে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। শুধু বিবৃতি দিয়েই দায়িত্ব এড়াতে চাচ্ছে বিশ্বনেতারা।

জাতিসঙ্ঘ বলেছে এটি ‘এথনিক ক্লিনজিং’ তথা জাতিগত নির্মূল অভিযান। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ  এই নিপীড়নকে ‘বর্ণবৈষম্যবাদের’ সাথে তুলনা করেছে।

২০১৩ সালের জাতিসঙ্ঘ রিপোর্টে রোহিঙ্গাদের বিশ্বের ‘অত্যন্ত নির্যাতিত সংখ্যালঘু’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে (এইচআরডব্লিউ), মিয়ানমারের আইনে রোহিঙ্গাদের দেশটির অন্যতম জাতিগত সংখ্যালঘু হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি।

অথচ অষ্টম শতাব্দীতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইসলামের আগমনের সময় রোহিঙ্গারা সেখানে ছিল বলে ইতিহাস চিহ্নিত করেছে। এ জাতীয় বিবৃতি ছাড়া  বিশ্বনেতাদের পক্ষ থেকে আপাতত কোনো কঠোর পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। 

প্রশ্ন হচ্ছে, শুধু  নিষ্ক্রিয় জাতীয় ভাষণ-বিবৃতি ও আলোচনা-সমালোচনায় কি রোহিঙ্গা সংকটের আদৌ কোনো বিহিত হবে? বিশ্বনেতাদের বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।

 


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ