শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার আ.লীগ নেতাকর্মীর প্রভাবে নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের সংবর্ধনা বাতিল আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা ইসলামি লেখক ফোরামের বৈঠক অনুষ্ঠিত, আসছে নতুন কর্মসূচি সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান কারাগারে উত্তপ্ত খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা নেতানিয়াহুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ইসরায়েলি নাগরিক গ্রেপ্তার

লাউয়াছড়া-প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম : মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপমেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের অন্যতম সংরক্ষিত বনা ল। মৌলভীবাজার রেঞ্জের ২৭৪০ (দুই হাজার সাত শত চলিশ হেক্টর আয়তনের পশ্চিম ভানুগাছ সংরক্ষিত বনের ১২৫০ এক হাজার দুইশত প শ হেক্টর এলাকাকে ১৯৭৪ উনিশ শত চুয়াওর সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংশোধন আইন অনুযায়ী ১৯৯৬ উনিশ শত ছিয়ান্নবই সালে এ বনটিকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয়। তখন থেকেই ইউ.এস.এইডের অর্থায়নে নিসর্গ সহায়তা প্রকল্প এ উদ্যানের বৃক্ষ ও জীব বৈচিত্র রক্ষণাবেক্ষণ ও পর্যটকদের আকৃষ্ট করার কাজ শুরু করে। তবে বন হিসেবে এর যাত্রা শুরু বিশ শতকের প্রথমভাগে। ১৯২৫ উনিশ শত পঁচিশ সালে কমলগঞ্জের ভানুগাছের তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার এ বনায়নে সুচনা করে।

দুটি পাতা একটি কুড়ির দেশ সিলেটের যতগুলো দর্শনীয় স্থান রয়েছে তাঁর মধ্যে লাউয়াছড়া রেইন-ফরেস্ট অন্যতম। লাউয়াছড়া যাবার পথে চোখে পড়বে চা-বাগান, পাহাড়, বন-বনানী, উচু-নিচু টিলা, আনারস, লিচু ও লেবু বাগান। চারদিকে সবুজের ছড়াছড়ি, যেন সবুজের একটি স্বর্গরাজ্য।

লাউয়ছড়া প্রবেশ করামাত্র শুনতে পাওয়া যাবে ঝিঝি পোকার ডাক। গাছে গাছে পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ। জীব বৈচিত্র ও বন্য প্রাণীর মহামিলনের নান্দনিক সৌন্দর্যের অন্যতম স্থান লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানটি দেশে ট্রপিক্যাল রেইন ফরেস্ট হিসেবে খ্যাত। এটি বর্তমানে বিনোদনের একটি আকর্ষণীয় ¯পটে পরিণত হয়েছে। উচু-নিচু পাহাড় ও ঝর্ণা ধারার পরিপূর্ণ দেশের প্রসিদ্ধ এ পিকনিক ¯পটটি শীতের শুরু থেকেই অগণিত পর্যটকদের পদভারে হয়ে উঠে মুখরিত।

লাউয়াছড়ার বুকচিরে চলে গেছে ঢাকা-সিলেট আন্তঃনগর রেললাইন। এ স্থানটি ও লাউয়াছড়ার একটি সুন্দর জায়গা। এই রেললাইন পার হলেই চোখে পড়বে দুর্লভ বৃক্ষ আফ্রিকান টিকওক গাছে ভেঙ্গে পড়া অংশটি। এই গাছটি ২০০৫ সালের এক ঝড়ে ভেঙ্গে পড়ে যায়। অনেকের কাছে এই গাছটি ক্লুরোফিল ট্রি নামেও পরিচিত। বৃক্ষটির অদ্ভুদ বৈশিষ্ট হলো এর সংস্পর্শে এলে মানুষ অজ্ঞান হয়ে যেত। দর্শনাথী কমে যাওয়ার কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ বন-বিভাগ গাছের এই অদ্ভুদ ক্ষমতাকে ইঞ্জেকশন দিয়ে নিস্ক্রিয় করে দিয়েছেন।

জাতীয় ই-তথ্যকোষের হিসেবে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ৪৬০ প্রজাতির দুর্লভ উদ্ভিদ ও প্রাণী রয়েছে। উদ্ভিদের মধ্যে আগর, সেগুন, চাপালিশ, জারুল, আকাশমণি, আওয়াল, লোহা কাঠসহ ১৬৭ প্রজাতির উদ্ভিদ, ৪ প্রজাতির উভয়চর প্রাণী, ৬ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৪৬ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে।
জীব বৈচিত্রে ভরপুর এই উদ্যানে দেখ মেলে নানা বিরল প্রজাতির পশুপাখি। দেশের ১০টি জাতীয় উদ্যানের ভেতর একমাত্র লউয়াছড়া উদ্যানই বর্তমানে বিলুপ্ত প্রায় উলুকের সবচেয়ে বড় বিচরণ এলাকা। জীব-বৈচিত্র গবেষণা পত্রাদি থেকে জানা যায়, উলুক মূলত দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র বনমানুষ। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য বন্যপ্রাণীর মধ্যে হরিণ, লজ্জাবতী বানর, মুখপোড়া হনুমান, বনরুই গন্ধগোকুল, বাগডাশ, বনমোরগ, সজারু, অজগর সাপ, গুইসাপ, হনুমান, শেয়াল, মেছোবাঘ, চিতাবিড়াল, বনবিড়াল, কাঠবিড়ালী, বন্যকুকুর, এছাড়াও রয়েছে পাহাড়ি ময়না, ধনেশ, মথুরা, সবুজ ঘুঘুসহ বিচিত্র ধরনের পাখি।

উদ্যানে বেড়ানোর তিনটি ট্যার্কিং পথ রয়েছে। একটি তিন ঘণ্টার, একটি এক ঘণ্টার, এবং অন্যটি আধা ঘণ্টার পথ। আপনাকে সবসময় স্মরণ রাখতে হবে লউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কের জীব-বৈচিত্র আহরণ সরকার নিষিদ্ধ করেছে। পার্কে ভ্রমণকালে কোন গাছের পাতা ছেড়া বা কোন পশু পাখিকে ডিস্টার্ব করা যাবেনা।
ব্যস্ত নাগরিক জীবনে হাঁপিয়ে উঠা প্রতিটি মানুষেরই বিনোদন প্রয়োজন। আর এই প্রয়োজন মেটাতে লাউয়াছড়া উদ্যান একটি অন্যতম স্থান ।

-এজেড


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ