শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

রাগান্বিত অবস্থায় শিশুকে প্রহার করা উচিত নয়; মুফতি তাকি উসমানি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হযরত থানভী রাহ. বলেন, ‘রাগান্বিত অবস্থায় কখনও শিশুকে প্রহার করবে না (পিতা ও উস্তাদ) উভয়ের জন্যই এই কথা)। রাগ প্রশমিত হওয়ার পর চিন্তা-ভাবনা করে শাস্তি দিবে। উত্তম শাস্তি হল ছুটি মওকুফ করে দেওয়া। শিশুর উপর এর খুব প্রতিক্রিয়া হয়ে থাকে। মিয়াজী ছাত্র প্রহারে এজন্য স্বাধীন হয়ে যান যে, তাকে প্রশ্ন করার কেউ থাকে না। শিশুর তো প্রশ্ন করার যোগ্যতাই নেই আর অভিভাবক মিয়াজীকে পূর্ণ স্বাধীন করে দিয়েছেন এই বলে যে, ‘হাড্ডি আমাদের, আর চামড়া মিয়াজীর’!

মনে রাখবে, যার অধিকার সম্পর্কে প্রশ্ন করার কেউ থাকে না তার সম্পর্কে প্রশ্নকারী স্বয়ং আল্লাহ। এমনকি কোনো যিম্মী (মুসলিম দেশের অমুসলিম নাগরিক, যার নিরাপত্তা মুসলিম শাসকের যিম্মায়) কাফিরের উপর যদি কোনো শাসক জুলুম করে তাহলে হাদীস শরীফে এসেছে যে, আল্লাহ ও তার রাসূলের কাছে এর জন্য জবাবদিহি করতে হবে। (আনফাসে ঈসা পৃ. ১৭৩)

শিশুদেরকে প্রহার করা অত্যন্ত ভয়াবহ

শিশুদেরকে প্রহার করা খুবই ভয়াবহ। আমাদের পিতা হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ শফী রাহ. বলতেন, অন্যান্য গুনাহ তো তওবার মাধ্যমে মাফ হতে পারে, কিন্তু শিশুদের উপর জুলুম করা হলে এর ক্ষমা পাওয়া খুবই জটিল। কেননা, এটা হচ্ছে বান্দার হক। আর বান্দার হক শুধু তওবার দ্বারা মাফ হয় না, যে পর্যন্ত না যার হক নষ্ট করা হয়েছে সে মাফ করে। এদিকে যার উপর জুলুম করা হয়েছে সে হচ্ছে নাবালেগ। নাবালেগের ক্ষমা শরীয়তের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। এমনকি শিশু যদি মুখে বলেও যে, আমি মাফ করলাম তবুও তা গ্রহণযোগ্য নয়। এজন্য এই অপরাধের মাফ পাওয়া খুব জটিল। আর তাই শিশুদেরকে প্রহার করা এবং তাদের সঙ্গে মন্দ ব্যবহার করার ব্যাপারে সাবধান হওয়া উচিত।

শিশুদের প্রহারের বিষয়ে বিধিনিষেধ

মাদরাসার কারী সাহেবরা এ অন্যায় করে ফেলেন। আল্লাহ তাআলা তাদের রক্ষা করুন। আমীন। হযরত থানভী রাহ. নিয়ম করেছিলেন যে, মকতবে কোনো কারী সাহেব শিশুদেরকে প্রহার করতে পারবে না। কেউ প্রহার করলে তাকে হযরত রাহ.-এর কাছে জবাবদিহি করতে হত এবং কখনও কখনও শাস্তিও পেতে হত। একবার হযরত একথাও বলেছিলেন যে, এখন থেকে যদি জানতে পারি, কোনো কারী সাহেব কোনো শিশুকে মেরেছে তাহলে ওই কারী সাহেবকে মসজিদের বারান্দায় দাড় করিয়ে ওই শিশুর দ্বারা বেত দেওয়াব। বিষয়টা খুবই নাজুক ও মারাত্মক। এজন্য হযরত থানভী রাহ. এ বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর ছিলেন।

শান্ত হওয়ার পর বুঝে-শুনে শাস্তি দিন

এটা ঠিক যে, শিশুদেরকে পড়ানো খুবই কঠিন কাজ। তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ নয় এবং কখনও কখনও প্রহারের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েই যায়। তো এমন পরিস্থিতিতে অন্য কোনো চিকিৎসা ফলপ্রসূ না হলে হযরত রাহ. বলেন, এ ক্ষেত্রেও রাগান্বিত অবস্থায় মারবে না। এ সময় চুপ থাক। যখন ক্রোধ দূর হয়ে যাবে তখন ভেবে চিন্তে শাস্তি দিবে। এতে শাস্তির মাত্রা ঠিক থাকবে। যে পরিমাণ প্রয়োজন সে পরিমাণ শাস্তিই দেওয়া হবে। সীমালঙ্ঘন হবে না। কিন্তু যদি রাগান্বিত অবস্থায় মারতে আরম্ভ কর তাহলে এক থাপ্পড়ের জায়গায় দশ থাপ্পড় দিয়ে ফেলবে। এর কারণে একে তো গুনাহ হল। কেননা, প্রয়োজনের অধিক শাস্তি দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত এতে শিশুর ক্ষতি হবে। কেননা সকল বিষয়ই মাত্রা অতিক্রম করলে ক্ষতিকর হয়ে যায়। তৃতীয়ত এর জন্য পরে অনুতাপ করতে হবে।

এজন্য হযরত রাহ. একেবারে মৌলিক কথাটা বলে দিয়েছেন যে, ক্রুদ্ধ অবস্থায় শাস্তি দিবে না। ক্রোধ ঠান্ডা হওয়ার পর শাস্তি দিবে।

সূত্র- আল কাউসার


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ