মাওলানা মুহাম্মদ রাশিদুল হক
শিক্ষক ও কলামিস্ট
আজ থেকে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সারা দেশে একযোগে এই পরীক্ষা চলবে আগামি ১০ মে পর্যন্ত।
বেফাকের প্রধান নেগরানের জিম্মাদারী পালন করতে হচ্ছে তিন বছর যাবত। এর আগে সহকারী ছিলাম আরো চার বছর। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস এবং পরীক্ষায়ও অংশ নেওয়ার সুযোগ হয়েছে।
দু’টি ধারার ক্লাস এবং পরীক্ষায় ছাত্রদের উপস্থিতির মূল্যায়ন করতে গেলে আমি বলতে বাধ্য হবো: “বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীর চেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বহুগুণে বেশি। অন্যদিকে কওমি মাদরাসায় শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা সমান।”
কওমি মাদরাসায় এমন অনেক ছাত্রই পাওয়া যায় যারা সারা বছর একটি ক্লাস বা দরসেও অনুপস্থিত থাকে না। শিক্ষাটাই তাদের কাছে মুখ্য, পরীক্ষাটা অনেকটা গৌণ।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এমন অসংখ্য শিক্ষার্থী রয়েছে, যারা একটি ক্লাসও করে না; শুধু পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে। তাহলে শিক্ষার চেয়ে পরীক্ষা বা সনদই কী সেখানে মুখ্য বলে বিবেচিত হচ্ছে না!
এই অবস্থা থেকে উত্তরণ লাভ করতে না পারলে জাতি যোগ্যতাশূন্য হয়ে পড়বে। সনদধারী মূর্খে ভরে যাবে দেশ। পোষাকী বা কাগুজে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী দিয়ে আর যাই হোক আদর্শ দেশ গড়া যায় না। দেশ গড়তে হলে চাই আদর্শ জনবল। আর কাগজ মানুষের হৃদয়ে আদের্শের বীজ বপন করে না। আদর্শ অঙ্কুরিত হয় সুশিক্ষা থেকে। তাই বাংলাদেশ চায়, হল ভর্তি পরীক্ষার্থীর সাথে সাথে ক্লাস ভর্তি শিক্ষার্থীও।
এক্ষেত্রে কওমি মাদরাসাগুলো হতে পারে অন্যদের জন্য অনুপম আদর্শ। আমি দেশের সুশীল সমাজকে কওমি মাদরাসার ক্লাসরুম এবং পরীক্ষার হলগুলোকে পরিদর্শনের আহবান জানাবো। যেন তারা প্রকৃত সত্যটি উপলব্ধি করতে পারেন এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদেরকে ক্লাসরুমমূখী করার জন্য সেগুলোকে উপমা হিসেবে পেশ করতে পারেন।
আসুন। দেখুন। আমার বিশ্বাস আপনি সত্যিই অভিভূত হবেন। প্রকৃত শিক্ষিত ও নীতিবান জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে কওমি মাদরাসায় প্রশংসনীয় এই ধারাকে দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাস্তবায়িত করতে পারলে দেশ ও জাতি একটি সুন্দর আগমীর পথে এগিয়ে যাবে।
গোলটেবিল: দাওরায়ে হাদিস বনাম মাস্টার্স (ভিডিও)