বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ২৮ কার্তিক ১৪৩১ ।। ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


বুদ্ধিমানের নির্বুদ্ধিতা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

Bitokoহোছাইন মুহাম্মদ নাঈমুল হক
কাতার থেকে 

নূর ও সালাহ দুই বন্ধু। শুধু বন্ধু বললে ভুল হবে, পরম বন্ধু। দু’জন যেন অভিন্ন সত্ত্বা! দু’জনই তুখড় মেধাবী। দু’জনের অধ্যয়নই যে কতো গভীর তা সামান্য আলোচনাতেই বোঝা যায়। অধ্যয়ন বিষয়ে দু’জনার মধ্যে বাড়াবাড়ি পর্যায়ের প্রতিযোগিতা আছে! প্রতিদিন আসরের নামাজের পর দু’জন বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করে। আজকাল আসিফ নামের বাল্যকালের তাদের এক বন্ধুও আড্ডায় যোগ দেয়। আসিফ আগে জার্মানিতে থাকতো। কিভাবে জানি গিয়েছিল! এইতো কিছুদিন হলো, একটি এনজিও কোম্পানির চাকরি নিয়ে দেশে ফিরে এলো। নিজেকে সে মুক্তচিন্তার অধিকারী বলে প্রচার করলেও ইসলামের বিরোধিতাই যেন তার একমাত্র কাজ। সালাহ ও নূর তার সঙ্গে এ বিষয়ে মাঝে মধ্যে আলোচনা করে। আজকের আলোচনার কিয়দাংশ এখানে তুলে ধরা হলো। আলোচনা আসিফ-ই শুরু করলো।

আসিফ: আজ তোদের কাছে প্রমাণ করবো যে, তোদের নবী ছিল মিথ্যুক। এবং তা তোদের কোরআন ও হাদিস থেকেই।

নূর ও সালাহের সমস্বরে উত্তর: তাই নাকি! তুই তো আরবি বুঝিস না। পবিত্র কোরআন ও হাদিস শরিফ তো আরবিতে। কোরআন-হাসিস বুঝিস কিভাবে?
আসিফ: আরে গাধারা! তোরা তো জঙ্গলু। একবিংশ শতাব্দীতে বসবাস করেও তোদের ঘিলু হলো সেই প্রস্তর যুগের। আজকাল তোদের কোরআন-হাদিস বুঝতে মরু আরবদের সেই আরবি ভাষা জানা লাগে না। বুঝছস?!
নূর: আসিফ! এটা কেমন কথা বললি! পবিত্র কোরআন-হাদিস হলো আরবি ভাষায়। তুই যদি যথাযথভাবে তা বুঝতে চাস তোকে তো সেই মূল ভাষা বুঝতে হবে। এর সঙ্গে আর জঙ্গলু, প্রস্তর যুগ, একবিংশ শতাব্দি ও মরু আরবের কী সর্ম্পক!

সালাহ: আসিফ! তুই তো নিজেকে সব সময় সত্যসন্ধানী বলে প্রচার করিস। আর পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে আরবি ভাষার সর্বোচ্চ অলংকারপূর্ণ ভাষায়। তাই চৌদ্দশত বছর ধরে বহু কাফের আরবরা চেষ্টা করেও কোরআনের একটি সুরার মতো কিছু বানাতে পারে নি। কোরআন তাদের বারবার চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তারা পারে নি। সন্দেহ হলে খুলে দেখ, পবিত্র কোরআনের সুরা বাক্বারার ২৩-২৪ নাম্বার আয়াত ও সুরা বনি ইসরাইলের ৮৮ নাম্বার আয়াত, আর নবীজীও ছিলেন আরবদের মধ্যে সবচে’ বিশুদ্ধভাষী। তো তুই ইসলামের দুই মূল সোর্সের ভাষা আরবি জানা ছাড়া কিভাবে কোরআন-হাদিসের ক্রিটিসাইজ করার চেষ্টা করিস! আর তাই তো সব সময় দেখা যাচ্ছে তোর ক্রিটিসাইজগুলো অশুদ্ধ। ভুল। কারণ, তুই ইসলামের যে বিষয়গুলো নিয়ে সমালোচনা করিস তা ভালভাবে বুঝিস না! তো দেখি আজকের তোর কোরআন-হাদিস বিষয় জ্ঞানগর্ব আলোচনা পেশ কর!

আসিফ: দেখ, তোদের কোরআনের ৬৯ নাম্বার সুরার ৪৪-৪৬ নাম্বারে আয়াতে লেখা আছে : Quran 69 : 44-46
“And if Muhammad had made up about Us some [false] sayings, We would have seized him by the right hand; Then We would have cut from him the aorta.”
যার বাংলা অর্থ হলো: “নবী যদি আল্লাহর নাম ভাঙ্গিয়ে কোন মিথ্যা আয়াত নিয়ে আসতো, তাহলে আল্লাহ তার ধমনী (Aorta) ছিড়ে ফেলতেন!”
এবং তোরা জানিস তোদের নবী মারা যাওয়ার সময় আয়েশাকে বলেছিল:
“The Prophet (ﷺ) in his ailment in which he died, used to say, "O `Aisha! I still feel the pain caused by the food I ate at Khaibar, and at this time, I feel as if my #aorta is being cut from that poison."”
তাহলে দেখ্‌, কোরআন বলেছে আল্লাহর ব্যপারে মিথ্যা বললে আল্লাহ তার বুকের ধমনী ছিড়ে ফেলবে আর স্বয়ং নবী নিজেই মারা যাওয়ার আগে বললো তার ধমনী ছিড়ে যাচ্ছিল!!
এখন কী বুঝলি! তোদের নবীকে কে মারলো?
সহজ উত্তর: আল্লাহ।
আর কেন মারলো? যেহেতু সে আল্লাহর ব্যাপারে মিথ্যা বলেছে!! বুঝলি কিছু!!
আমি আরবি জানি না বলে তোদের দম্ভ! তো দেখি তোদের আরবি জানা কোথায় যায় আজ!
নূর: আসিফ! এ ব্যাপারে তোর আর কিছু বলার আছে?
আসিফ: অবশ্যই! আগে এটার উত্তর দে! তারপর আসছি! আজ তোদের আসমানি ধর্ম কোথায় গিয়ে ঠেকে দেখা যাবে! বাকি জীবন আর ধর্মের নামে ব্যবসা করবি না! বুঝলি! আমার নাম আসিফ!
নূর: আরে আসিফ! তুই এতো কথা বলিস কেন! তুই না বলিস তুই সত্যসন্ধানী। একটু অপেক্ষা কর না ভাই। দেখা যাক্! তোর দেয়া প্রমাণগুলো আগে আলোচনা হোক।
দেখ্‌, আসিফ! তোর উল্লেখিত বিষয়্টার উত্তর আমরা পূর্ণাঙ্গভাবে দিব। তোকে ধৈর্য সহকারে শুনতে হবে। বুঝে না এলে জিজ্ঞেস করবি। তবে না বুঝে চিল্লাবি না। আবার বোঝারও ভান করবি না।
দেখ, তুই পবিত্র কোরআন ও হাদিস থেকে দুটি রেফারেন্স এনেছিস। এটা খুবই ভাল কথা। আমাদের জন্য আলোচনার কাজ অনেক সহজ হয়ে গেল। দুই যে আয়াতের অর্থ উল্লেখ করেছিস সে আয়াতগুলো এবং হাদিসের আরবি টেক্সট আমি উল্লেখ করবো।
আসিফ: আমি আরবি বুঝি নারে ভাই!‍ তুই আরবি টেক্সট উল্লেখ করে লাভ কী?
নূর: লাভ আছে, তোকে দেখাচ্ছি:
পবিত্র কোরআনের সুরা আল-হাক্কাতে আল্লাহ তায়ালা বলেন-
[وَلَوْ تَقَوَّلَ عَلَيْنَا بَعْضَ الْأَقَاوِيلِ - لَأَخَذْنَا مِنْهُ بِالْيَمِينِ - ثُمَّ لَقَطَعْنَا مِنْهُ الْوَتِينَ. [الحاقة : 44 - 46
অর্থ: “এবং যদি সে  কোন বাণী বানিয়ে আমার প্রতি আরোপ করে, তবে অবশ্যই আমি তার ডান হাত ধরে ফেলতাম। অতঃপর আমি তার জীবন ধমনি (পিঠের রগ) কেটে দিতাম।”
ভাল করে লক্ষ্য করবি এখানে ‘আল-ওয়াতিন’ শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে। যার অর্থ : পিঠের ধমনি।
এখন দেখ তোর উল্লেখ করা হাদিসটি। হাদিসটির ইমাম বুখারি রহ. তার সহি বুখারিতে উল্লেখ করেছেন। হাদিসটি সূত্রসহ উল্লেখ করছি।
وَقَالَ يُونُسُ عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ عُرْوَة: قَالَتْ عَائِشَةُ رضى الله عنها : "كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ فِي مَرَضِهِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ :‏ "‏ يَا عَائِشَةُ! مَا أَزَالُ أَجِدُ أَلَمَ الطَّعَامِ الَّذِي أَكَلْتُ بِخَيْبَرَ، فَهَذَا أَوَانُ وَجَدْتُ انْقِطَاعَ أَبْهَرِي مِنْ ذَلِكَ السَّمِّ ‏"‏‏.‏
অনুবাদ : এবং ইউনূস জুহরি থেকে বর্ণনা করে বলেন : উরওয়া বলেছেন তাকে আয়েশা রা. বলেছেন: ‘নবীজী তাঁর অসুস্থতার সময় বলতেন: হে আয়েশা! এখনো আমি খায়বারে খাওয়া খাদ্যের ব্যাথা অনুভব করি। এ সময়ে আমি সেই বিষের ক্রিয়ায় আমার বুকের রগ বা ‘আবহার’ কেটে যাওয়ার আশঙ্কা করছি।’
ভালো করে লক্ষ্য কর, এখানে নবীজী বলেছেন, ‘আবহার’ যার অর্থ: বুকের রগ।
এখানে কয়েকটা বিষয় লক্ষ্যনীয় :
১. পবিত্র কোরআনে এসেছে: ‘আল-ওয়াতিন’ শব্দ আর হাদীস শরীফে এসেছে ‘আল-আবহার’ শব্দ।
তাহলে দেখা যাচ্ছে দু’স্থানে দুটি ভিন্ন রগের কথা বলা হয়েছে। সমস্যা হলো তুই দুটি শব্দের অর্থই করেছিস ইংরেজি (aorta) শব্দ দিয়ে। অথচ দুটিই aorta নয়। আর সমস্যার মূল হলো, তোর আরবি জানা না থাকা। তাই তুই অনুবাদকের ভুলটা ধরতে পারিস নি।
এবার বল, তোর দাবি সত্য সাব্যস্ত হলো কিভাবে?
আসিফ : ধাপ্পাবাজি করার জায়গা পাছ না। ওরিয়েন্টালিশরা বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে। তারপর তারা বলেছে যে, দুটি শব্দই সমার্থবোধক।
সালাহ: ভালো কথাই বলেছিস। ওরিয়েন্টালিস্ট মানে যেসব পাশ্চাত্যবিদ ইসলাম বা প্রাচ্যকে নিয়ে গবেষণা করেছে। এই তো?
আসিফ: হুম।
সালাহ: তাহলে এবার বল, আরবদের ভাষা আরবি ভাষাবিদরা বেশি বুঝে না ওরিয়েন্টালিস্টরা?
আসিফ: স্বাভাবিকভাবেই আরবি ভাষাবিদরা বেশি বুঝবে।
সালাহ্: তাহলে দেখ, আরব ভাষাবিদরা কী বলে এ সম্পর্কে। আমি আমার মোবাইলের ‘আল-মাকতাবাতুশ শামেলা’ থেকে একটি রেফারেন্স-ই উল্লেখ করবো, তুই পরবর্তী সময়ে যতো আরবি অভিধান মন চায় দেখে নিস।
প্রসিদ্ধ আরবি ভাষাবিদ আল মুরতাজা আয-যাবীদী তাঁর ৪০ খন্ডে রচিত “তাজুল আরুস” গ্রন্থের ১০ নাম্বার খন্ডের ২৬৩ পৃষ্ঠায় লিখেন-
”الأَبْهَرُ عِرْقٌ مَنْشَؤُه مِن الرَّأْس، ويَمْتَدُّ إِلى القَدمِ، وَله شَاريِينُ تتَّصِلُ بأَكثرِ الأَطرافِ والبَدَنِ، فَالَّذِي فِي الرأْس منهُ يُسَمَّى النَّأْمَة ويَمتدُّ إِلى الحَلْق فيُسَمَّى فِيهِ الوَرِيدَ، ويمتدُّ إِلى الصَّدْر فيُسَمَّى الأَبْهَرَ، ويمتدُّ إِلى الظَّهْر فيُسَمَّى الوَتِينَ، والفُؤادُ معلَّقٌ بِهِ، ويمتدُّ إِلى
الفَخِذ فيُسَمَّى النَّسَا، ويمتدُّ إِلى السّاق فيُسَمَّى الصّافِنَ“
অর্থ: “আল-আবহার বলা হয়, মাথা থেকে পা পর্যন্ত বিস্তৃত একটি রগ। যার কিছু শিরা-উপশিরা আছে যা পুরো শরীরের অধিকাংশ অঙ্গ-প্রতঙ্গে বিস্তৃত। মাথার শিরাকে বলা হয় ‘আন-না’মাহ্‌’, কণ্ঠনালীর শিরাকে বলা হয় ‘আল-ওয়ারিদ’, বুকের শিরাকে বলা হয় ‘আল-আবহার’, পিঠের শিরাকে বলা হয় ‘আল-ওয়াতিন’, তার সাথে-ই হৃদপিণ্ডের সম্পর্ক, রানের শিরাকে বলা হয় “আন-নাসা’ আর পায়ের নলার শিরাকে বলে ‘আস-সাফিন’ ”
এখন বল, কী বুঝলি?
আল-ওয়াতিন হলো পিঠের শিরা, যার সঙ্গে হৃদপিণ্ডের সম্পর্ক আর তাই আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ব্যবহার করেছেন। অর্থাৎ রূপক অর্থে এ কথা বলেছেন যে, যদি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তায়ালার ব্যাপারে মিথ্যা বলেন – আল্লাহ মাফ করুন - তবে তিনি নবীর ওয়াতিন ছিড়ে মেরে ফেলবেন।
আর আল-আবহার হলো বুকের শিরা। যাতে নবীজী বলেছেন- তার বুকে এতো বেশি ব্যাথা হচ্ছিল যে, মনে হচ্ছিল যেন বুকের শিরা ছিড়ে যাবে? তাহলে দুটি কি সমার্থবোধক শব্দ না ভিন্ন ভিন্ন?
আসিফ: বলোস কি?
নূর: তোর বিশ্বাস হয় না? তাহলে আরবি জানে এমন যে কাউকে জিজ্ঞেস করেনিস!
 আসিফ: বল শুনি!
নূর: ইমাম বুখারী রহ. বুখারী শরীফে দুই প্রকারের হাদীস উল্লেখ করেছেন। প্রথম প্রকার যা নির্ভরযোগ্য সূত্রে তিনি থেকে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত সব রাবী গ্রহণযোগ্য ও মিলিত। মধ্যে কোন রাবী পড়েও যায় নি। আবার অগ্রহণযোগ্য কোন রাবীও নেই। এসব হাদীসকে ‘আল-মুসনাদ’ হাদীস বলা হয়। বুখারী শরীফে উল্লেখিত এ প্রকারের সব হাদীস সহীহ। দ্বিতীয় প্রকার হলো, যার সূত্রমিল নেই। মাঝে কেউ একজন পড়ে গেছেন। এসব হাদীসকে ‘আল-মুয়াল্লাক’ বা ঝুলে হাদীস বলা হয়। অর্থাৎ তার প্রতিটি বর্ণনাকারী উল্লেখিত নয়। বরং কেউ একজন হাদীসটির সূত্রটি ঝুলিয়ে রেখে চলে গেছেন। আর এ প্রকারের সব হাদীসগুলো সহীহ নয়, রবং যেগুলোর সূত্র অন্যকোন হাদীস গ্রন্থে বিশুদ্ধ সূত্রে পাওয়া যায় তা সহীহ। আর যেসবের সূত্র পাওয়া যায় না বা তার সূত্রগুলো দুর্বল তা সহীহ নয়।
এখন আসা যাক্‌, তোর উল্লেখিত হাদীসে। তো কি দেখতে পেলি সেখানে? তা কোন পর্যায়ের?
আসিফ: দ্বিতীয় পর্যায়ের।
নূর: তাহলে আমাদের এখন যা করণীয় তা হলো: এই হাদীসের সূত্রগুলো অন্যান্য হাদীস গ্রন্থে তালাশ করা। এখন দেখা যাক। ইমাম আয-যায়লায়ী’ নামের এক বড় মাপের মুহাদ্দিস তাঁর (তাখরীজু আাহদীসিল কাশ্শাফ’ নামক গ্রন্থে এই হাদীসটির প্রায় ৭টির মতো সনদ উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন একটাও পূর্ণ ধারাবাহিক সূত্রে শুদ্ধ নয়!! দেখে নিস, প্রথম খন্ডের 68-৭১ পৃষ্ঠায়।
আরো, একটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন তা হলো তুই যেসব আয়াত উল্লেখ করেছিস তার পূর্বের ও পরের আয়াতগুলো দেখা প্রয়োজন। সেখানে এ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা আছে।
দেখ্‌, আল্লাহ তা’য়ালা বলেন-
وَمَا هُوَ بِقَوْلِ شَاعِرٍ قَلِيلًا مَا تُؤْمِنُونَ - وَلَا بِقَوْلِ كَاهِنٍ قَلِيلًا مَا تَذَكَّرُونَ - تَنْزِيلٌ مِنْ رَبِّ الْعَالَمِينَ - وَلَوْ تَقَوَّلَ عَلَيْنَا بَعْضَ الْأَقَاوِيلِ - لَأَخَذْنَا مِنْهُ بِالْيَمِينِ - ثُمَّ لَقَطَعْنَا مِنْهُ الْوَتِينَ - فَمَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ عَنْهُ حَاجِزِينَ - وَإِنَّهُ لَتَذْكِرَةٌ لِلْمُتَّقِينَ - وَإِنَّا لَنَعْلَمُ أَنَّ مِنْكُمْ مُكَذِّبِينَ - وَإِنَّهُ لَحَسْرَةٌ عَلَى الْكَافِرِينَ - وَإِنَّهُ لَحَقُّ الْيَقِينِ - فَسَبِّحْ بِاسْمِ رَبِّكَ الْعَظِيمِ
অর্থ: ‘আর তা (কোরআন) কোন কবির বাণী নয় (কিন্তু) তোমরা খুব কম সংখ্যক লোক-ই ঈমান আন। আর না তা কোন গণকের বাণী (কিন্তু) তোমরা খুব কম-ই শিক্ষা গ্রহণ করো। অবতীর্ণ (বাণী) জগত সমূহের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে। এবং যদি সে (রাসূল কথার কথা) কোন (মিথ্যা) বাণী বানিয়ে আমার প্রতি আরোপ করে, তবে অবশ্যই আমি তার ডান হাত ধরে ফেলতাম। অতঃপর আমি তার জীবন ধমনি (পিঠের রগ) কেটে দিতাম। তখন তোমাদের কেউ রক্ষা করার জন্য বাধা হয়ে দাড়াতে পারতে না। এবং নিশ্চয় তা মুত্তাকিদের জন্য এক উপদেশবাণী। এবং আমরা ভালভাবে জানি, তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ তার প্রতি (কোরআনের) ইমান আনে না। এবং তা (কোরআন ঐরূপ কাফেরদের জন্য) আক্ষেপের কারণ। এবং এটা সে নিশ্চিত বাণী যা পূর্ণ সত্য। অতঃপর তুমি (হে মুহাম্মদ) তোমার প্রতিপালকের নামে পবিত্রতা ঘোষণা করো।’
আসিফ! তুই যদি সূরা আল-হাক্কার ৪৪-৪৬ নাম্বার আয়াতগুলো বিশ্বাস করে থাকিস তবে তোকে তার আগে-পরের আয়াতগুলোও বিশ্বাস করতে হবে।
আর যদি বিশ্বাস করিস, তাহলে তাতে সুস্পষ্টভাবে বলে দেয়া হয়েছে যে, কোরআন কোন কবি বা গণকের বাণী নয়। নিশ্চয় তা আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত বাণী। যাতে কোন সন্দেহ নেই।
আর যদি বিশ্বাস না করিস, তাহলে কোন যুক্তিতে তুমি শুধু ৪৪-৪৬ নাম্বারের তিনটি আয়াত বিশ্বাস করে থাক?
আসিফ! তোর কী আর কিছু বলার আছে?

চলবে...

লেখক: গবেষক, এসোসিয়েট ডিন অফিস, শরীয়া ফ্যাকাল্টি কাতার ইউনিভার্সিটি, কাতার।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ