শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

‘মুসলমানের চিন্তা-চেতনা বিরোধী শিক্ষানীতি ও দেবীর মূর্তি দেশবাসী মানবে না’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

isha33

আওয়ার ইসলাম: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, সংশোধিত সিলেবাস ও শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে নাস্তিক্যবাদী গোষ্ঠী নতুনভাবে চক্রান্ত শুরু করেছে। নাস্তিক্যবাদীদের যে কোন চক্রান্ত কঠোরহস্তে দমন করতে হবে। ৯২ ভাগ মুসলমানের চিন্তা চেতনা ভুলুন্ঠিত করে গুটিকয়েক নাস্তিক-মুরতাদদের মনোবাসনা অনুযায়ী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করার অপরিণামদর্শি খেলায় মেতে উঠেছে।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, হিন্দু ধর্মের ছেলে মেয়েরা হিন্দু ধর্মীয় বিষয়াদী পড়বে, এতে কারো আপত্তি নেই। কিন্তু মুসলমান ছেলে মেয়েদের জন্য হিন্দু ধর্মীয় বিষয়াদী যেভাবে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, তা কোন বিবেকবান মানুষ মেনে নিতে পারে না। বিষয়টি অবশ্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও উস্কানীমূলক। এই উস্কানীমূলক জঘন্য কাজ যারা করেছে ক্ষমতাসীনরা তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা না নিলে শুধু সরকারকেই নয়, গোটা জাতিকে এর মাশুল দিতে হবে।

রবিবার (১৫ জানুয়ারি’১৭) বিকেলে বরিশালের পার্কে অনুষ্ঠিত ইসলাম ধর্মবিরোধী শিক্ষাআইন ও শিক্ষানীতি বাতিলের দাবি, সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত মূর্তি অপসারণের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল জেলা ও মহানগর আয়োজিত বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

বরিশাল মহানগর সভাপতি মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, সহ-প্রচার সম্পাদক মাওলানা নেছার উদ্দীন, দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মুফতি এছহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের, মুফতি সৈয়দ জিয়াউল করীম প্রমুখ।

পীর সাহেব বলেন, ৮ ভাগ মানুষের জন্য পৃথক সিলেবাস হতে পারে, কিন্তু তাদের চিন্তা চেতনার সিলেবাসে ৯২ ভাগ মুসলমানের সন্তানদের পড়ানোর খায়েশ পূরণ করার চেষ্টা করলে মেনে নেয়া হবে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভেতরে নাস্তিক্যবাদী একটি চক্র প্রবেশ করে স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে হিন্দুত্ববাদী ও নাস্তিব্যবাদী গল্প কবিতা সংযোজন করেছিল। এদেশের ইসলামপ্রিয় জনতা এর বিরুদ্ধে রাজপথে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলায় এবছরের পাঠ্যপুস্তকে বেশকিছু আপত্তিকর গল্প কবিতা বাদ দেয়া হয়। কিন্তু সম্প্রতি বিভিন্ন বক্তৃতা ও টেলিভিশনের টকশোতে একশ্রেণীর বুদ্ধিজীবী এই পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কথা বলছে, এমনকি ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে নানারকম ধর্মীয় উস্কানি দিচ্ছে। তিনি এসব বুদ্ধিজীবীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে বসে আমেরিকা ও ভারতের চিন্তাচেতনায় যারা কথা বলেন, তাদের এদেশে থাকার প্রয়োজন নেই। তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, পাঠ্যসূচি পরিবর্তনকে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা স্বাগত জানিয়েছে, তাই গুটিকয়েক ব্যক্তির কথা না শুনে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের পক্ষেই থাকুন।

বরিশালের পার্কে লাখো জনতার উপস্থিতিতে পীর সাহেব চরমোনাই এ ঘোষণা দেয়ার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন, ইশা ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী যুব আন্দোলন, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম, ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ ও ইসলামী আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, ওলামায়ে কেরাম, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিকগণ।

পীর সাহেব বলেন, দেশকে ১৯৪৭- এর পূর্বাবস্থায় নিয়ে যাওয়ার যড়যন্ত্র চলছে। আমরা আজ আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে শংকিত। আমাদের স্বাধীন জাতিসত্ত্বা আজ হুমকির মুখে। আমাদের ধর্ম-বিশ্বাস ও আমাদের স্বকীয় সংস্কৃতি ধ্বংস করার জন্য গভীর চক্রান্ত শুরু হয়েছে। জাতীয় শিক্ষনীতি ২০১০ ও শিক্ষা আইন ২০১৬ সেই ষড়যন্ত্রেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমরা এর প্রতিবাদ করেছিলাম। সরকার আমাদের আপত্তি তোয়াক্কা না করে একতরফাভাবে জাতীয় শিক্ষানীতি অনুমোদন করেছে। সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে মূর্তি স্থাপন প্রসঙ্গে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, দেশের ৯২ ভাগ মুসলমানের চিন্তার চেতনার পরিপন্থি গ্রীস দেবীর মূর্তি স্থাপন করে মুসলমানদের মূর্তি পূজার দিকে ধাবিত করতে চায় সরকার। তিনি বলেন, যে কোন ভাস্কর্য সে দেশের সংস্কৃতিকে বুঝিয়ে থাকে। কিন্তু গ্রীস দেবীর ভাস্কর্য কি মুসলমানদের সংস্কৃতি? এটা কোন সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি হলেও মুসলমানের এর সথে কোন সম্পর্ক নাই।

তিনি বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রাসূলে কারীম সা.কে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন সত্য দীন তথা ইসলাম দিয়ে, যেন সকল মতাদর্শের উপর বিজয় করার জন্য। যুগে যুগে নবী ও রাসূল এসেছেন মূর্তিকে ভেঙ্গে দেয়ার জন্য। দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে মূর্তি স্থাপন বিরানব্বই ভাগ মুসলমানের চিন্তা-চেতনা পরিপন্থি। অবিলম্বে এ মূর্তি অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় ঈমানদার জনতা কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে।

তিনি বলেন, গ্রীস দেবীর মূর্তির ভাস্কর্য একহাতে তলোয়ার অন্যহাতে পাল্লা। এটা মুসলমানের বাংলাদেশে হতে পারে না। তিনি বলেন, মূর্তি প্রতিস্থাপন করে বিশেষ মহলকে খুশি করার চেষ্টা করা হলেও দেশের ৯২ ভাগ মুসলমান মূর্তির বিরুদ্ধে। এটা অপসারণ না করলে বিমানবন্দরের মতো জনগণ কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে। তিনি দেশবাসীকে মূর্তি বা ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভুমিকা পালনের দাবি জানান।

সভাপতির বক্তব্যে মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, দেশে আস্তিক ও নাস্তিকের লড়াই শুরু হয়েছে। ইসলাম বিনাশী শিক্ষাআইন, শিক্ষানীতি ও বিতর্কিত সিলেবাস বাতিলে দেশের ঈমানদার জনতা জীবন ও রক্ত দিতে প্রস্তুত আছে। ইসলাম মুসলমানদের ঈমানে আঘাত এসেছে। হিন্দুত্ববাদী ও নাস্তিক্যবাদী শিক্ষানীতি, শিক্ষা আইন ও হিন্দুত্ববাদী সিলেবাস বাতিলের এই আন্দোলন শুধু পীর সাহেবের নয়, সকল মুসলমানের। কাজেই সকলকে আন্দোলনে নামতে হবে। তিনি বলেন, ইসলামের উপর আঘাত শুরু হয়েছে। এই আঘাত প্রতিহত করতে হবে।

তিনি বলেন, কারা তৈরী করেছে এই সিলেবাস? এই সর্বনাশা সিলেবাসতো আওয়ামীলীগেরও চেতনা বিরোধী। আওয়ামীলীগের মুসলমান ভাইয়েরা তাদের সন্তানদেরকে কিছুতেই হিন্দুয়ানী বা নাস্তিক্যবাদী শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলবে বলে আমার বিশ্বাস হয় না।

 

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ