দিদার শফিক: ভারত সরকার ‘শিব স্মারক’ নামে ছত্রপতি শিবাজির স্মরণে পৃথিবীর সর্বোচ্চ ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, ভারত সরকার তাদের ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব ও মহান মণীষীদের প্রতি ভক্তি প্রদর্শনে প্রান্তিকতার শিকার। সাধারণ মানুষের টেক্সের টাকা দিয়ে হলেও সরকার মণীষীদের স্মরণে বিপুল পরিমাণে অর্থ ব্যয় করে।
ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ষোল শ’ শতাব্দীর প্রসিদ্ধ ভারতীয় মণীষী ছত্রপতি শিবাজির স্মরণে মুম্বাই থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আরব সাগরের ১৬ একর জায়গাজুড়ে ‘শিব স্মারক’ নামে এ ভাস্কর্য নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যেই এর নির্মাণ কাজের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
জানা যায়, এ ভাস্কর্যের উচ্চতা আমেরিকার স্ট্যাচু অব লিবার্টির উচ্চতার দ্বিগুণ হবে।
https://twitter.com/Dev_Fadnavis/status/811906269812404224?ref_src=twsrc%5Etfw
মহারাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ গর্ব করে বলেন, শুধু ভারত নয়, আরব সাগরে যে কোন রাষ্ট্রের নির্মিতব্য ভাস্কর্যের তুলনায় এটি হবে পৃথিবীর স্মরণীয় ভাস্কর্য।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, এই ভাস্কর্যের ভিত্তিপ্রস্তরের জন্য ৩ হাজার ৬ কোটি মূল্যের মূল্যবান পাথর মুম্বাই অভিমুখে অচিরেই পাঠানো হবে। মহারাষ্ট্র সরকার এই প্রকল্পের জন্য তহবিল ঘোষণা করেছেন। প্রথম ধাপে ২ হাজার ৩০০ কোটি রুপি বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে।
বিশাল পরিমাণ এ অর্থ একটি ভাস্কর্যের পেছনে ব্যয় করায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে ভারতসহ আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়। দৈনিক ডন একটি বিশাল প্রতিবেদন করে এর শিরোনাম দিয়েছে ‘যদি শিবাজি বেঁচে থাকতেন তবে তিনি কখনো এমনটা করতেন না’।
অনলাইন পিটিশনের জন্য কাজ করা ‘চেঞ্জ ডট অর্গ’ বিষয়টি নিয়ে একটি পিটিশন উত্থাপন করেছে, যেখানে ১৮ হাজার ভারতীয় নাগরিক এই ভাস্কর্যের বিরোধিতা করেছেন এবং এ অর্থ দিয়ে প্রয়োজনীয় কোনো উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
তারা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন ভারতে শিক্ষা এবং খাদ্যাভাব তীব্র। যার উন্নতিতে সরকার অর্থ ব্যয় না করে টেক্সের টাকায় ভাস্কর্য নির্মাণ কোনো বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে না। তারা বলেছেন, ভাস্কর্য তো আমাদের জন্য কিছু করতে পারবে না। এর পেছনে এ অর্থ খরচের কী মানে?
বিষয়টি মৎস ও সমুদ্র রক্ষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং তারা আদালতে এর বিরুদ্ধে একটি পিটিশনও দায়ের করেছেন।
ভারতের মিডিয়ায় অবশ্য প্রয়োজনীয় এরকম কিছু কাজ দেখানো হয়েছে যা ৩০০ কোটি ডলারের কমেই সম্ভব।
১. ভারতের ৬৩ রাজ্যে ব্যাংকঋণের অর্ধেক ভাস্কর্যটির খরচের চেয়ে কম হবে।
২. ভাস্কর্য নির্মাণের জন্য বরাদ্ধকৃত অর্থ দিয়ে তামিলনাড়ুর সব সড়ক ও মহাসড়কের নির্মাণ সহজেই সম্পন্ন হবে।
৩. ভাস্কর্যের খরচের অর্ধেকেরও কম অর্থ দিয়ে ভারতের ডিজিটাল শিক্ষার মিশন পূর্ণ করা সম্ভব।
সূত্র: ডন
সম্পাদনা: রোকন রাইয়ান
মাহফিলে সরকারবিরোধী বক্তব্য দেওয়ায় বক্তা আটক