আবিদ আনজুম: সিরাত ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের উদ্যোগে মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রহ. এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।ঢাকার ফরাশগঞ্জের লালকুঠি হলে বৃহস্পতিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় এ সেমিনার।
মুফতি মুজিবুর রহমানের উপস্থাপনায় সংগঠনের যুগ্ম আহবায়ক মুফতি মুহাম্মদ আমিমুল ইহসানের অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন।
বক্তগণ বলেন, বাংলাভাষায় সিরাত চর্চার প্রথিকৃত মাওলানা মুহিউদ্দীন খান। তিনি এদেশে সিরাতের বিপ্লব সাধন করেছেন। যুগে যুগে তার নাম গর্বের সঙ্গে উচ্চারিত হবে।
তারা বলেন, মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রহ. শুধু একজন লেখক কিংবা সম্পাদক ছিলেন না। তার ভেতর সবগুণের সম্মিলণ ঘটেছিল। বাংলার মানুষ তার দ্বারা বিশাল উপকার লাভ করেছে।
সংগঠনের আহ্বায়ক মুফতি মুহাম্মদ ইমাদুদ্দীনের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন, ফরিদাবাদ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, মধুপুরের পীর মাওলানা আবদুল হামীদ, দৈনিক ইনকিলাবের সহকারী সম্পাদক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, জামিয়া রাহমানিয়ার শায়খুল হাদিস মাওলানা মুমুনুল হক, লেখক ও গবেষক মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন, মুফতি মুহাম্মদ আবদুল্লাহ, মাওলানা আবদুল্লাহ আল ফারুক, মাওলানা আবু দাউদ জাকারিয়া, মুফতি হাবিবুল্লাহ মেসবাহ, মুফতি শিব্বির আহমদ প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা আবদুল কুদ্দুস মাওলানা মহিউদ্দীন খান রহ. এর সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, শায়খ আবদুল্লাহ দরখাস্তি একবার বাংলাদেশে এসেছিলেন। তিনি মাওলানা খানকে অনেক মহব্বত করতেন। যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় বয়ান করতে বসার পরই তিনি খুঁজতে থাকেন মাওলানা মুহিউদ্দীন খানকে। মুহিউদ্দীন খান সে সময় কক্সবাজার থেকে মাত্র এসে অনুষ্ঠানের পেছনে বসেছেন। ডাক শুনে তিনি সামনে এলে অনুষ্ঠানের মধ্যেই তাকে জড়িয়ে ধরেন।
মধুপুরের পীর মাওলানা আবদুল হামিদ বলেন, মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রহ. শুধু সাধারণ একজন ইসলামি স্কলার ছিলেন না তিনি ছিলেন সমাজসেবক। দিন ও দুনিয়া সব কিছু্র সমন্বয় ঘটেছিল তার ভেতর। আমাকে তিনি নানা বলে ডাকতেন। একদিন এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমার নানার নাম আবদুল হামীদ এ কারণে আপনাকে নানা ডাকি।
মাওলনা উবায়দুর রহমান খান নদভী বলেন, মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ সা. এর পর দুনিয়াতে মোকাম্মাল দায়ী এসেছেন মাত্র ১৩০ থেকে ১৫০ জন। এদের মধ্যে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য হলেন মাওলানা মুহিউদ্দীন খান। আমি তার দীর্ঘ সাহচর্যে ছিলাম। তার আতিথেয়তা এবং আপন করে নেয়ার মানসিকতা ছিল চমৎকার। তিনি বলেন, মাঝে মাঝে খান সাহেব বলতেন আজ বাসায় চলো মাইর আছে। গিয়ে দেখলাম অনেক খাওয়া দাওয়ার আয়োজন হয়েছে।
মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন বলেন, মাওলানা মুহিউদ্দীন খান আমাকে একটি পরামর্শ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, দরস রেখে পুরো এক বছর লেখালেখি করেন। অনেক ফায়দা হবে। আমার জীবনের প্রথম লেখা মুসলিম জাহানে খান সাহেবই ছেপেছেন। জীবনের প্রথম বই তাকে দিলে চুমা খেলেন এবং বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরলেন।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করি তাদের ইলম থাকে না, যাদের ইলম থাকে তারা রাজনীতি করে না। খান সাহেবের মধ্যে ইলম এবং রাজনীতি দুটোই ছিল, ইলম ছাড়া কখনো রাজনীতি হয় না।
অনুষ্ঠানে মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রহ. এর পারিবারিক স্মৃতিচারণ করেন তার তিন ছেলে মোস্তফা মুইনুদ্দীন খান, আহমদ বদরুদ্দীন খান ও মোর্তজা খান।
আরআর