সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫ ।। ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১ ।। ১০ রমজান ১৪৪৬

শিরোনাম :
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন আনিসুজ্জামান চৌধুরী বিরতিকে কাজে লাগিয়ে মুসলিম ফুটবলারদের ওমরা পালন ধর্ষণের বিচারে শরয়ি আইন থাকলে, কোন শিশু আর ধর্ষিত হতো না: উলামা-জনতা ঐক্য পরিষদ শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় ঈদে নতুন নোট বিতরণ স্থগিত ধর্ষণ এবং নারীর পরিচয় নিয়ে অবমাননায় ১৫১ আলেমের বিবৃতি ১০ম তারাবির নামাজে তিলাওয়াতের সারমর্ম ত্রাণ বন্ধের পর এবার গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করছে ইসরায়েল তারাবিতে ফাইভ জি স্পিডে তেলাওয়াত করবেন না: আজহারী ‘আলেমদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তোলা জিহাদ নয়, সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

বেফাক অফিস; কী যেন নেই! কে যেন নেই!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হুমায়ুন আইয়ুব
সম্পাদক, আওয়ার ইসলাম

qaumi_bord2শুক্রবার থেকে আজ রবিবার। মৃত্যুর তিনদিন। কবরে দুদিন। মাওলানা আব্দুল জব্বার বেফাকের অফিসে নেই। তিনি বাগেরহাটে। কবরে। আসবে না। আর কখনও আসবে না।

ঢাকা যাত্রবাড়ির কাজলার ভাঙ্গাপ্রেসে দেখা মিলবে না। পাওয়া যাবে না বেফাকের অফিসে। তার চেয়ার শূন্য হয়ে আছে। রুমের দরজাটা বন্ধ। বেফাকের কর্মীরা অফিসে আসছেন। ভাঙামন। চোহারা মলিন।

কেউ কেউ তো মহাসচিবের রুমের পাশে গিয়েই আটকে যাচ্ছেন। চোখ মুছচেন। চোখ বেয়ে জল নেমে আসছে। কাঁদছেন। খোলা জানালা দিয়ে নিরব চোখে মাওলানা আবদুল জব্বারকে আর দেখছেন না। তিনি নেই। ঢাকায় নেই।

মাওলানা আবদুল জব্বারের খাদেম, হাসপাতালে সাথী, অফিস সহকারী শিহাবুদ্দীনও আজ শোকে কাতর। বারবার হুজুরের রুমের আশপাশে ঘুরছে। ককেউকেউ যদি ডেকে বলে, হুজুর ডাকছে…। শি হা…ব বলে ডাকে। না এমন কোন আওয়াজ সে পাচ্ছি না। বেকেউ ডাকছে না। হাউমাউ কেঁদে শিহাব বলল, এতো কষ্ট, এতো বেদনা জীবনে কখনও পায়নি। আমি সাধারণ একজন পিয়নকে সন্তানের মতো ভালবাসা দিয়েছেন তিনি। বাবার দরদ পেয়িছি তার কাছ থেকে। তিনি নেই মনে হলেই নিজেকে আর ধরে রাখতে পারি না।মনের কথাগুলো কাউকে বুঝাতে পারবো না।

মাওলানা আব্দুল জব্বারের ২১ বছরের কর্মজীবনের সঙ্গী মাওলানা আবদুল জলিল। তিনি এখন বেফাকের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। অজানা কষ্ট আর পাহারসম ব্যথা বুকে চাপা দিয়ে বলেন, হুজুর ছাড়া অফিসটা খালি খালি লাগছে। তার অনুপস্থিতি সবার মাঝে হাহাকার তৈরি করেছে। অফিসের গেইট দিয়ে আজ ঢোকতেই বুকটা মুছড় দিয়ে ওঠেছে। মহাসচিব সাহেবের রুমের সামনে এসে আটকে গেছি। পা সামনে চলছে না।কষ্টগুলো মনে প্রচণ্ডভর করছে। এমন দরদি অভিভাবক আমরা আর পাবো না। তার স্বপ্ন স্বাদ আর প্রাণ ছিলে বেফাক।তার বাড়িঘরের চিত্র দেখে তো আমি চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি।তিনি বাগেরহাটে থাকলেও আমাদের চেতনার বাতিঘর তিনি। আল্লাহ তাকে জান্নাতের ফয়সালা করুন।

jabbar_kabar

মহাসচিবের সঙ্গে ছায়ার মতো লেগে থাকা আরেকটি কর্মমুখর মানুষটির নাম মাওলানা আতিকুর রহমান। তিনিও প্রায় একযুগ ধরে আছেন বেফাকের পরিদর্শক হিসাবে। আজ তার মন প্রচণ্ড ভাঙা। বুকের কষ্টগুলো কাউকে বলতে পারছেন না। তিনি বলেন, বেফাকের প্রতিটি ধুলিকণার সঙ্গে জুড়ে আছে মাওলানা আবদুল জব্বারের স্মৃতি। মহাসচিবের তালাবদ্ধ ‍রুমের সামনে দাঁড়িয়েই কাঁদছেন। ভেতরের মানুষটির জন্য কাঁদছেন।

মাওলানা আতিকুর রহমান বলেন, রত্নতুল্য এই মানুষটি আমাদের সুখ দুখ বুঝতেন। এখন আমরা অভিভাবক হারা। হুজুরের চেয়ার খালি পড়ে আছে। চারদিকে শুধুই হাহাকার। সবার মনেই আপনজন হারানোর চাপাকষ্ট।অফিস চলছে তবে প্রাণ নেই।কী যেন নেই! কে যেন নেই!

মাওলানা আব্দুল জব্বারের আরেক ভক্তের নাম মুহাম্মদ রফিকুল হক। তিনিও দীর্ঘ ২০ বছরের কর্মজীবনের সাক্ষী। মাওলানা আব্দুল জব্বারের আদর সোহাগে বড় হয়েছেন। আজ অফিসে এসে বিশ্বাসই করছেন না মাওলানা আব্দুল জব্বার অফিসে নেই। তিনি বার বার গেইটের দিকে তাকিয়ে আছেন, মনে বড় আগ্রহ হুজুর আসবেন। আসবেন আমাদের মাঝে। মাওলানা আব্দুল জব্বারেরেএই অনুপস্থিতি তাকে বড় কষ্টে ফেলে দিয়েছে। মুহাম্মদ রফিকুল হক বললেন, বাগেরহাটে রেখে যখন আসছি বুক ফেটে যাচ্ছিল। গাড়ি যতই আগাচ্ছে মন ততই ভারি হয়ে যাচ্ছে। আজ তিনি নেই,চারদিকে শুধু বেদনার সুর বাজছে।

জনাব রজব আলী। প্রসাশন বিভাগের একজন অফিস সহকারী। অনেকটা কাছে থেকে দেখেছেন মাওলানা আবদুল জব্বারকে। তিনিও আজ বিচলিত। ব্যথিত। মনের ভেতরে শূন্যতা। নেই! কী যেন নেই! কে যেন নেই!

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ