এম ওমর ফারুক আজাদ, ফটিকছড়ি থেকে

সরেজমিনে দেখা গেছে, মরিচা ধরছে রেলিংয়ে। পিলারগুলো নড়বড়ে হয়ে গেছে, এমনকি সিএনজি ও অটোরিকশা চলাচলের সময়ও সেতু দোলে উঠে। তার পরও এ সেতু দিয়ে দিনে কয়েক'শ যানবাহন চলাচল করে বলে জানান স্থানীয় লোকজন। সওজ ফটিকছড়ি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৩৭ সালে ৪৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। তখন থেকে পাঁচ টনের বেশি ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন কয়েক শ যানবাহন চলাচল করত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদারদের বোমার আঘাতে সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন সাময়িক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে সেতুটি সংস্কার করা হয়।
সেতু দিয়ে চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক আবুল কালাম জানান, বিকল্প সড়ক দূরে হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন কয়েক শ যানবাহন এ সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করছে। নাজিরহাট বাজারে সহজে যাতায়াতের জন্য সেতুটির পাশে আরেকটি সেতু দরকার।
চাঁদের গাড়ির চালক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুর ওপরে মালবোঝাই গাড়ি উঠলেই এটি দোলনার মতো দুলতে থাকে। তখন দোয়া-দরুদ পড়তে থাকি।’

নাজিরহাট ডিগ্রি কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান বলেন, হাটহাজারী ও ফটিকছড়ি উপজেলার হাজার হাজার শিক্ষার্থী এ সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে। ঝুঁকি জেনেও তারা এ পথে চলাচল করছে। কারণ, বিকল্প কোনো পথ নেই। সওজ ফটিকছড়ি কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শফিউল্লাহ খান আওয়ার ইসলামকে বলেন, সেতুটির দুরবস্থার কথা জানিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে, তবে এটি সংস্কারের কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই।
ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল আলম বাবু জানান, এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। এখানে আরেকটি সেতু নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ফটিকছড়ি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান, আওয়ামিলীগ নেতা এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম জানান, নাজিরহাট পুরাতন সেতুটির নিকটবর্তী স্থানে আরেকটি সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পর্যবেক্ষক দল এলাকা পরিদর্শন করেছে। দ্রুত সেখানে আরেকটি সেতু নির্মাণ করার প্রক্রিয়া চলছে।
এফএফ