আওয়ার ইসলাম: এ বছর জালিয়াতির করে ৭৫১ জনকে হজে পাঠানোর চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। অনলাইনে প্রাক নিবন্ধন ও নিবন্ধন ছাড়াই এই হজযাত্রীদের হজে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। সৌদি আরবের হজ মন্ত্রণালয়ের অনলাইন ডাটাবেজে এই হজযাত্রীদের তথ্য থাকলেও বাংলাদেশে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আইটি ফার্মের ডাটাবেজে এই হজযাত্রীদের কোনো তথ্য নেই। সৌদি আরবের আইটি ফার্ম ‘সিজেল টেক’ বাংলাদেশের আইটি ফার্ম ‘বিজনেস অটোমেশন’কে জালিয়াতির মাধ্যমে পাঠানো এই হজযাত্রীদের তালিকা দিয়েছে।
অনলাইনে প্রথমে প্রাক নিবন্ধন ও পরে হজ প্যাকেজের সমুদয় টাকা জমার মাধ্যমে মূল নিবন্ধনের দুইটি ধাপ অতিক্রম করার পর এ বছর হজযাত্রী পাঠানো হয়েছে। তিন সদস্যদের একটি কমিটির মাধ্যমে অনলাইন ডাটা মিলিয়ে হজ অফিসের পরিচালকের ডিও ইস্যুর ভিত্তিতে সৌদি দূতাবাস ভিসা ইস্যু করে। এত কিছুর পরও কিভাবে এ ধরনের জালিয়াতির ঘটনা ঘটল তা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা বিস্মিত। পুলিশ কিয়ারেন্স ছাড়া এই হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন হওয়াসহ পুরো হজে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের অনিয়ম ও জালিয়াতি ঘটেছে এবং সঙ্ঘবদ্ধভাবে এই কাজটি করা হেেয়ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সি ছাড়াও হজ অফিসের পরিচালক ও আইটি ফার্ম এর দায় এড়াতে পারেন না বলে হাব নেতারা মনে করছেন। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অনলাইনে হজযাত্রী নিবন্ধন প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলেও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
জালিয়াতির বিষয়টি নজরে আসার পর ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব হাফিজুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যদের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বিষয়টি তদন্ত করার পর যারাই এই জালিয়াতির জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ধর্মসচিব মো: আব্দুল জলিল।
গতকাল সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে মিডিয়ার সঙ্গে কথোপকথনে বলেন, আমাদের কাছে বিজনেস অটোমেশনই ৭৫১ জনের একটি তালিকা দিয়ে বলেছে, এরা হজে গেছেন অথচ এদের তালিকা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অনলাইন সার্ভারের কোথাও নেই। এখানে কমবেশি যে অনিয়ম হয়েছে সেটা মনে হচ্ছে। এ জন্যই তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। আশা করছি তারা ৮-১০দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেবেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয়, হাবসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হজের সময়ই সৌদি আরবে জেদ্দা হজ টার্মিনালের বাংলাদেশ প্লাজা ও মক্কা হজ মিশনেই প্রথমে নজরে আসে জালিয়াতির মাধ্যমে হজযাত্রী যাওয়ার বিষয়টি। কিছু হজযাত্রী চিকিৎসার জন্য গেলে বাংলাদেশের আইটি সার্ভারে তাদের ডাটা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ধরনের একাধিক ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে হজ মিশনে কানাঘুষা শুরু হয়। বিষয়টি হাব নেতাদেরও নজরে আসে। পরে জানা যায়, সৌদি আরবের আইটি ফার্মও তাদের সার্ভারে বাংলাদেশী কিছু হাজীর নাম ও তথ্য সৌদি মোয়াল্লেমের তালিকায় কোথাও খুঁজে পাচ্ছিল না। এ ধরনের হাজীদের একটি তালিকা তৈরি করে পরে তারা বাংলাদেশের আইটি ফার্ম বিজনেস অটোমেশনকে দেয়। বিষয়টি প্রথমে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা হয়। হাব নেতারা দেশে ফেরার পর ধর্মসচিবের সাথে দেখা করে বিষয়টি তাকে অবহিত করেন। পরে হাব নেতারা বিষয়টি তদন্তের জন্য ধর্মসচিবকে চিঠি দেন। পরে ধর্মসচিব বিজনেস অটোমেশনের কাছে তালিকা চাইলে বিজনেস অটোমেশন তালিকা সরবরাহ করে। তারপরই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
আরআর