শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

কানাডায় পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

hasinaআওয়ার ইসলাম: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর আমন্ত্রণে চার দিনের সরকারি সফরে কানাডা গেছেন। আজ শুক্রবার কানাডার মন্ট্রিলে অনুষ্ঠেয় ফিফথ রিপ্লেনিসমেন্ট কনফারেন্স অব দ্য গ্লোবাল ফান্ড (জিএফ) সম্মেলনে তিনি যোগদান করবেন। এতে বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক সংক্রামক ব্যাধি এইডস, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়াকে ২০৩০ সালের মধ্যে নির্মূল করা নিয়ে আলোকপাত করা হবে। ১২ দিনের সফরের দ্বিতীয় পর্যায়ে শেখ হাসিনা ১৮ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে যোগদানের উদ্দেশে আগামী রবিবার যুক্তরাষ্ট্র যাবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। বুধবার লন্ডনের স্থানীয় সময় বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ফ্লাইটটি হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সেখানে লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার তাকে স্বাগত জানান। লন্ডনে ২২ ঘণ্টা যাত্রাবিরতির পর প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এয়ার কানাডার বিমানে মন্ট্রিলের উদ্দেশে যাত্রা করেন। ফ্লাইটটি রাতে মন্ট্রিলের পিয়েরে এলিয়ট ট্রুডো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান কানাডার কেন্দ্রীয় সরকারের একজন মন্ত্রী এবং অটোয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মিজানুর রহমান। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রাসহকারে মন্ট্রিলের হোটেল ওমনি মন্ট-রয়্যাল-এ নিয়ে যাওয়া হয়। কানাডা সফরকালে প্রধানমন্ত্রী এই হোটেলেই অবস্থান করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ১৬ সেপ্টেম্বর মন্ট্রিলের হায়াত রিজেন্সিতে অনুষ্ঠেয় এই রিপ্লেনিসমেন্ট সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন। পরে বিকালে তিনি একই হোটেলে অন্যান্য রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে সম্মেলনের মিনিস্ট্রিয়াল প্লেজিং মোমেন্ট ও আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনায় অংশ নেবেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হায়াত রিজেন্সি মন্ট্রিলে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর আমন্ত্রণে আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন। ১৭  সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা কানাডার প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্ব তহবিলের নির্বাহী পরিচালক মার্ক দাইবালের সঙ্গে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় দিনে সম্মেলনে যোগ দেবেন। একই দিনে তিনি ‘রিমোভিং বেরিয়ার্স টু হেল্্থ থ্রো এম্পাওয়ারিং উইমেন এন্ড গার্লস এন্ড রিচিং দ্য মোস্ট মার্জিনালাইজড’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা-১ এবং ‘এনগেজিং এন্ড মোবিলাইজিং ইয়ুথ টু মিট দ্য সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল্্স’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা-২-এ অংশ  নেবেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী ও কানাডার গভর্নর জেনারেল ডেভিড জনস্টনের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠেয় আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজে তিনি অংশ নেবেন। তিনি পরে সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে যোগদান করবেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কানাডার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন। তিনি অন্যান্য রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে বিশ্ব তহবিল ও গ্লোবাল সিটিজেন আয়োজিত কনসার্টেও অংশ নেবেন।
আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে (মন্ট্রিল সময়) এয়ার কানাডার একটি ফ্লাইটযোগে নিউইয়র্কের উদ্দেশে মন্ট্রিল ত্যাগ করবেন। ফ্লাইটটি নিউইয়র্কের লা গার্ডিয়া বিমানবন্দরে বিকাল ৩টায় (নিউইয়র্ক সময়) পৌঁছার কথা। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন। বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানানোর পর প্রধানমন্ত্রীকে একটি মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে নিউইয়র্কের হোটেল ওয়াল্ডোর্প অস্টোরিয়ায় নিয়ে যাওয়া হবে। নিউইয়র্কে অবস্থানকালে তিনি এ হোটেলেই থাকবেন। শেখ হাসিনা ১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদর দপ্তরে উদ্বাস্তু ও অভিবাসনের ওপর সাধারণ পরিষদের উচ্চপর্যায়ের প্লিনারি বৈঠকে ভাষণ দেবেন। তিনি ৫ ‘গ্লোবাল কমপেক্ট ফর সেফ, রেগুলার এন্ড অর্ডারলি মাইগ্রেশন : টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক এজেন্ডা-২০৩০ এবং অভিবাসীদের মানবাধিকারের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা অর্জন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া বিষয়ক রাউন্ড টেবিল বৈঠকে কো-চেয়ারের দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ২০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনের সাধারণ আলোচনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। তিনি পরে হোটেল ম্যারিয়ট ইস্টসাইডে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে আয়োজিত কাউন্টার টেররিজমের ওপর এশিয়ান লিডার্স ফোরামের বৈঠকে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দপ্তরের কনফারেন্স রুম-২তে সাউথ সাউথ বিষয়ক জাতিসংঘ অফিসে বাংলাদেশ আয়োজিত পাবলিক সার্ভিস  ডেলিভারিতে স্কেলিং আপ ইনোভেশনে সাউথ সাউথ এন্ড ট্রিয়াঙ্গুলার কোঅপারেশন বিষয়ক বৈঠকে যোগ দেবেন। শেখ হাসিনা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আয়োজিত উদ্বাস্তু বিষয়ক বৈঠকে যোগ দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি ২১ সেপ্টেম্বর বারাক ওবামা আয়োজিত এক সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
সুইডিস প্রধানমন্ত্রী স্টেফেন আয়োজিত ডিসেন্ট ওয়ার্ক এন্ড ইক্লুসিভ গ্রোথ বিষয়ক স্যোসাল ডায়ালগ সংক্রান্ত গ্লোবাল ডিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী অংশ নিবেন। তিনি জাতিসংঘ সদর দপ্তরের কনফারেন্স রুম-৮ এ পানি বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের এক প্যানেল বৈঠকে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী একই দিনে বিকালে জেনারেল এসেম্বলি হলে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনের সাধারণ আলোচনায় বক্তব্য রাখবেন। তিনি জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন এর দেয়া এক সম্বর্ধনা সভায় এবং হোটেল ওয়াল্ডোর্প অস্টোরিয়ায় বিজনেস কাউন্সিল অব ইন্টারন্যাশনাল আন্ডার স্ট্যান্ডিং (বিসিআইইউ) আয়োজিত এক ভোজ সভায় যোগ দেবেন। শেখ হাসিনা ২১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে হোটেল গ্রান্ড হায়াতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া এক সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন।
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেয়ার পাশাপাশি মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চি, সুইস প্রেসিডেন্ট জোহান চেনিডার আম্মান এবং কমনওয়েলথ মহাসচিব ও ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্টসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। প্রধানমন্ত্রী ২২ সেপ্টেম্বর সড়ক পথে ভার্জিনিয়ার উদ্দেশে নিউইয়র্ক ত্যাগ করবেন এবং ২৫ সেপ্টেম্বর আমিরেট্স এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে দেশের উদ্দেশে ওয়াশিংটন ডিসি’র ডালেস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট ত্যাগ করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর বিকালে দুবাই হয়ে দেশে ফিরবেন।
এদিকে গত বুধবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, তিন বাহিনীর প্রধান, আইজিপি, ডিপ্লোম্যাটিক কোরের ডিন ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ।
সূত্র: ইত্তেফাক


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ