এম ওমর ফারুক আজাদ, ফটিকছড়ি : ফটিকছড়ির দুই ব্যক্তির মুঠোফোনের কথোপকথনের অডিও রেকর্ডের একটি অংশ ‘ক্যানে চ-ল-র’ এখন দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের মুখেও শোভা পাচ্ছে এ ডায়লগটি।
মধ্যপ্রাচ্যের আরব আমিরাতে বসবাস করা চট্টগ্রামের লোকদের কাছ থেকে এ ডায়লগটি শুনে চীনের এক তরুনীকেও বলতে শোনা যাচ্ছে; যা ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। মোস্তফা নামক এক ওমান প্রবাসী জানান, এমনকি ওমানের কিছু কিছু নাগরিক বাঙ্গালিদের দেখলেই বলে উঠছে ‘ক্যানে চ-ল-র’!
চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার সংলাপটি মূলত ফটিকছড়ি উপজেলা বারৈয়ারহাট এলাকা থেকে সৃষ্ট। এ সংলাপে উসকানি দেওয়া বক্তব্যে-অাছে কৌতুহল, আছে ক্রোধ, আছে স্থানীয় দাপট, আছে বিবিরহাটে সারাদিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের কথা, সবশেষে আছে গালাগাল। সব মিলিয়ে দারুণ উপভোগ্য এই ‘ক্যানে চ-ল-র’ সংলাপ। দুই মিনিটের কাছাকাছি অডিও ক্লিপটির ‘অ ভাই ক্যানে চলর ’ এটা বর্তমানে ভাইরাল হওয়া একটা ডায়লগ। যা মানুষ মজা নেয়ার জন্য শুনছে, শেয়ার করছে, একে অপরকে বলছে। সবার মুখে মুখে এখন একটি ডায়লগ ‘ক্যানে চ-ল-র’।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রাজীব নন্দী সংলাপটি প্রসঙ্গে বলেন, ‘গণসমাজের অধিবাসীদের কতগুলি যৌথ আচরণের প্রবণতার কথা বলা হয়েছে সমাজবিজ্ঞানে। যে আচরণকে বলা হয় গণআচরণ। গণআচরণের অনেকগুলো ধাপ আছে। যেমন: গুজব, হুজুগ, উন্মাদনা আর গণবিকার। এই গণবিকার হলো একধরণের ভাবাবেগযুক্ত আচরণ যার মধ্যে বুদ্ধি বা যুক্তির সম্পর্ক নেই। এই আচরণ একসঙ্গে বহু লোকের মধ্যে প্রত্যক্ষ করা যায়। ভাবাবেগে গা ভাসিয়ে দিয়ে মানুষ এই গণবিকারগ্রস্ততায় ভোগে । এটা গণআচরণেরই অংশ। এটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তার কিছু নেই। এই ‘কেনে চলর’ এক ধরণের গণবিকার। যা সমাজে বেশিদিন স্থায়ী হয় না। নতুন আরো একটা বাজারে আসলে পুরাতনটা তার জায়গা ছেড়ে দেয়, এক সময় ‘ক্যানে চ-ল-র’ও জায়গা ছেড়ে দিবে। যেভাবে জায়গা ছেড়ে দিয়েছিল ‘সাইফুল বোতল ফ্যাক্টরি’।’
এফএফ