রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪ ।। ২৫ কার্তিক ১৪৩১ ।। ৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


মোবাইলে আরবি দুআই কাল হলো তাদের!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

mobile2আওয়ার ইসলাম: সাপ্তাহিক ছুটিতে তিন ভাই-বোন যাচ্ছিলেন বিমানে করে ইউরোপে। কিন্তু বিপত্তি বাঁধায় তাদের ফোনে থাকা আরবি দোয়া। যাত্রা যেন নিরাপদ হয়, এ জন্য মোবাইলে সেই দোয়া শুনলেন এক বোন, এই কথা বিমানেরই অন্য এক যাত্রী জানিয়ে দিল কর্তৃপক্ষকে। ফলাফল হিসেবে, আইএস-এর সদস্য সন্দেহে তিনজনকেই পড়তে হয় দীর্ঘ জেরার মুখে।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এমনই একটি অভিজ্ঞতার কথা ইন্ডিয়ান বংশভূত মুসলিম মেয়ে সাকিনা ধরাস (২৪) তার ফেসবুকে প্রোফাইলে শেয়ার করেছেন। পরে বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে গার্ডিয়ান থেকে শুরু করে বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক সংবাদ মাধ্যম।

সাকিনা ধরাস তার প্রোফাইলে লিখেছেন, তারা উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের বসবাস করে। সাপ্তাহিক ছুটি কাটাতেতারা তিন ভাই-বোন (সে, মারিয়ম ধরাস (১৯) ও আলি ধরাস (২১)) লন্ডন থেকে ইউরোপ যাচ্ছিল। কাস্টম বিভাগের চেক-আপ শেষ করে তারা মাত্র নির্দিষ্ট আসনে গিয়ে বসে। ঠিক তখনই একজন কেবিন ক্রু বা বিমানসেবিকা এসে তাদের আঙুল দিয়ে ইশারা করে উঠে যেতে বলে। প্রথমে সাকিনা ধরাস মনে করেছিল শুধু তাকেই ডাকা হচ্ছে। কিন্তু পরবর্তীতে ইশারা করা হয় তাদের তিনজনকেই।

সাকিনা ধরাস অভিযোগ করেন, এরপর তাদের প্লেন থেকে নামিয়ে আনা হয়। টারম্যাকেই তাদের তিনজনকে দীর্ঘক্ষণ ধরে জেরা করতে থাকে ব্রিটিশ পুলিশ। তাদের অপরাধ বা জেরা করার কারণ জানতে চাইলে তাদের বলা হয়, কোনো এক যাত্রী অভিযোগ করেছে, ‘তারা ‘আইএস-এর সদস্য’ হতে পারে। কারণ এই তিনজনের মোবাইলে আরবি শব্দ শুনেছে এবং আরবিতে কথা বলতে শুনেছে’।
গত সপ্তাহে লন্ডন স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দর থেকে ইজিজেটের ফ্লাইটে ইতালির নেপলে যাচ্ছিলেন এই তিন ভাইবোন। দুই বোনের পরনেই হিজাব ছিল। অভিযোগ, কোনওরকম কারণ না দর্শিয়েই বিমানসেবিকারা তাদের প্লেন থেকে নেমে যেতে বলেন। এরপর তাদের ঘণ্টাখানেক ধরে জেরা করে ব্রিটিশ পুলিশ।

সাকিনা জানান, প্রথমেই বলা হয় আপনারা কি ইংরেজি বলতে পারেন? এর পরেই তাদের জানানো হয়, এক যাত্রী অভিযোগ করেছেন আপনারা তিন জন আইসিসের সদস্য। নিজেদের মধ্যে আরবিতে কথা বলছিলেন। আপনাদের ফোনে আল্লাহর স্তুতিও শুনেছেন সহযাত্রীরা।
প্রত্যুত্তরে তিন জনই জানান, এটা কোরানেরই অংশ। আমাদের ধর্মগ্রন্থ থেকে উল্লিখিত। তার মানে এই নয়, আমরা আইসিসের সমর্থক।
এরপর তাদের বাড়ির ঠিকানা জানা ছাড়াও ব্যক্তিগত জীবন নয়ে নানা প্রশ্ন করা হতে থাকে। বাবা কী করেন? তারা কোথায় কাজ করেন? সোশ্যাল নেটওয়ার্কিও সাইটে তারা কী করেন, তা-ও খতিয়ে দেখা হয়।

এ ভাবে জেরার জন্য পরে যদিও পুলিশ আধিকারিকরা দুঃখ প্রকাশ করেন। কর্তব্যের খাতিরেই নাকি জেরা করতে বাধ্য হয়েছেন। নিজের ফেসবুক পোস্টে গোট ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন সাকিনা। পরে যদিও ওই প্লেনেই তারা নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছেছেন।
সকিনা তার পোষ্টে আরো লিখেছেন, ‘অন্য কারো সাথে যদি এ ধরনের ঘটণা ঘটে, তাই জেনে রাখার জন্য বিষয়টি শেয়ার করলাম।’ কিন্তু এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ভারতে নিন্দার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।

দেশটির কিছু গণমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, ‘আরবি কি শুধু আইএস বা তাদের সমর্থকদেরই মুখের ভাষা? হিজাব পরলেই কি যে কেউ আইএসের লোক হয়ে যায়’?

সূত্র: আমাদেরসময়.কম


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ