লুতফে রাব্বি আফনান
২১ আগস্ট ১৯৬৯...!!
ঘুমন্ত ইতিহাস...!!!
৪৭ বছর এর ঘুম...!!!
`...যেদিন মসজিদে আকসায় আগুন দেয়া হলো, আমি উৎকন্ঠায় সারারাত ঘুমাইনি। ভেবেছিলাম ইজরাঈল বুঝি নিশ্চিহৃ হয়ে যাবে!
কিন্তু যখন সকাল হলো তখন বুঝেছি, আরবরা এখনো গভীর ঘুমে...!!'
২১ আগস্ট ১৯৬৯ মসজিদে আকসায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটানোর পর তৎকালীন আরব সরকারগুলোর প্রতিক্রিয়া দেখে সাবেক ইজরাইলি প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মেইর উক্ত মন্তব্য করেছিল।
ওই দিন সকালে কট্টরপন্থী অস্ট্রেলীয় পর্যটক মাইকেল ডিন্স রোহন পবিত্র আকসায় প্রবেশ করে সরাসরি কেবলার দিকে যায়। (তখন অমুসলিমদের সে অংশে প্রবেশের অনুমতি ছিল) । এবং সাথে নিয়ে আসা দাহ্য পদার্থ মসজিদের মেহরাব, মিম্বারসহ আশেপাশে ফেলে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায়।
মুহূর্তে আগুন কেবলাসহ পুরো দক্ষিণাংশে ছড়িয়ে পড়ে। মসজিদে উমর, মাকামে আরবাঈন, মিহরাবে যাকারিয়াতেও আগুন পৌঁছে যায়। ফায়ার ব্রিগেড ইচ্ছাকৃতভাবে দেরিতে আসায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেক দেরি হয়। কারণ তখন মসজিদে পানি সরবরাহ বন্ধ রেখে ছিল ইহুদি সরকার।
ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে মসজিদে কিবলীর রুপার তৈরি গুম্বুজ- য়াল ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পাশাপাশি ইতিহাস থেকে হারিয়ে যায় অমূল্য কিছু রত্ন..
এর মধ্যে অন্যতম ‘নুরুদ্দিন জংগির মিম্বার..’
যা তিনি আকসা জয়ের স্বপ্ন নিয়ে বানিয়েছিলেন। পরে সালাহুদ্দিন আইয়ুবি তা আকসায় স্থাপন করেছিলেন।
দীর্ঘ এক হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী মিম্বারের সামান্য বাদে সবই ভষ্মিভূত হয়ে যায় অভিশপ্ত আগুনে...।
এছাড়াও স্বর্ণমোড়ানো জিপ্সি কাঠের ছাদ, ৪৮ টি জানালা, লন্ঠন, কার্পেটসহ অসংখ্য মূল্যবান জিনিস পুড়ে যায়।
এক বছর পর ইজরাইলি সরকার মাইকেল রোহনকে গ্রেফতার করে ও তাকে মানসিক রোগী আখ্যা দিয়ে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়।
মসজিদে আকসার ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মুসলিম বিশ্বে তেমন কোন প্রতিবাদই হয়নি।
এর পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে ‘আকসা একাডেমি’র পরিচালক নাজেহ বুকাইরাত বলেন, ‘১৯৬৭ তে ইজরাইলি বাহিনীর হাতে আরব বাহিনীর পরাজয় ও পুরা ফিলিস্তিন দখল করে নেয়ায় আরবরা মানসিকভাবে পর্যদুস্ত ছিল। তাই প্রতিবাদের মত অবস্থা তাদের ছিল না..।’
আরআর