সোহেল নওরোজ : প্রেম বা ভালোবাসা- আমরা যাই বলি না কেন, ক্রমেই যেন প্রদর্শনের বিষয় হয়ে উঠছে! আমি কতটা ভালোবাসি- এটা মানুষের সামনে কীভাবে প্রদর্শন করা যায়, তার একটা নীরব (বুঝুন সরব) প্রতিযোগিতা প্রায়ই লক্ষ্য করি। সভ্যতা-ভব্যতা না জানলে যা হয়। কিংবা মনের চেয়ে শরীরের সংস্রব বেড়ে গেলে যেমনটা হয়। আমরা লজ্জায় চোখ তুলতে না পারলেও তাদের কিছু আসে যায় না। হোক সে সম্পর্ক প্রণয় বা পরিণতির, তাই বলে ন্যূনতম লজ্জাবোধটুকু থাকবে না। কোনটা কোথায় করা উচিৎ বুঝবে না? অস্বীকার করছি না, এটা তাদের স্বাধীনতা। কিন্তু সেই স্বাধীনতা চর্চার সীমানা থাকবে না?
লুকিয়ে প্রেমপত্র লেখার সময় শেষ। মুঠোফোন মুঠোর মধ্যে এনে দিয়েছে আবেগ-অনুভূতিকে। দেদারসে প্রচারণা-প্রতারণা চলছে এর মাধ্যমে। তবে প্রযুক্তির এই মাধ্যমটিকে দোষ দিয়ে নিজেদের দায় আড়াল করতে চাই না। মাঝেমধ্যে তাজ্জব বনে যাই। পাবলিক প্লেসে, শিশু-কিশোর-মুরুব্বীদের চোখের সামনে প্রেমিক যুগলের আচরণে। চারপাশের মন্তব্য তাদের কান অবধি পৌঁছে না, নয়তো তারা তাদের চারপাশের কাউকে দেখতে পায় না। আগে বাংলা সিনেমায় ‘লাজ-লজ্জার মাথা খেয়েছিস’ ডায়ালগ শুনতে পেতাম। মাথা কীভাবে খায় পরিচালক দেখাতো না। এখন প্রায়ই দেখি। পরিচালকের দরকার পড়ে না।
আমি বর্তমানের চেয়ে আগামী নিয়ে বেশি শঙ্কিত। যদি এসব সম্পর্ক পরিণতিতে গড়ায়, তবে কতদিন টিকবে? ঘরের ভেতরের বোঝাপড়া কি ঠিক থাকবে? যদি ঠিক থাকে, তবে এদের সন্তানদের এরা কী শেখাবে? আমরা বড়জোর পাবলিক প্লেসে ধূমপান না করার অনুরোধ করতে পারি, কিন্তু প্রেমর মোড়কে বেহায়াপনা আর আদিখ্যেতা প্রদর্শনে বারণ করবো কীভাবে? সে অধিকার আমার বা আপনার নেই। ভঙ্গুর আর আত্মমগ্ন পরিবার পরিমিতবোধের শিক্ষা দেয় না। আফসোস! আমরা কোথায় যাচ্ছি? কোন দিকে চলছি?
এফএফ