সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকে লন্ডন মহানগরের সীরাত সম্মেলন অনুষ্ঠিত ‘শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ ছিল দেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ’ ২৪ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে ইসলামী আলোচক আব্দুল হাই মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ প্রকাশিত হচ্ছে আল্লামা মাহমুদুল হাসানের ‘হাসানুল ফতোয়া’ তাড়াইলে মাদক-জুয়া ও অনৈতিক কার্যকলাপের প্রতিবাদে আলেমদের সমাবেশ নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে, দ্রুতই রোডম্যাপ : ড. ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পূর্ণাঙ্গ ভাষণ যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শনিবার বাংলাদেশ সফরে এলেন দেওবন্দের উস্তাদ মুফতি ফখরুল ইসলাম এলাহাবাদী আগামীকাল শরীফগঞ্জে আসছেন সাইয়েদ আরশাদ মাদানী

ডেঙ্গু হলে যেসব খাবার খাবেন


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বর এক মহা আতঙ্কের নাম। ভয়াবহ গতিতে ছড়াচ্ছে এই রোগ। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বেশি। তবে সঠিক সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে খুব সহজেই ডেঙ্গু জ্বর ভালো হয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসা নিতে দেরি করলে বিপদের আশঙ্কা থাকে।

ডেঙ্গু জ্বরে বাড়ির স্বাভাবিক খাবারগুলোই একটু ভিন্নভাবে খেতে হবে। ডেঙ্গু জ্বর ব্যবস্থাপনায় তরল খাবারের ওপর বেশি জোর দিতে হবে। কারণ, কৈশিক জালিকা ক্ষতিগ্রস্ত হলে রক্ত থেকে প্লাজমা বা রক্তরস বের হয়ে যায়। ফলে রক্তচাপ কমে যায়, যা রোগীর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। রক্তরসের এই ঘাটতি পূরণ করতে বেশি বেশি তরল খেতে হবে। সব মিলিয়ে সারা দিনে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষকে তিন থেকে চার লিটার বা তারও বেশি পরিমাণে তরল বা তরল-জাতীয় খাবার খেতে হবে। রোগী যদি মুখে খেতে না পারে, তাহলে স্যালাইনের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করাতে হবে।

ডেঙ্গুতে যেহেতু অস্থিমজ্জা আক্রান্ত হয়, তাই এর স্বাভাবিক কাজ ত্বরান্বিত করে এমন খাবার তালিকায় রাখতে হবে। অস্থিমজ্জার জন্য সাহায্যকারী খাদ্য উপাদান হচ্ছে প্রোটিন, ভিটামিন বি১২, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন সি, আয়রন, ভিটামিন ডি, জিংক, ফসফরাস ইত্যাদি। ডিম, সামুদ্রিক মাছ, ব্রোকলি, ফুলকপি, ক্যাপসিকাম, পালংশাক, বাদাম, বিট, মটরশুঁটি, কলা, তরমুজ, পেঁপে, লেবু, মাল্টা ইত্যাদি এসব খাদ্য উপাদানের ভালো উৎস। ফলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন বি১২ প্লাটিলেট তৈরি করতে সহায়তা করে।

চিকেন ভেজিটেবল স্যুপ
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর জন্য উপাদেয় খাবার চিকেন ভেজিটেবল স্যুপ। সবজি হিসেবে ব্রোকলি, মটরশুঁটি, ক্যাপসিকাম এবং বিট যোগ করতে হবে। স্যুপ থেকে ভিটামিন বি১২, ফলিক অ্যাসিড, আয়রন, জিংক, প্রোটিন ও ভিটামিন সি পাওয়া যায়। এই স্যুপ শরীরে তরল পদার্থের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি, অ্যান্টিবডি তৈরিতে সহায়তা করবে এবং শরীরে শক্তি জোগাবে। তবে স্যুপে মসলার ব্যবহার কমাতে হবে।

টক দই
টক দই একদিকে আপনার শরীরে তরলের ভারসাম্য রক্ষা করবে, অন্যদিকে এটি প্রোবায়োটিক হিসেবে কাজ করে পরিপাকতন্ত্রের ক্ষমতা বাড়াবে। ফলে শরীরে পুষ্টির উপাদানের শোষণক্ষমতা বেড়ে যাবে। শরীর ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা পাবে। 

পেঁপের জুস
পেঁপের জুস ভিটামিন বি১২ এবং ফলিক অ্যাসিডের ভালো উৎস। এটি অণুচক্রিকা উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই প্রতিদিন অন্তত ৫০০ মিলিলিটার পেঁপের জুস খেতে হবে। 

ভাতের মাড়
ভিটামিন বি-এর উৎস হিসেবে ভাতের মাড় খুবই উপযোগী খাবার। এর সঙ্গে কিছু সেদ্ধ সবজি এবং একটু লেবুর রস যোগ করলে এর গুণাগুণ আরও বেড়ে যায়। ডেঙ্গু রোগীকে ভাতের মাড় খাওয়ালে শরীরে পুষ্টির চাহিদা মিটবে আবার তরলের ভারসাম্যও বজায় থাকবে। 

জাম্বুরার জুস
জাম্বুরা ভিটামিন সি ও পটাশিয়ামের বেশ ভালো উৎস। শরীরে প্লাজমার সঙ্গে পটাশিয়াম বের হয়ে যায়। এর ঘাটতি পূরণ করতে জাম্বুরার জুস অত্যন্ত কার্যকরী। সঙ্গে ভিটামিন এ, বি ও সি পাওয়া যায়। 

আনারের জুস
অস্থিমজ্জার কর্মক্ষমতা বাড়াতে আয়রন, ভিটামিন বি এবং ফসফরাসের প্রয়োজন হয়। সবগুলো উপাদান আছে আনারের জুসে। সঙ্গে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফোলেট, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন কে। আনারের জুস অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি হিসেবে 
কাজ করে।

নরমাল স্যালাইন
প্যাকেটজাত ওরস্যালাইন সঠিক নিয়মে আধা লিটার পানিতে গুলিয়ে খেতে হবে। এতে ইলেকট্রোলাইটসের ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি তরলের ভারসাম্য রক্ষা হবে। 

কচি ডাবের পানি
কচি ডাবের পানি সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও অন্যান্য ইলেকট্রোলাইটসের ভালো উৎস। এটিও ইলেকট্রোলাইটসের ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি তরলের ভারসাম্য রক্ষা করে।

কোন খাবার খাওয়া যাবে না -
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর অতিরিক্ত মসলাদার খাবার ও ভাজাপোড়া খাওয়া যাবে না। এসব খাবার রোগীকে শকের দিকে নিয়ে যায়। এই খাবারগুলো হজমের জন্য অনেক পানির প্রয়োজন হয়। এ সময়ে শরীরে এমনিতেই পানির ঘাটতি থাকে। এর মধ্যে যদি খাবার হজম করতে অতিরিক্ত পানি প্রয়োজন হয়, তখন রক্তচাপ আরও কমে যেতে পারে, যা রোগীর জন্য বিপজ্জনক। তাই এসব খাবার একেবারেই খাওয়া যাবে না।

মো.ইকবাল হোসেন, সিনিয়র পুষ্টি কর্মকর্তা,চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল।

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ