টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে গভীর রাতে ঘুমন্ত তাবলীগী সাথীদের উপর খুনি সাদপন্থী কর্তৃক বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যার দ্রুত বিচারের দাবিতে তাবলীগী জামাত ও তাওহিদী জনতা জামালপুর জেলা আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ফৌজদারী মোড়ে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানবন্ধন শেষে তাবলীগ জামাত ও তৌহিদী জনতার জামালপুর জেলা আহবায়ক মুফতী শামসুদ্দীন স্বাক্ষরিত প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, ধর্ম উপদেষ্টা, জামালপুর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর একটি স্মারকলিপিতে প্রদান করা হয়েছে।
মুফতী ফরীদ উদ্দীন ও মুফতি আলাউদ্দীনের সঞ্চালনায় মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন মুফতী শারফুদীন, মুফতী মনিরুল ইসলাম, মুফতী আবুল্লাহ, মাওঃ আবুল কাশেম, মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাওলানা মাসউদ হোসাইন, মাওলানা হাসান আলী, মাওলানা আমানুল্লাহ কাসেমী, মাওঃ মেরাজুর বহমান, মুফতি মোস্তফা কামাল, মাওলানা ইমাম হোসেন, মুফতি সোলাইন প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে জানায়, দাওয়াত ও তাবলীগের কার্যক্রম সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ। আজ থেকে প্রায় শত বছর যাবত দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসাসহ হাজারো ওলামায়ে কেরামের রাত দিন মেহনতের বিনিমে সমগ্র বিশ্বে তাবলীগ জামাতের কাজ পরিচালিত হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ একটি দ্বীনি কাজ এই কাজটি অনেক দিন যাবৎ ধরেই শান্তিপুর্নকাটব পরিচলিত হচ্ছিল। এর মধ্যেই জনাব সাদ সাহেব সে নিজেকে নিজেই একক আমির দাবি করে এবং ইহুদী-নাসারাদের চক্রান্তে ইসলাম পরিপন্থী কিছু বক্তব্য দিতে থাকে, যা কুরআন-হাদীসের পরিপন্থী। যার ফলে সারা বিশ্বে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। আর এই বিশৃঙ্খলার মূলহতা হলেন মাওলানা সাদ সাহেব ও তার অন্ধ বিশ্বাসী কিছু লোক। যাদের কাজ হল বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা। যার প্রমাণ হলো গত ২০১৮ইং সালে বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে প্রবেশ করে অনেককে শহীদ ও হাজারও তাবলীগের সাথীকে আহত করেছিল এবং ১৭ ডিসেম্বর ২৪ইং দিন গত রাতে প্রায় ৪০,০০০ (চল্লিশ) হাজার সাদপন্থী সন্ত্রাসীরা রাত ৩/৪ টার সময় সন্ত্রাসী কায়দায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে টংগি বিশ ইজতেমার ময়দানে গেট ও দেওয়াল ভেঙ্গে প্রবেশ করে নিরীহ, ঘুমন্ত তাবলীগ জামাতের সাথীদের উপর হামলা করে চারজনকে শহীদ করেছে এবং অনেক নিখোঁজ রয়েছে, শত শত মানুষকে আহত করেছে। যার মধ্যে অনেকে হাসপাতালে ১র্তি অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন, অনেকের জ্ঞান এখনো ফিরে নি, যাহা অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। এবং প্রায় থেকে ৩ কোটি টাকার মালামাল সাদপস্থি সন্ত্রাসীরা লোটপাট করে নিয়ে যায়। সাদপছিরা অধিকাংশই ফেসিস্ট সরকারের ফেসিস্ট বাহিনী ছিল। বিদেশী চক্রান্তের অংশ হিসেবে এ হামলা করেছে। যাহা শান্ত বাংলাদেশকে অশান্ত করা ও বিশ্বের দরবারে শান্ত বাংলাদেশকে অশান্ত প্রমাণ করার জঘন্ন পায়তারা।
এসময় সাদপন্থীদের কার্যক্রম বন্ধ করাসহ মাননীয় উপদেষ্টার নিকট কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে-
১। যে সমস্ত খুনিদের নামে মামলা হয়েছে তাদেরকে ও অজ্ঞাতদেরকে ২৪ (চব্বিশ) ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করে তাদেরকে ফাঁসি দিতে হবে।
২। সারা বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। কারণ মসজিদ হলো পবিত্র স্থান আর তারা হলো খুনী ও সন্ত্রাসী। তাই তারা পবিত্র মসজিদে কোন কাজ করতে পারবে না।
৩। প্রতিটি জেলা থেকে যারা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া টঙ্গীর ময়দানে গিয়ে হামলা ও খুন করেছে তাদের সংখ্যা D.S.B, N.A.C ও D.G.F.I এর মাধ্যমে বাহির করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
৪। এবারের বিশ্ব ইজতেমা ওলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে একটিই হবে। আর কোন অবস্থাতেই মাও: সাদ সাহেব বাংলাদেশে আসতে পারবে না। এবং তাদের কোন ইজতেমা করতে দেওয়া যাবে না।
৫। টঙ্গী ময়দান এবং কাকরাইল মসজিদ উলামায়ে কেরামদের তত্বাবধানে আছে ও থাকবে। কোন অবস্থাতেই সাদপন্থীর কোন সন্ত্রাসী আর কোন দিন টঙ্গী ময়দান এবং কাকরাইল মসজিদে প্রবেশ করতে পারবে না।
৬। জামালপুর জেলা মডেল মসজিদসহ ৭টি থানায় সাদপন্থীর কোন মার্কাজ অথবা কোন লোক মসজিদে বসে কোন আলোচনা বা সবগুজারী করতে পারবে না। করলে ফেতনা সৃষ্টি হবে। আর ফেতনা সৃষ্টি হলে এর দায়ভার সরকারকেই বহন করতে হইবে।
৭। উপরোল্লিখিত দাবিগুলি অতিসত্বর বাস্তবায়ন করার জন্য বর্তমান সরকারের প্রতি বিনয়ের সাথে আহ্বান জানাচ্ছি।
হাআমা/