দেশের বিভিন্ন মেডিকেলে অধ্যয়নরত ৭৭ জন কোরআনের হাফেজকে সংবর্ধনা দিয়েছে মেডিকেল দাওয়াহ সোসাইটি অব বাংলাদেশ। একইসঙ্গে তাদের মধ্য থেকে সিরাত পাঠ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদেরও পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বাংলামোটর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের কাছে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা তুলে ধরার পাশাপাশি মানসম্মত চিকিৎসা প্রদানে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর বৈশিষ্ট্যগুলো পূর্ণ অনুসরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিশিষ্ট ধর্মীয় আলোচক মাওলানা আব্দুল হাই মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
তিনি বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনের প্রতিটি পদচারণা, তার প্রতিটি বাণী হেদায়েতের স্নিগ্ধ কিরণ হয়ে আমাদের আলোকিত করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। তাই সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বেশি করে ছড়িয়ে দিতে হবে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শকে।
ডা. এ বি এম আল আমিনের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রফেসর ডা. সাজেদ আবদুল খালেক, ডা. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, ডা. নুরুল্লাহ, ডা. হাফেজ রেজুয়ানুল হক ও ডা. হাফেজ মাহমুদুল বাশার।
অনুষ্ঠানে মেডিকেল ফিকহের গুরুত্ব, ডাক্তারদের কাছে জনগণের প্রত্যাশা-বাস্তবতা এবং হাসপাতালে মুসলিম রোগীদের ইসলামি কনসেপ্টসহ নানা বিষয়ে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের সাবেক ডিন ও মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সাধারণত সমাজে খুব সাধারণ একটি বিষয়, কিন্তু ধর্মীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে একজন মৃত্যু পথযাত্রী মুসলিম রোগীকে তালকিন (পাশে বসে তাকে শুনিয়ে শুনিয়ে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ) করা। অথচ আইসিইউ বা সিসিইউ বা জেনারেল বেডের কোনো রোগীকে কেউ তালকিন করার নেই। এসব বিষয়ে ডাক্তার নার্স বা ব্রাদারদের কোনো প্রশিক্ষণ বা কোনো হাসপাতালে ধর্মীয় প্রতিনিধি কী আছেন? নেই।
তারা বলেন, ক্যাপসুলে জেলোটিন ব্যবহার হয় এমনকি নানা ধরনের হালাল-হারামের মিশ্রণ হয়। এসব বিষয়ে কি আমাদের কোনো ধারণা আছে? আমরা এই বিষয়গুলো কতটুকু গুরুত্ব দেই? আমার মনে হয় আমাদের কাজ করার অসংখ্য জায়গা এবং প্রয়োজনীয়তা আছে।
অনুষ্ঠানে চিকিৎসকরা বলেন, কোরআন ও চিকিৎসা বিজ্ঞান অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। কোরআন মাজিদ যথাযথভাবে অনুসরণ করলে এখানে নির্দেশনা পাওয়া যাবে।
অনুষ্ঠানে ইসলামি অনুশাসন অনুসরণে চিকিৎসা প্রদানের একটি রূপরেখাও তুলে ধরা হয়। এসময় একজন কোরআনের হাফেজ হিসেবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের অধ্যয়নের পাশাপাশি কোরআনের সার্বজনীন শিক্ষা সবার পৌঁছে দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা।
পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধানের প্রবর্তক হিসেবে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষা মেডিকেল পড়াশোনায় চির প্রাসঙ্গিক উল্লেখ করে এ ধরনের আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন মেডিকেলে অধ্যয়নরত ৭৭ জন হাফেজে কোরআন সংবর্ধনা ও সিরাত পাঠ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের নগদ অর্থ ও উপহার তুলে দেওয়া হয়।
হাআমা/