মাদারীপুর প্রতিনিধি
জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতা অংশগ্রহণ করে অনেকেই আহত-নিহত হয়েছেন। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার সেসব আহত ও নিহত পরিবারকে আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দিচ্ছে। এর পর থেকেই একটি প্রতারক চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সেই চক্রের সদস্যরা অর্থ মন্ত্রণালয় আর পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সেজে এসব পরিবারের কাছ থেকে কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে আন্দোলনে অংশ নেয়া ছাত্র ও ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ দেন। মাদারীপুর জেলা পুলিশও বিষয়টি কঠোরভাবে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
আহত একটি পরিবারের কাছে সরেজমিনে জানা যায়, অনিক বেপারী। মাদারীপুর পৌর শহরের পুরান বাজার এলাকার বাসিন্দা। গেল ১৮ জুলাই মাদারীপুর লেকপাড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে বেশ কয়েকটি গুলি বিদ্ধ হয় তার শরীরে। পরে সদর হাসপাতাল ও ফরিদপুর মেডিকেল কজেল হাসপাতালে দুই দফা অস্ত্র পাচারে কিছুটা সুস্থ্য হয়। এরপর থেকে বাড়িতেই সময় কাটে তার। কিন্তু ২৯ অক্টোবর একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন আসে অনিকের মোবাইলে। যেখানে সেই ব্যক্তি অর্থ মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র, ব্যাংক একাউন্ট, বিকাশ নাম্বার নেয়। এক পর্যায়ে তার কাছে আগে অর্থ পাইয়ে দেয়ার আশ্বাসে কিছু টাকা দাবি করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে সমন্বয়কদের অবহিত করেন অনিক। পরে সদর থানায় সেই নাম্বার দিয়ে অভিযোগ করেন।
আহত অনিক বেপারী বলেন, প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে আমি ও আমার বন্ধুরা মিলে থানায় অভিযোগ করি। থানার অফিসার বিষয়টি বুঝতে পেরে দ্রুত প্রতারককে গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছেন।
আরেকটি প্রতারক চক্র, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত পরিবারের দেয়া হত্যা মামলায় আসামি না করার আশ্বাস দিয়ে পিবিআই কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। তারাও কৌশলে একাধিক শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের কাছে অর্থ দাবি করছে।
থানায় অভিযোগ দেয়া আরেক ভূক্তভোগী নেয়ামত উল্লাহ বলেন, আমার পরিবারের কাছেও পিবিআইয়ের কর্মকর্তা সেজে মোবাইল করেছে। বিষয়টি জানার পরে ঢাকায় সমন্বয়কদের সাথে আলোচনা করেছি। তারা ওই নাম্বারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের কথা বলেছে। আমি সেভাবেই কাজ করেছি।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন ছাত্র আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমরা বিষয়টি উর্ধ্বতন মহলেও জানিয়েছে, তারা প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতারককে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে। আশা রাখি দ্রুতই এর সমাধান হবে।