রংপুর ব্যুরো
শহীদ আবু সাইদ হত্যাকাণ্ডের ফরেনসিক প্রতিবেদন নিয়ে মুখ খুলেছেন রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. রাজিবুল ইসলাম। প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী চিকিৎসক ওই বলেন, শহীদ আবু সাঈদের বুক গুলিতে ঝাঁঝরা ছিল। আমাকে ঢাকা থেকে হুমকি দেয়া হয়েছে- তুমি সরকারি চাকরি করে কিভাবে সরকারের বিপক্ষে এ রিপোর্ট দিতে পারো। আমি রিপোর্ট যখন ফাইনালি দিতে যাই, তার আগে ছয়বার আমাকে রিপোর্ট চেঞ্জ করতে হয়েছিল। তারপরেও তাদের মন মতো হয়নি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ ডা. মাহফুজুর রহমানের অপসারণ ইস্যুতে বিক্ষোভের সময় ফরেনসিক প্রতিবেদন টেম্পারিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
ডা. রাজিবুল বলেন, ‘ওনারা (ডা. মাহফুজসহ উপস্থিত অন্যরা) চেয়েছিলেন- আমি যেন হেড ইনজুরি দিয়ে ইউরেজোনিক শক দেখিয়ে দেই। কিন্তু আমি তাদের চাপের কাছে মাথানত করিনি। আমার রিপোর্টে উল্লেখ আছে- দ্যা ডেড ওয়াজ ডিউ টু এভোব মেনশন ইনজুরিস হুইচ ওয়াজ অ্যান্টিমন্টেম অ্যান্ড হোমিসাইডাল।’
তিনি বলেন, ওই সময় ভাইস প্রিন্সিপাল মাহফুজুর রহমান চার্জে ছিলেন, স্বাচিপের নেতারা ছিলেন। পুলিশ প্রশাসনের লোকজন ছিলেন। তাদের সামনে আমাকে বাধ্য হয়েই রিপোর্টে সাইন করতে হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, আমি প্রচণ্ড চাপে ছিলাম। ওই সময়টা এমন গেছে- আমাকে এটাও ভয় দেখানো হয়েছে আপনার নামে গোয়েন্দা রিপোর্ট হয়ে গেছে ঢাকায়। তারপরেও আমি মাথা নত করিনি।
এদিকে বৃহস্পতিবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, আবু সাঈদ হত্যা মামলার ঘটনায় ফরেনসিক প্রতিবেদন টেম্পারিং করার জন্য তিনি চাপ দেননি; বরং সঠিক রিপোর্ট দেয়ার কথা বলেছি। আর প্রশাসনের লোক হিসেবে শুধু প্রশাসনিক সহযোগিতা দেওয়ার সুযোগ থাকে। প্রতিবেদন দেয়ার এখতিয়ার সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের।
তিনি বলেন, ডা. রাজিবুল ইসলামের ফরেনসিক প্রতিবেদন দেয়ায় কলেজ প্রশাসনের নয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাপে ছিলেন। কিন্তু এখন তিনি আমাদের কথাও বলছেন।