ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গভীর রাতে কান্নাকাটি করায় বিরক্ত হয়ে নুসরাত জাহান তিথি নামে ৬ মাসের এক শিশুকে কন্যাকে হত্যা করেছে মা। পরে তার লাশ বাড়ির পাশের খালে লাশ ফেলে দিয়ে আসে বাবা। ঘটনাটি জিন-ভুতের বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে ওই দম্পতি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশের হাতে ধরা খেয়ে ওই বাবা-মা হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছেন। পরে আদালতেও তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।
পাশবিক এ ঘটনাটি ঘটে গত ৩০ জুন রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের বরিশল গ্রামে। গত ১ জুলাই রাতে বাড়ির পাশের একটি খাল থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে মঙ্গলবার সকালে ওই শিশুর লাশ ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। পুলিশ ঘাতক বাবা জিল্লুর রহমান ও মা স্বপ্না বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, জিল্লুর রহমান ও স্বপ্না বেগম প্রতিদিনের মতো শিশু তিথিকে নিয়ে এক ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠে স্বপ্না বেগম তার শিশু সন্তানকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে চিৎকার শুরু করেন। শিশুটির বাবাও জানায়, ঘরের দরজা-জানালা লাগানো অবস্থায় তাদের সন্তান নিখোঁজ হয়। এটি জিন-ভুতের কান্ড বলেও তারা প্রচার করতে থাকেন। বিষয়টি জানার পর তাদের বাড়িতে লোকজনের ভিড় জমে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে সন্তান নিখোঁজের কথা উল্লেখ করে থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেন মা। এ ঘটনায় তদন্তে নামে পুলিশ। ১ জুলাই রাতে বাড়ির পাশের খাল থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপরই বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসা হলে তারা পুলিশের কাছে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন বলেন, ঘটনার পর থেকে মা-বাবা কারো মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই। তারা থানায় এসে সন্তান নিখোঁজের কথা বলে জিডি করে।
এই দম্পত্তির দুই ছেলে প্রবাসে থাকে। ১০ বছর বয়সের তাদের আরেকটি মেয়ে রয়েছে।’ মঙ্গলবার বিকেলে তাদেরকে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট জালাল উদ্দিনের আদালতে হাজির করা হলে তারা হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।
হাআমা/