সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৪ চৈত্র ১৪৩১ ।। ৯ শাওয়াল ১৪৪৬


আহুত হরতালের সমর্থনে ঢাকায় জাতীয় আইম্মা পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বিশ্বব্যাপী মজলুম গাজাবাসীদের আহুত হরতালের সমর্থনে ঢাকার বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাদ জোহর মিছিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও বিক্ষুব্ধ জনতা বেলা ১১টায় বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে জমায়েত হতে থাকে। সকলের হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা, কালেমার পতাকা, আল আকসার ছবি শোভা পাচ্ছিল। এসময় ইসরায়েলের নেতানিয়াহু ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবিতে জুতাপেটা ও আগুন ধরিয়ে প্রতিবাদ করে। 

সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে মিছিল পূর্ব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমাদ আবদুল কাইয়ুম, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতী রেজাউল করীম আবরার, বিশিষ্ট দাঈ মুফতী আবু ত্বহা আদনান, মুফতী শামসুদ্দোহা আশরাফী, ইসমাঈল হোসেন সিরাজী, মাওলানা শাহজাহান আল হাবিবী, মুফতী আব্দুল আজিজ কাসেমী, মুফতী এমদাদুল্লাহ ফাহাদ, মুফতী ফরিদুল ইসলাম, মাওলানা কেএম শরীয়াতুল্লাহ।

সমাবেশ থেকে মজলুম গাজাবাসীর আহুত হরতালের সমর্থনে একটি মিছিল বের হয়ে বায়তুল মোকাররম, পল্টন, প্রেসক্লাব, শাহবাগ, টিএসসি হয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গিয়ে মিছিলটি শেষ হয়। 

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সহ-সভাপতি মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, গাজায় ইজরাইলের নৃশংসতা  এবং বর্বরতা ইতিহাসের সকল নৃশংসতাকে হার মানিয়েছে। ইজরায়েল কতটা বর্বর, হিংস্র হায়েনা তা তাদের কর্মকান্ডে ফুটে উঠেছে। ইজরায়েলের গণহত্যা সকল মানবিক বির্পযয়কে ছাড়িয়েছে। এভাবে বোমাবর্ষণ করে মানুষ হত্যার নজীর মানব ইতিহাসে আর নাই। 

বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, তারচেয়েও লজ্জাজনক বিষয় হলো, মানবতার ধ্বজাধারী পশ্চিমা সরকারগুলো, বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলো এবং আরব সরকারগুলো যে নিরব ভূমিকা পালন করছে তা ইতিহাসের কলংক হয়ে থাকবে। 

তিনি ইসরায়েল রাষ্ট্রের অবৈধতার কথা উল্লেখ করে বলেন, মধ্যপ্রাচ্য থেকে জারজরাষ্ট্র ইজরায়েলকে নিশ্চিহ্ন না করা পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহর প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। নেতৃবৃন্দ বলেন, ফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে জারজরাষ্ট্র ইজরায়েল যে ধ্বংস ও হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে তা ইতিহাসের জঘন্যতম মানবাধিকার লঙ্ঘন। এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ, ওআইসি, আরবলীগসহ মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর ভূমিকায় আমরা হতাশ। তিনি ্বলেণ, এবার যুদ্ধ বিরতি নয়, বরং ফিলিস্তিনকে স্বাধীন দেশ ঘোষণা করে ইজরাইলকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে বের করে দিতে হবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, জারজ রাষ্ট্র ইজরায়েল এখনই বিরত না হলে মুসলিম বিশ্ব মার্চ টু ফিলিস্তিনের মাধ্যমে ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে রওনা করবে। এছাড়াও নেতৃবৃন্দ ফিলিস্তিন রক্ষায় বৈশ্বিক চাপ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ সহ বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রসমুহের প্রতি আহবান জানান। 

সমাবেশে থেকে বাংলাদেশের পাসপোর্টে একসেপ্ট ইজরাইল সংযোজনের আহ্বান জানানো হয়। আরও বলা হয়, জাতিসংঘ মুসলিম নিধন সংঘের ভুমিকায়, মুসলিম জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি।


মুফতি রেজাউল করীম আবরার বলেন, ইঙ্গ-মার্কিন ও ইজরাইলী সকল পণ্য বর্জনের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে চাপ অব্যাহত রাখতে হবে। পাড়ায় মহল্লায় ইজরাইলী পণ্যের বিরুদ্ধে প্রচারনা অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে ইজরাইলের ভয়াবহ নৃশংসতার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী জোরালো প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে এবং ফিলিস্তিনের পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। ফিলিস্তিনকে মুক্ত করতে ভুমিকা পালন করতে হবে। সেইসাথে বাংলাদেশের শান্তিমিশনের মতো ফিলিস্তিনে যাওয়ার ব্যবস্থা করলে বাংলাদেশ থেকে লাখো যুবক ফিলিস্তিনের মজলুমদের পক্ষে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে।

গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সকল জেলা ও উপজেলা শাখা বিশ্বব্যাপী মজলুম গাজাবাসীর আহুত হরতালের সমর্থনে রাস্তায় নেমে আসে। অনেক মা-বোনকে তাদের কোলের বাচ্চাদের নিয়ে প্রতিবাদে অংশ নিতে দেখা যায়। তারা এই বর্বরতার অবসান চান। যুদ্ধ চাই না শান্তি চাই। 


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ