হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর আয়োজিত ইফতার মাহফিল আজ ১২ মার্চ বুধবার জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মিলনায়তনে মহানগর সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। ইফতার পূর্ব আলোচনা সভা উদ্বোধন করেন যুগ্মমহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক।
উপস্থিত ছিলেন শিল্প ও বানিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমাদ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ ভূলু, নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হুসাইন, হাসানাত আব্দুল্লাহ, এনডিএম এর চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, হেফাজতের নায়েবে আমির মাওলানা আরশাদ রহমানী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, মাওলানা হেলাল উদ্দীন, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সুবহানী,মাওলানা কাজী ইব্রাহীম, ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী, হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা জালালুদ্দিন আহমাদ, মুফতি মুনির হুসাইন কাসেমী, মুফতি সাখাওয়াত হুসাইন রাজী, মুফতি বশিরুল্লাহ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মাওলানা নূর হুসাইন নূরানী, মাওলানা মুসা বিন ইজহার, মুফতী জাকির হুসাইন কাসেমী, মুফতী রেজাউল করিম আবরার, মাওলানা ফজলে বারি মাসুদ, মুফতী কিফায়াতুল্লাহ আজহারী, মুফতি জাবের কাসেমী, গাজী ইয়াকুব উসমানী, মুফতী কামাল উদ্দীন, মাওলানা আফসার মাহমুদ, মাওলানা রাশেদ বিন নূর প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালের ৬ এপ্রিল আমরা হেফাজতে ইসলাম রাসূল সা-এর কটূক্তিকারী ব্লগারদের বিচার দাবিতে ঢাকায় শান্তিপূর্ণ লং মার্চের আয়োজন করেছিলাম। আমরা প্রমাণ করেছিলাম যে আমরা শান্তিপূর্ণ। কিন্তু হেফাজতের পরবর্তী ৫ মের কর্মসূচিতে তৎকালীন দিল্লির তাঁবেদার আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার তার পুলিশ ও সন্ত্রাসী বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি করে। নির্বিচারে গুলি ছুঁড়ে নিরীহ তালেবুল এলেমদের প্রাণহানি ঘটায়। অবশেষে ৫ মে রাতে শাপলা চত্বরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাতের অন্ধকারে যৌথবাহিনী হেফাজতের লাখো জমায়েতের ওপর নির্মম ক্র্যাকডাউন চালায়৷ সংবাদমাধ্যমের খবর বরাতে প্রায় দেড় লক্ষেরও বেশি গুলি ব্যবহার করা হয়েছিল ওই রাতের হত্যাযজ্ঞে। খুনি হাসিনা নিজেই এই গণহত্যার নির্দেশদাতা। হাসিনা এবং তার দোসরদের বিরুদ্ধে আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছি। ইতোমধ্যে শেখ হাসিনা ও ইমরান এইচ সরকারসহ প্রাথমিকভাবে ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিগণ।
হেফাজত নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, শাপলার খুনিদের কোনো ক্ষমা নেই। শাহবাগে ইমরান এইচ সরকারসহ যারা এই গণহত্যায় সমর্থন যুগিয়েছিল এবং আওয়ামী ফ্যাসিবাদ কয়েমের বৈধতা তৈরি করেছিল, তাদেরও বিচার করতে হবে এই ওলি-আউলিয়ার পুণ্যভূমিতে। আমরা ট্রাই্যুনালে মামলা করেছি। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমরা শাপলার খুনিদের যথোপযুক্ত বিচারের জোর দাবি জানাচ্ছি।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, আমরা লক্ষ করছি, শাহবাগী নাস্তিক-মুরতাদরা আবারও মাথাচাড়া দেয়ার চেষ্টা করছে। তারা গণঅভ্যুত্থানের এই সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এবং দেশকে নতুন অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। পুলিশের ওপর হামলে পড়েছে। ইন্ডিয়াপন্থী শাহবাগী হায়েনাদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি। ২০১৩ সালের মতো এবারও তারা এদেশে ইন্ডিয়ার স্বার্থ রক্ষা করতে নেমেছে।
অন্যদিকে, আল্লাহ ও রাসূল সা.-এর নামে কটূক্তি ও অশ্লীল কথা বলে তৌহিদি জনতার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে যাচ্ছে প্রগতিশীল নামধারী, নাস্তিক-মুরতাদরা৷ এরা কাদের ইশারায় এসব করছে তা সরকারকে খতিয়ে দেখতে হবে। শাতিমদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। নাহলে এদের অনাচার থামবে না। প্রগতিশীল ঘরানার ভাইবোনদের উদ্দেশে বলছি, তারা যতই আপনাদের গোত্রের হোক, আপনারা শাতিমদের প্রশ্রয় দেবেন না। আপনারাও নিন্দা জানান। আপনাদেরও দায় আছে। আপনারা চুপ থাকা মানে মৌন সমর্থন দিচ্ছেন বলে আমরা ধরে নেব। এটা হতে পারে না।
মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব বলেন, আমরা নাস্তিক-মুরতাদদের সতর্ক করে বলতে চাই, আল্লাহ ও রাসূল সা-কে গালি দিয়ে বাংলার মাটিতে থাকা যাবে না। তৌহিদি জনতা জেগে উঠলে তারা পালানোর জায়গা পাবে না। এদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
হাআমা/