শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বিস্ময়কর হাফেজ শিশুর সঙ্গে শায়খ আহমাদুল্লাহ মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর জানাযা ও দাফন সম্পন্ন ১৬ টি বছর জুলুম-ষড়যন্ত্রের মধ্যে ছিল মাদরাসার ছাত্ররা: ড. শামছুল আলম  ‘সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় সংস্কার কমিশন’ জমিয়ত সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসানের ইন্তেকালে খেলাফত মজলিসের শোকপ্রকাশ কাল ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় রোজায় বাজার সহনশীল রাখার চেষ্টা করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে বিএনপি মহাসচিবের শোক রাষ্ট্রপতি নির্বাচনসহ যেসব সুপারিশ সংস্কার কমিশনের বাংলাদেশিদের সুখবর দিলো ইতালি, পুনরায় ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত

‘সুন্নাহর মাঝেই রয়েছে বৈষম্যমুক্ত আদর্শ দেশ গড়ার চাবিকাঠি’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেছেন, ইসলামের প্রতিটি বিধানই মানব কল্যাণের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। মুসলিম জীবনের সর্বাবস্থায় হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.)এর ‍সুন্নাহর অনুসরণ করতে হবে। রাসূলের সুন্নাহর মাঝেই রয়েছে বৈষম্যমুক্ত আদর্শ দেশ ও সমাজ গড়ার কার্যকর চাবিকাঠি।

শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বাদ জুমা রাজধানী ঢাকার শাহবাগ চত্বরে ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ আয়োজিত সীরাতুন্নবী (সা.) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক এসব কথা বলেন। ছাত্র জমিয়তের সভাপতি রিদওয়ান মাযহারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সাধারণ তাওহিদী জনতা অংশগ্রহণ করেন।

মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক আরো বলেন, গবেষণা করলে দেখা যাবে, ইবাদত-বন্দেগী থেকে শুরু করে ইসলামী বিধান ও নির্দেশনার সবকিছুই যদি মেনে চলা হয়, তাহলে জগতে শান্তি আর শান্তি বিরাজ করবে। কোথাও কোন জুলুম-অত্যাচার থাকবে না। অবিচার ও বেইনসাফি থাকবে না। সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত হবে। মানুষের নিরাপত্তা ও মর্যাদা সমুন্নত থাকবে। আর ইসলামের বিধানকে চিনতে ও বুঝতে হলে রাসূল (সা.)এর সুন্নাহ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন এবং সাহাবায়ে কেরামের জীবনী অধ্যয়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছরের আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন উৎখাতের পর এখন দেশের সর্বস্তরে বৈষমুক্ত দূর করে ইনসাফ ও সুবিচার প্রতিষ্ঠার আওয়াজ জোরদার হয়েছে। শান্তি, সহনশীলতা ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখার কথা বলা হচ্ছে। জাতীয় স্তরে রাসূলুল্লাহ (সা.)এর সুন্নাহর পরিপূর্ণ ও যথাযথ অনুশীলন চালু করতে পারলে খুব সহজেই শান্তি, সম্প্রীতি, বৈষম্যমুক্ত ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণ সহজতর হবে।

ছাত্র জমিয়তের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কাউসার আহমদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নূর হোসাইনের যৌথ সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী।

তিনি বলেছেন, মানবকূলের মুক্তিদূত রাসূলুল্লাহ (সা.) বিশ্ববাসীকে ইনসাফ ও সাম্যের এক সুন্দর পৃথিবী উপহার দিয়েছেন। দুগ্ধপোষ্য নবজাতক থাকা অবস্থায়ও দুধ মা হালীমা সাদিয়া (রাযি.)এর এক পার্শ্বের স্তন থেকে দুধ পান করে অপর পার্শ্বের স্তন থেকে কখনোই দুধ পান না করে দুধ ভাই আব্দুল্লাহর প্রতি ইনসাফ কায়েমের যে নজির স্থাপন করেছেন, তা থেকেই তৎকালীন বিশ্ব এই বার্তা পেয়ে যায় যে, এই সূর্য সন্তানই একদিন অধিকারবঞ্চিত মানুষজনকে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেবেন। বাস্তবেও তিনি তাই করে দেখিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার এক পর্যায়ে একজন নারীর চুরির অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পর শাস্তি কার্যকর করার আগে তার শাস্তি মওকুফ করার সুপারিশ আসলে উক্ত সুপারিশের জবাবে মহানবী (সা.) বলেছিলেন, আমার কন্যা ফতেমাও যদি চুরি করত, তাহলে আমি অবশ্যই চুরির শাস্তি হিসেবে তার হাত কর্তন করার আদেশ দিতাম। ইনসাফ ভিত্তিক একটি আদর্শ রাষ্ট্র গঠনে মহানবী (সা.) পৃথিবীর মানুষকে যে পথ দেখিয়ে গেছেন, একমাত্র সে পথই পারে মানুষকে মুক্তির পথ দেখাতে। এর বিপরীতে অন্যকোন পথে সকল প্রকার বৈষম্য দূর করে একটি আদর্শ রাষ্ট্র বিনির্মাণ কখনোই সম্ভব নয়।

মাওলানা আফেন্দী বলেছেন, ছাত্রজনতার এক সফল গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে যদি আবারো কেউ বৈষম্য চাপিয়ে দিতে চায়, তাহলে তা কোনভাবেই মেনে নেয়া হবে না। পতিত স্বৈরাচার সরকার ছাত্র রাজনীতির নামে যে অপরাজনীতির সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করেছিল, জাতি আর তার পুণরাবৃত্তি দেখতে চায় না। অন্তর্বর্তী সরকারকে আবরার হত্যাকাণ্ডের যথোপযুক্ত বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। ছাত্রদের জন্য আদর্শ শিক্ষার পাঠ ও পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে আগামীর বাংলাদেশ প্রতিটি সেক্টরে পাবে দক্ষ জনশক্তি। তাই শিক্ষাঙ্গনে কোন প্রকার সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করা যাবে না।

সভাপতির বক্তব্যে রিদওয়ান মাযহারী বলেছেন, মহানবী (সা.) বিশ্বের সমগ্র জাতির জন্য শান্তির দূত হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন। তাই ইনসাফ ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন করতে হলে মহানবী (সা.)এর রাষ্ট্র পরিচালন পদ্ধতিকে সর্বক্ষেত্রে অনুসরণ করতে হবে। রাষ্ট্রের প্রধান থেকে শুরু করে প্রতিটি সেক্টরের দায়িত্বশীলদেরকেও মহানবী (সা.)এর আদর্শ ও তাঁর প্রবর্তিত মদীনা সনদকে সামনে রেখে শাসনব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে।

সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী, মাওলানা শেখ মুজিবুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজিজ, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মাওলানা লোকমান মাযহারী, মুফতি মুনির হোসাইন কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি নাসিরুদ্দিন খান, মুফতি আফজাল হোসাইন রহমানী, অর্থ সম্পাদক মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন, যুব জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা তাফহীমুল হক প্রমুখ।

সবশেষে সীরাতুন্নবী (সা.)এর উপর কুইজ ও প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার ও ক্রেস্ট তুলে দেন অতিথিরা।

হাআমা/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ