সংস্কার কেন ভোটাধিকার-গণতন্ত্রের বিকল্প হবে, প্রশ্ন রিজভীর
প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০৯:৩১ রাত
নিউজ ডেস্ক

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘সংস্কার ভোটাধিকার-গণতন্ত্রের বিকল্প হবে কেন? যে ভোটাধিকারের জন্য ১৫-১৬ বছর সংগ্রাম করেছেন, সেই ভোটাধিকার কেন বিলম্বিত হচ্ছে? সেটা নিয়ে কেন এত কথা হচ্ছে? কেন নির্বাচন ও ভোটাধিকারের বিকল্প হিসেবে সংস্কারকে দাঁড় করানো হচ্ছে?’

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে এসব প্রশ্ন করেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুম হওয়া বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর সন্ধানে এ মাহফিলের আয়োজন করে ‘ইলিয়াস আলী গুম প্রতিরোধ কমিটি’। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘আমরা ভোট, নির্বাচন ও ভোটাধিকারের কথা বললে সরকার আরো কিছু কথা বিকল্প হিসেবে দাঁড় করাচ্ছে। গণতন্ত্র মানেই তো নির্বাচন।

গণতন্ত্র মানেই তো ন্যায়বিচার। সেগুলো নিয়ে কী করছেন? আমাদের নেতাকর্মীদের নামে ৬০ লাখ মামলা। আট মাস ক্ষমতায় আছেন, এসব মামলা তো প্রত্যাহার করা যেত। কিন্তু এজন্য কিছুই করেননি।

আজও কেন আদালতের বারান্দায় ঘুরে বেড়াতে হবে? সরকারের নির্বাচনী ওয়াদা ডিসেম্বর আর জুনের মধ্যে পেন্ডুলামের মতো দোল খাচ্ছে কেন? অন্তর্বর্তী সরকারকে এটার জবাব দেওয়া দরকার।’
রিজভী বলেন, ‘বিএনপি পরিবারের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো হয় না। তার মানে, কোনো একটা এজেন্ডা বা পরিকল্পিত নকশার মধ্য দিয়ে এই সরকার চলছে। এটাই তো মানুষের কাছে সব থেকে বড় প্রশ্ন।

এই কারণেই তো আজ এত ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে। আমরা চেয়েছি একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, আমাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, আইনের শাসন নিশ্চিত করা। অন্তর্বর্তী সরকারকেই জায়গাটি নিশ্চিত করা দরকার।’

তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের অবদানকে আমরা স্বীকার করি। কিন্তু এটা যদি এ রকম হয় যে তাদের কথায় প্রশাসন চলবে, সব সরকারি কর্মকাণ্ড হবে, এটাকে বলে নৈরাজ্য।


এই নৈরাজ্য কেন হবে? ডিসি-এসপিরা বলেন, এখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা বলে গেছেন, এভাবে করা যাবে না। তাহলে জনপ্রশাসন কেন?’

দোয়া মাহফিলে ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সাত-আট মাস অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছে, গুম কমিশনে আমরা অভিযোগ দাখিল করেছি। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সুস্পষ্ট বক্তব্য পাইনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য, কথাবার্তা, বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের খবর বের হচ্ছে। এর মধ্যে কোনটি সঠিক বুঝতে পারি না। একটা ইতিবাচকভাবে খবর প্রকাশ করা হয়, আবার নেতিবাচকভাবেও খবর প্রকাশ করা হয়। সরকারের কাছে সুস্পষ্টভাবে জানতে চাই, আপনারা আপনাদের গুম কমিশন, আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল, যেটাই গঠন করে থাকেন না কেন, গুমের বিষয়ে আপনারা কী করেছেন, সেটা স্পষ্ট করুন ‘

দোয়া মাহফিলে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সরাফত আলী প্রমুখ।

এমএইচ/