উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সবক শুরু বরিশাল জামিয়া ইসলামিয়া হোসাইনিয়ার
প্রকাশ:
১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০৪:৩৭ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
![]()
দক্ষিণবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া ইসলামিয়া হোসাইনিয়ায় ১৬ এপ্রিল (বুধবার) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ২০২৫-২৬ ইং নতুন শিক্ষাবর্ষের সবক শুরু হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে জামিয়ার মুহতামিম ও উস্তাজুল বুখারী হাফেজ মাওলানা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ইখলাস ও নিয়তের গুরুত্ব ইসলামে অপরিহার্য। বিশুদ্ধ নিয়ত ছাড়া কোনো আমলই মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। বিশুদ্ধ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিসে সতর্ক করেছেন।’ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি দারুল উলুম দেওবন্দের সাবেক শাইখুল হাদিস ও প্রধান মুফতি হযরতুল আল্লাম মুফতি মাহমুদুল হাসান গঙ্গহি রাহমাতুল্লাহ আলাইহি এর খলিফা শাইখুল হাদিস মাওলানা মুফতি মাহবুব বিন মোশাররফ ছাত্রদের উদ্দেশ্যে নির্দেশনামূলক বার্তায় বলেন, ‘জামিয়ার সকল উস্তাদ, কর্মকর্তাসহ যিম্মাদারগণের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা ও সম্মান বজায় রেখে আপনাদেরকে চলতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আপনাদেরকে নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা ও চলাফেরায় পারস্পরিক সম্মান ও সৌহার্দ্য বজায় রাখতে হবে। জামিয়ার অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও আইন পূর্ণরূপে মেনে চলতে হবে। এ ব্যাপারে কোন শিথিলতা করা যাবে না। যথারীতি দরসে সকল ছাত্রকে হাজির থাকতে হবে এবং দরসের বাইরের সময়ের উত্তম ব্যবহার করে পূর্ণ মনোযোগের সাথে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে হবে।’ প্রধান বক্তার বক্তব্যে অত্র জামিয়ার নায়েবে মুহতামিম ও উস্তাজুল বুখারী মাওলানা মুফতি আব্দুল কাদের কাসেমী বলেন, ‘ইলমে দ্বীন শিক্ষা করা সবার জন্য অপরিহার্য। ইলমে নববীর এই শিক্ষার শিক্ষক হলেন স্বয়ং মহান রাব্বুল আলামিন। কাজেই ওহীভিত্তিক শিক্ষার মাধ্যমেই আলোকিত ও আদর্শিক মানুষ তৈরি করতে কওমি মাদরাসা এবং ইসলামি শিক্ষার বিকল্প নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইলম কেবলই আল্লাহর জন্য; অন্য কোনো কিছুর জন্য নয়। সুতরাং আমি ইলম অর্জন করব, যাতে আমি আল্লাহ তাআলার পরিচয় লাভ করতে পারি, তাঁর বিধিবিধান ও আদেশ-নিষেধ জানতে পারি, তাঁর সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টি বুঝতে পারি এবং সীরাতে মুস্তাকীমের ওপর থাকতে পারি।’ জামিয়ার উস্তাজুল হাদিস ও শিক্ষা-সচিব মাওলানা মুফতি মুহাম্মাদ জাকারিয়া ছাত্রদের প্রশংসা করে বলেন, ‘আপনারা দ্বীনের বৃহৎ পরিসরে খেদমত করার মহান লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়েই দ্বীনি ইলম শিক্ষাকে বেছে নিয়েছেন। অবশ্যই আপনাদেরকে পূর্ণ মনোযোগ ও কঠোর অধ্যাবসায়ের সাথে দরসে নিয়মিত হাজির থাকতে হবে এবং অন্য সময়ে কিতাব মুতালায়া করতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ইলমের জন্য দরকার মেহনত ও মুজাহাদা। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, إِنّ أَحَدَكُمْ لَمْ يُولَدْ عَالِمًا، وَإِنَّمَا الْعِلْمُ بِالتّعَلّمِ. অর্থ: তোমাদের কেউই আলেম হয়ে জন্ম লাভ করে না। ইলম তো হাসিল হয় শিক্ষা করার মাধ্যমে ।(আলমাদখাল ইলাস সুনানিল কুবরা, বায়হাকী ১/২৬৭) মুজাহাদায়ে এজমালী হল চারটি কাজ : ১. قلة الطعام (কম খাওয়া) ২. قلة الكلام (কথা কম বলা) ৩. قلة المنام (কম ঘুমানো) ৪. قلة الاختلاط مع الأنام (মানুষের সাথে মেলামেশা কম করা) শিক্ষা-সচিব বলেন, এগুলোর পাশাপাশি উস্তাদ ও কিতাবের প্রতি ইহতেরাম অত্যন্ত প্রয়োজন। আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী রহ. কিতাবের এতো ইহতেরাম করতেন যে তিনি নিজে ঘুরে ঘুরে মুতালাআ করতেন কিতাব ঘুরাতেন না। সর্বশেষ জামিয়ার নেজামুল আওকাত ও কানুন পড়ে শুনান জামিয়ার উস্তাজুল হাদিস ও নাজিমে দারুল ইকামা মাওলানা মুফতি সাইফুল্লাহ আল-মানসুর। ইফতেতাহি দরস অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জামিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা রকিবুল হাসান খান, মাওলানা এনায়েতুর রহমান খান, জামিয়ার উস্তাজুল হাদিস মাওলানা মুফতি আব্দুর রাজ্জাক রহমানী, মাওলানা মুফতি তালহা হোসাইন, মাওলানা মুফতি মারুফ আহমদ কাসেমী, মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান খান প্রমুখ। এমএইচ/ |