এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু আজ
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল, ২০২৫, ০৯:২৪ সকাল
নিউজ ডেস্ক

আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে ২০২৫ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা। এ বছর ১৯ লাখ ২৮ হাজার পরীক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এ পরীক্ষায় অংশ নেবে। বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়ে এসএসসির তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে ১৩ মে। পরীক্ষা চলবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। সুষ্ঠু, সুন্দর ও সম্পূর্ণ নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। একইসঙ্গে প্রশ্নপত্র ফাঁস, গুজব, নকল বা অসদুপায় অবলম্বনের সঙ্গে জড়িতদের ব্যাপারে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ডিএমপি।

সংশোধিত রুটিন অনুযায়ী এবারের এসএসসি পরীক্ষা হবে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে, সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে। ১৩ মে তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষে ১৫ মে থেকে ২২ মে পর্যন্ত এসএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষা চলবে। দাখিল পরীক্ষা শুরু হবে কুরআন মাজিদ ও তাজভিদ পরীক্ষা দিয়ে। ১৩ মে পর্যন্ত দাখিলের তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলবে। আর ১৪ থেকে ১৮ মের মধ্যে ব্যবহারিক পরীক্ষা হবে।

এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালের শিক্ষার্থীরা দেবে বাংলা-২ বিষয়ের পরীক্ষা। ১৩ মে ইংরেজি-২ পরীক্ষা দিয়ে তাদের তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে। ১৩ থেকে ২২ মে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালের ব্যবহারিক পরীক্ষা এবং ২৩ মে থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত বাস্তব প্রশিক্ষণ চলবে।

শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবার ৯টি সাধারণ ধারার শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় যশোর বোর্ড থেকে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ১০৯ পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। তাদের মধ্যে ৭০ জন পরীক্ষার নির্ধারিত সময়সহ আরও অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় পাবে। বাকি ৩৯ জন শ্রুতিলেখকসহ অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবে। আর মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষা ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন পরীক্ষা দেবে। এ ছাড়াও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষায় বসছে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন পরীক্ষার্থী।

ইতিমধ্যে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা আয়োজনের সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শেষ করেছে শিক্ষা প্রশাসন। পরীক্ষার চলার তিন ঘণ্টা পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। আর কেন্দ্রের আশপাশে ২০০ গজের মধ্যে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট নন এমন কেউ চলাচল করতে পারবেন না। এসব নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. ইয়ানুর রহমান। 

নির্দেশনাগুলো হলো—পরীক্ষা শুরুর ৩০  মিনিট পূর্বে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে; প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে; প্রথমে বহুনির্বাচনি ও পরে সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা হবে এবং উভয় পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না; পরীক্ষার্থীরা তাদের প্রবেশপত্র নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিকট থেকে পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে তিন দিন পূর্বে সংগ্রহ করবে; শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়গুলো এনসিটিবির নির্দেশনা অনুসারে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে ধারাবাহিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বর বোর্ডের ওয়েবসাইটে অনলাইনে প্রেরণ করবে; পরীক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ উত্তরপত্রের ওমমআর ফরমে তার পরীক্ষার রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি যথাযথভাবে লিখে বৃত্ত ভরাট করবে। 

কোনো অবস্থাতেই উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না; পরীক্ষার্থীকে সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়), বহুনির্বাচনি ও ব্যবহারিক অংশে পৃথকভাবে পাস করতে হবে, প্রত্যেক পরীক্ষার্থী কেবল নিবন্ধনপত্রে বর্ণিত বিষয়/বিষয়সমূহের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই ভিন্ন বিষয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না; কোন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা (সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়), বহুনির্বাচনি ও ব্যবহারিক) নিজ বিদ্যালয়ে/প্রতিষ্ঠানে হবে না। পরীক্ষার্থী স্থানান্তরের মাধ্যমে আসন বিন্যাস করতে হবে; পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে; কেন্দ্রসচিব ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি/পরীক্ষার্থী পরীক্ষাকেন্দ্রে মুঠোফোন আনতে এবং ব্যবহার করতে পারবেন না; সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়), বহুনির্বাচনি ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর উপস্থিতির জন্য একই উপস্থিতি পত্র ব্যবহার করতে হবে; ব্যবহারিক পরীক্ষা নিজ নিজ কেন্দ্র/ভেন্যুতে হবে এবং পরীক্ষার ফল প্রকাশের ৭  দিনের মধ্যে পুনর্নিরীক্ষার জন্য অনলাইনে এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে। এ ছাড়াও পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশে সব ফটোকপি মেশিন পরীক্ষার সময় বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, আগামী ১০ এপ্রিল থেকে ১৩ মে পর্যন্ত সবধরনের কোচিং সেন্টারও বন্ধ থাকবে।

এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা নকল বা অসদুপায় অবলম্বন করলে এবং প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় বা গুজব ছড়ানোতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়ে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, পরীক্ষা আয়োজনের সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। সুষ্ঠু, সুন্দর ও সম্পূর্ণ নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সবার সহযোগিতা কামনা করছি। আর প্রতি বছরের মতো এবারের পরীক্ষাতেও প্রোগ্রামেবল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না। তবে নন প্রোগ্রামেবল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন পরীক্ষার্থীরা।

এসএকে/