ভারতে রমজানেও সংখ্যালঘু মুসলিম নির্যাতন, ১৫১ আলেমের উদ্বেগ ও ক্ষোভ
প্রকাশ:
১৬ মার্চ, ২০২৫, ১০:০৩ রাত
নিউজ ডেস্ক |
![]()
ভারতে পবিত্র রমজান মাসেও উগ্র হিন্দুদের দ্বারা মুসলমানদের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশের বিশিষ্ট আলেমরা। অবিলম্বে মুসলিম নির্যাতন বন্ধ ও ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ওপর হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ১৫১ জন আলেম। রোববার (১৬ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, রমজান হলো পবিত্র মাস। এ মাসে অধিক ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন থাকেন বিশ্বের মুসলমানেরা। এই মাসের সম্মানার্থে হোয়াইট হাউসসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা মুসলমানদের শুভেচ্ছা জানিয়ে থাকেন। মুসলমানদের সঙ্গে ইফতার করেন। অথচ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ধর্মনিরপেক্ষ দেশ দাবিকারী ভারতে মুসলমানরা পবিত্র রমজানেও নিরাপদ থাকতে পারছেন না। নির্বিঘ্নে ইবাদত পালন করতে পারছেন না। তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করা হচ্ছে। আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, সম্প্রতি লাউড স্পিকারে আজান দেওয়ায় ইমামের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। হোলির জন্য মুসলিমদের নামাজ আদায় না করতে দেওয়ার ঘোষণা হয়েছে। আল-জাজিরা, টিআরটি ও ডয়েচে ভেলেসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা দেখছি, ভারতের একটি মসজিদের সামনে হঠাৎ করেই কট্টর হিন্দুত্ববাদী একটি দল নামাজ পড়ে বের হওয়া মুসল্লিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে। তাদের মারধর করে আর উচ্চ স্বরে ‘জয় শ্রী রাম’ বলতে থাকে, তাদের হাতে ছিল মদের বোতল। এছাড়াও রাস্তা-ঘাটে রোজাদার মুসলিমদের পথ আটকে হোলির রঙ মাখিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদ করতে গেলে পিটিয়ে জখম করা হচ্ছে। নামাজরত মুসল্লিদের ওপর শারীরিক আক্রমণ করা হচ্ছে। বিদ্যালয় ও যানবাহন থেকে নিয়ে বাড়ি-ঘরেও নারী ও শিশুরাও নিরাপদে নেই। তাদের ওপরও হামলা হচ্ছে। বিবৃতিতে আলেমরা আরও উল্লেখ করেন, ইসলামবিদ্বেষী মোদি সরকারের সময় ভারতে মুসলিম নির্যাতনের ঘটনা যেন এখন নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। উগ্র হিন্দুত্ববাদী স্লোগান ‘জয় শ্রীরাম’ বলে প্রায় প্রতিদিনই ভারতের কোথাও না কোথাও মুসলিম নির্যাতনের খবর পাওয়া যাচ্ছে। মোদির ভারতে যে সংখ্যালঘুরা নিরাপদ নয় তার প্রমাণ মিলল আরও একবার। তাছাড়া মুসলমানদের ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ দখল করে রামমন্দির স্থাপন তার মধ্যে অন্যতম ঘটনা। বিশ্বজুড়ে নিন্দা কুড়ানো সেই ঘটনায় নিহত হয়েছিল বেশ কিছু ভারতীয় মুসলমান। ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায়, গো-মাতার সম্মানের অজুহাতে ভারতে দিন-দুপুরে হত্যার ঘটনাও ঘটছে। অথচ নরেন্দ্র মোদির দেশের হলুদ মিডিয়াগুলো এসবের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হয়ে বাংলাদেশ নিয়ে প্রোপাগান্ডায় ব্যস্ত। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা এতটাই নিরাপদ যে, মুসলমানরা পাহারা দেয় তাদের ধর্মীয় উপাসনালয়। অথচ মোদির দেশে বাধা দেওয়া হয় নামাজ পড়তেও। বিবৃতিতে ন্যাক্কারজনক এসব হামলা ও নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং নির্যাতিত মুসলিমদের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব উম্মাহর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। বিবৃতিদাতারা হলেন: আল্লামা সাইয়্যেদ কামালুদ্দীন জাফরী, প্রফেসর ড. এবিএম হিজবুল্লাহ, মুফতী মুহা. কাজী ইব্রাহীম, মাওলানা লিয়াকত আলী, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরি, ড. খলীলুর রহমান আল মাদানী, মাওলানা শরীফ মুহাম্মাদ, ড. গিয়াসউদ্দীন তালুকদার, মাওলানা খুবাইব বিন তায়্যিব (জিরি), মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, ড. মানজুরে এলাহি, ড. আবুল কালাম আজাদ বাশার, ড. মুহাম্মদ গোলাম রববানী, ড. মীর মনজুর মাহমুদ, প্রফেসর ড. সায়্যেদ মাকসুদুর রহমান, প্রফেসর ড. মো. মুস্তাফিজুর রহমান, প্রফেসর ড. মুখতার আহমেদ, হাফেজ হাবিবুল্লাহ মুহাম্মাদ ইকবাল, মাওলানা মোশতাক ফয়েজী, শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আযহারী, শায়খ হারুন আজিজী নদভী, মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিক কুয়াকাটা, মুফতি সাইফুল ইসলাম, মাওলানা রুহুল আমিন সাদী (সাইমুম সাদী) ড. ইউসুফ সুলতান, শায়েখ মুরতাজা হাসান ফয়জী মাসুম, ড. মো. রফিকুল ইসলাম আল মাদানী, ড. রশিদ আহমদ। হাআমা/ |