শিক্ষকদের সুখবর দিয়ে গেলেন বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা
প্রকাশ: ০৬ মার্চ, ২০২৫, ১১:৪৪ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সুখবর দিয়েছেন বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তাদের উৎসব-ভাতা, বিনোদন-ভাতা, বাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য ভাতা বাড়ানোর ঘোষণা দেন। এ ছাড়াও দায়িত্ব ছাড়ার আগে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির ফাইলে স্বাক্ষর করেন তিনি।

বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে বিদায় এবং নতুন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরারের যোগদান উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময় বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, গত ১৫/২০ বছরের ঘাটতি ১/২ বছরের বাজেট দিয়ে তো মেটানো যায় না। আজকেই বেসরকারি বেতন সরকারি বেতনের সমান করে দিতে হবে- এটা ন্যায্য দাবি বুঝলাম, কিন্তু এক বছরের বাজেট দিয়ে কীভাবে ১৫ বছরের বৈষম্য ঠিক করা যায়? কিন্তু শুরুটা করা দরকার। সেই শুরুটা আমরা করে দিয়ে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক উৎসব ভাতা, বিনোদন ভাতা, বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা- এ বছরের ঈদুল আজহা থেকে শুরু করে আগামী বছরের বাজেট থেকে অন্তত কিছু বাড়াতে পারবো, এখানেও আমি ঘোষণা দিচ্ছি না কতো বাড়াবো। আমি জানি সেটুকু বাজেটের মধ্যে এ বছর এবং আগামী বছরের বাজেটের মধ্যে প্রভিশন রাখা হচ্ছে।

শিক্ষকদের অবসর এবং কল্যাণ ভাতার জন্য একটা তহবিল তৈরি করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বছরই কিছুটা তৈরি করা হয়েছে। আগামী বাজেটে আরও রাখা হবে। তবে পুরো ফান্ডটাকে টেকসই করতে হলে ১/২টি বাজেটে হবে না। ভবিষ্যতে ৩/৪টি বাজেটে আশা করি এটার সমাধান হয়ে যাবে। অবসর এবং কল্যাণ ফান্ডের টাকা এমন একটা ব্যাংকে ইচ্ছা করে রাখা হয়েছিল যে ব্যাংকটাতে আর টাকা-পয়সা নেই। আর কিছু ফান্ড এমনিতেই চলে গেছে অন্য জায়গায়। বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কল্যাণ ভাতা এবং অবসর ভাতা- এটা হলো তাদের সবচেয়ে ন্যায্য দাবি। কিন্তু তারা তো সংঘবদ্ধ না। তারা রাস্তাতেও কোনোদিন নামেনি। কিন্তু আমি তো মনে করেছিলাম তাদের ওই দাবিটাই সবার আগে মেটানো উচিত।

এদিকে শেষদিনে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের এমপিও তালিকায় স্বাক্ষর করেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি প্রথম ধাপে ১ হাজার ৫১৯ ইবতেদায়ী মাদ্রাসার ৬ হাজারের বেশি শিক্ষকের এমপিওভুক্তির প্রস্তাবের ফাইলে স্বাক্ষর করেন।

বিদায়ী বক্তব্যে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, একই কারিকুলামে পড়াশুনা করিয়ে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের সঙ্গে ইবতেদায়ী শিক্ষকদের চরম বৈষম্য ছিল। সেই বৈষম্য নিরসনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দেশে অনেক ইবতেদায়ী মাদ্রাসা আছে। এর মধ্যে অনেকগুলো অনানুষ্ঠানিক। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠানের নথি আছে। সরকারি প্রাথমিক স্কুলের মতো তারা বাংলা, ইংরেজি, গণিত পড়াচ্ছে। অবকাঠামো, শিক্ষক থাকার পরও তাদের এমপিওভুক্ত করা হয়নি। তাদেরকে এমপিওভুক্ত করা সম্ভব। সেই কাজ আমি করে দিয়েছি।

উল্লেখ্য, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের কোডভুক্ত ৬ হাজার ৯৯৭টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা রয়েছে। এ ছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের হিসাবে আরও পাঁচ হাজারের মতো মাদ্রাসা আছে। তার মধ্যে ইআইআইএনধারী ১ হাজার ৫১৯টি মাদ্রাসার একজন প্রধান শিক্ষক ধরে চারজন শিক্ষক এমপিওভুক্ত হবেন। সেই হিসাবে প্রথম ধাপে ৬ হাজার ৭৬ জন শিক্ষক এমপিওভুক্ত হচ্ছেন। 

এমএইচ/