পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭০ : ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
প্রকাশ:
০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১:০০ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
||শোয়াইব আস-সফাদী|| ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১০ শিশুসহ ৭০ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন নারী ও দুইজন বয়স্ক ব্যক্তি রয়েছেন। বিভিন্ন অঞ্চলে নিহতের পরিসংখ্যান সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায়: - জেনিনে নিহত ৩৮ জন - তুবাসে নিহত ১৫ জন - নাবলুসে নিহত ৬ জন - তুলকারেমে নিহত ৫ জন - হেবরনে নিহত ৩ জন - বেথলেহেমে নিহত ২ জন - অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে নিহত ১ জন গাজায় যুদ্ধবিরতির পরও তা উপেক্ষা করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গত মাসে "আয়রন ওয়াল" নামে একটি ধ্বংসাত্মক অভিযান শুরু করে। বিশেষভাবে জেনিন অঞ্চলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলিকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হচ্ছে এই হামলা। এ অভিযানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে এবং বহু মানুষ আহত ও আটক হয়েছেন। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। জোর দিয়ে বলেছে যে, ফিলিস্তিনিরা কোনো ‘পুনর্বাসন পরিকল্পনা’ বা "বিকল্প আবাসভূমি" মেনে নেবে না। পিএর মুখপাত্র নাবিল আবু রুদাইনাহ এক বিবৃতিতে বলেছেন, "[ইসরায়েলি] দখলদার কর্তৃপক্ষ পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি জনগণের উপর তাদের সর্বাত্মক যুদ্ধ প্রসারিত করছে। যাতে নাগরিকদের বাস্তুচ্যুত করা ও জাতিগত নির্মূলের লক্ষ্যে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায়।" তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের নীতির ফলে শত শত ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন, আটক হয়েছেন। এর মধ্যে - জেনিন ও তুলকারেম শরণার্থী শিবিরের আবাসিক ব্লক ধ্বংস করা হয়েছে। হাজার হাজার নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অবকাঠামোর ব্যাপক ধ্বংস করা হয়েছে। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলি বাহিনী জেনিন শরণার্থী শিবিরের ২৩টি ভবন ধ্বংস করেছে। প্রায় ১৫,০০০ ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। তুলকারেম শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলার ফলে ৭৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি তাদের আবাস স্থান ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এমনটি জানিয়েছেন শিবিরের পপুলার কমিটি ফর সার্ভিসেসের প্রধান ফয়সাল সালামা। ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স-এর নিন্দা সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (এমএসএফ) ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে। সংস্থাটি এক্স (পূর্বনাম টুইটার)-এ এক পোস্টে বলেছে, "গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীর জুড়ে, বিশেষ করে জেনিন, তুলকারেম ও তুবাসে চরম সহিংসতা চালানো হচ্ছে। এটি অগ্রহণযোগ্য।" এমএসএফ পোস্টে আরও বলেছে, জেনিনে ইসরায়েলি অবরোধের কারণে "জরুরি" সরবরাহের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সংস্থাটি ইতোমধ্যে জেনিন হাসপাতালকে দশ হাজার লিটার জ্বালানি ও আট লক্ষ লিটার পানি সহায়তা দিয়েছে। পাশাপাশি, জেনিন ও তুলকারেম শিবিরের জন্য স্বাস্থ্যকর সরঞ্জাম, খাদ্য ও গদি বিতরণ করেছে। তবে, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি হামলা কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সোমবার, ইসরায়েলি বাহিনী দখলকৃত অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে ভারী সাঁজোয়া কর্মীবাহী যান মোতায়েন করেছে। যা ভবিষ্যতে আরও জঘন্য হামলার দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। এমএইচ/ |