আয়নাঘরের অভিজ্ঞতা এত ভয়াবহ অনেকেই তা বলতে চায় না: নাহিদ
প্রকাশ:
২৯ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:০৯ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
আয়নাঘরের অভিজ্ঞতা এত ভয়াবহ অনেকেই তা বলতে চায় না বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আয়নাঘরের ভয়াবহ অভিজ্ঞতাসহ অসংখ্য নিপীড়নের গল্প আছে আমাদের এবং এগুলো এতটাই ভয়াবহ যে, তারা এখনও সেগুলো বলতে চায় না। যেখানে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের বারবার বলতে অনুরোধ করা হচ্ছে, কিন্তু তারপরও তারা বলতে চায় না— এতটাই ভয়াবহ ছিল তাদের সেই অভিজ্ঞতাগুলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে ‘বিদ্রূপ ও উপহাসের রাজনীতি: জুলাই বিদ্রোহের সময় কার্টুন ও গ্রাফিতি’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় বৃহস্পতিবার তিনি এসব বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। নাহিদ ইসলাম নিজের আয়নাঘরে থাকার অভিজ্ঞতা বর্ণনা দিয়ে বলেন, আয়নাঘর, যেখানে মানুষকে গুম করা হতো, আমারও আয়নাঘরের অভিজ্ঞতা হয়েছিল- সেখানে ২৪ ঘণ্টা থাকার। আমি থেকেছি সেই রুমটায় এবং দেখেছি দেয়ালে তাদের লেখা, যারা দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বন্দি ছিলেন। তিনি বলেন, আমাদের গত ১৫-১৬ বছরের যে এত এত নিপীড়ন এবং মানুষের যে এত এত গল্প, এগুলো মানুষ আর্টওয়ারের মধ্য দিয়ে জানছে। মেইনস্ট্রিম (মূলধারার) পত্রিকাগুলোতেও তখন কার্টুন আঁকা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তিনি আরও বলেন, শিল্পীরা যদি তাদের এই শিল্পকর্মের মাধ্যমে এগুলো নিয়ে আসেন তাদের অভিজ্ঞতা থেকে, মানুষের অভিজ্ঞতা থেকে, তাহলে বিগত রেজিমটা (আওয়ামী লীগের শাসনামল) আমরা আরও ভালোভাবে বুঝতে পারব। আমাদের আন্দোলনটাও আসলে দেয়াল লিখন এবং আর্টওয়ারের মাধ্যমে এগিয়েছে। আমরা এখন চিন্তা করছি এগুলো সংরক্ষণ করার। মানুষ আসলে কী বলতে চেয়েছিল এবং মানুষ আসলে কী বলতে চায়— এগুলোর উপাদান আমরা সেখানে পাব। নাহিদ ইসলাম বলেন, প্রায় ১৬শ’র মতো আবেদন জমা পড়েছে গুম কমিশনে। সংখ্যাটা বেড়ে পাঁচ হাজার হতে পারে। মানে পাঁচ হাজার মানুষের গুমের অভিজ্ঞতা হয়েছে গত ১৫-১৬ বছরে। এই যে তাদের অভিজ্ঞতাগুলো- আমরা এই কথাগুলো কেউ বলতে পারতাম না। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা। তিনি আন্দোলনের দেয়াল লিখন, ভাষা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার কিভাবে আন্দোলনকে বিস্ফোরিত করেছে— তার তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেন। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এএসএম আমানুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাভিন মুরশিদসহ আরও অনেকে। |