‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল না, স্বাধীনতার সুফল নিয়ে শঙ্কা ছিল জামায়াতের’
প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ০২:২১ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল না জামায়াতে ইসলামী। তবে ভারতের সহযোগিতায় স্বাধীনতার সুফল না পাওয়ার শঙ্কা ছিল দলটির। জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ দাবি করেন।

এছাড়া বর্তমান সরকারের কাছে বেশি সুবিধা পাওয়ার আলোচনাকে মিথ্যা প্রচারণা বলছেন তিনি। অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে কিনা, এমন প্রশ্নে আমিরে জামাত বলেন, সেটি জনগণই নির্ধারণ করবে।

স্বাধীনতা পরবর্তী রাজনীতি কঠিন হলেও গত দেড় দশকে অনেকটাই কোণঠাসা ছিল জামায়াতে ইসলামী। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ দলটির শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দেয়া হয়। কারাবরণ করতে হয় অসংখ্য নেতাকর্মীকে। বিগত শেখ হাসিনা সরকারের পতনের শেষ সময়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় জামায়াতকে। সব মিলিয়ে বেশ কায়দা করেই রাজনীতির মাঠে টিকে থাকতে হয়েছে দলটিকে। ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর আবারও প্রকাশ্য রাজনীতিতে জোরেশোরে মাঠে নেমেছে জামায়াত।

এক প্রশ্নের জবাবে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় যায়, তখনই নিষিদ্ধের ঘোর তাদের পেয়ে বসে। নিষিদ্ধের রাজনীতি আমাদের সমর্থনের বিষয় না। এটি জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিষয়।

সম্প্রতি নির্বাচনের রোডম্যাপের প্রশ্নে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের বক্তব্যে কিছুটা দূরত্বের বিষয়টি গণমাধ্যমে এলেও তা মানতে নারাজ জামায়াত আমির। তিনি বলেন, যৌক্তিক সময়ের মধ্যে মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন সম্ভব নয়। কিছু সংস্কার করবে অন্তর্বর্তী সরকার, আর কিছু সংস্কার করবে নির্বাচিত সরকার। আমরা মনে করি, নৈতিক দায়বদ্ধতা আছে বর্তমান সরকারের। তারা তাড়াহুড়া নেই বলে এই বিষয়টি টেনে লম্বা যেন না করে এই কথা আমরা বারবার বলেছি।

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রসঙ্গ নিয়েও খোলামেলা কথা বলেন ডা. শফিকুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের ভূমিকার ভার জনগণের ওপর ছেড়ে দেন তিনি। তিনি বলেন, আমরা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিলাম না। আমরা আশঙ্কা করেছিলাম, ভারতের সহযোগিতায় যদি দেশ স্বাধীন হয়, তাহলে স্বাধীনতার সুফল পাওয়া যাবে না। এরপরেও এটা সঠিক যে- জামায়াত চেয়েছিল এক পাকিস্তান। কিন্তু পরবর্তীতে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী তাদের নিপীড়ন, নির্যাতন, খুন এবং বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের কারণে সারা জাতি ফুঁসে উঠেছিল, মুক্তিযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। সেই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, দেশ স্বাধীন হয়েছে। এরপর স্বাধীন বাংলাদেশকে আমরা আমাদের কলিজা দিয়ে ভালোবেসে কবুল করে নিয়েছি।

জামায়াত আমির আরও বলেন, তখনকার সময়ে আমাদের চিন্তা বিজয়ী হয়নি, সেই সময় আমাদের চিন্তা পরাজিত হয়েছে- আমাদের সিদ্ধান্ত পরাজিত হয়েছে। এখান জনগণ মূল্যায়ন করবে আমাদের সেই ভূমিকা কতটা যথার্থ ছিল।