ন্যায়পরায়ণ-আল্লাহভীরু শাসক ছাড়া শান্তির আশা করা যায় না: চরমোনাই পীর
প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর, ২০২৪, ০৯:০১ রাত
নিউজ ডেস্ক

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, রাজনীতিতে আদর্শিক ও গুণগত পরিবতনন ছাড়া গণমানুষের মুক্তি আসবে না। বার বার নেতা ও দল পরিবর্তনে কোন কাজে আসবে না। যত দিন পর্যন্ত আদর্শভিত্তিক ন্যায়পরায়ণ, আল্লাহভীরু শাসক না আসবে, তত দিন পর্যন্ত শান্তির আশা করা বৃথা। ১৯৭১ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার হয়েছে মুসলমান।

তিনি বলেন, আজও টুপি পরে অনেক অফিসে ঢোকা যায় না। দাড়ি রেখে অনেক জায়গায় যাওয়া যায় না। মুসলমান দেখলেই কটূক্তি করা হয়। মুসলমানদের সন্ত্রাসী বলা হয়। বোরকা পরা নারীদের চাকরি দেওয়া হয় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দাড়ি-টুপি রেখে চলা যায় না। সবচেয়ে বৈষম্যের শিকার হয়েছে মুসলমান। এরপর বৈষম্যের শিকার হয়েছেন আলেমরা ও কওমি মাদ্রাসার আলেমরা। এ দেশ মুসলমানদের। এ দেশ অন্য কারও নয়। তবে দেশে সবার অধিকার রয়েছে। ইসলাম অনুযায়ী দেশ শাসন চলবে। আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, জাপানের সঙ্গে ও যাঁরা ভারতের গোলামি করেন, তাঁদের শাসক হিসেবে দেখতে চাই না। তিনি বলেন, গণহত্যাকারীরা দেশ থেকে কিভাবে পালালো তার জবাব কে দেবে? তিনি বলেন, উপদেষ্টা সরকার জনগণের সবচেয়ে শক্তিশালী সরকার। কিন্তু কার ভয়ে তারা কঠোর কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।

আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে কক্সবাজারের চকরিয়া থানা সংলগ্ন মাঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানা শাখা আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ জান্নাতুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা দেরাওয়ার হোসাইন সাকী, জেলা সভাপতি মাওলানা মোহাম্মাদ আলী। মুফতী শামসুল হক কাসেমীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে জেলা ও থানান নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

ইসলামী আন্দোলনের আমীর বলেন, যদি ইসলামি অর্থনীতি চালু হয়, তাহলে আগামী পাঁচ বছরে দেশে কোনো গরিব থাকবে না। দেশে যে অর্থনীতি চালু আছে, সেটা গরিবকে আরও গরিব বানাবে। ধনীরা আরও ধনী হবে। তিনি বলেন, কোনো ইসলামবিদ্বেষী ও সমাজ বিধ্বংসী বিকৃত রুচির মানুষকে আমরা বাংলাদেশে উপদেষ্টা দেখতে চাই না।

তিনি আরও বলেন, আমরা রাজপথে নেমেছিলাম জীবনের মায়া ত্যাগ করে এবং মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেব বলে। যেখানে থাকবে না লুটপাট, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, গুম, খুন, অত্যাচার, অবিচার ও দখলদারি। ভেবেছিলাম ৫ আগস্টের পরে সাম্য রক্ষা হবে, জুলুম-অত্যাচার দূর হবে, ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করবে, চাঁদা থাকবে না। মানুষ নির্বিঘ্নে হাঁটবে, ভয় থাকবে না।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, একজন মহিলা একা একা হাঁটলে ধর্ষিত হবেন না, ইভটিজিংয়ের শিকার হবেন না। যেখানে শ্রমিকসহ সবার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আমারা সেই সমাজ ব্যবস্থা চাই। কিন্তু আমরা কি দেখলাম, ৫ আগস্টের পর আবারও দখলদারি, চাঁদাবাজি, খুন, মিথ্যা মামলা, জুলুম, অত্যাচার, অবিচার হচ্ছে।’

তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের নতুন উপদেষ্টা চিত্রনির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার নির্মিত নাটক ও সিনেমার মাধ্যমে সমাজে পরকিয়া, সমকামীতা এবং বিকৃত রুচির প্রসারে সমাজ বিধ্বংসী ভুমিকা পালন করে আসছে। আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের চরম বিরোধী এমন একজন বিকৃত রুচির মানুষ জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সরকারের উপদেষ্টা হতে পারেন না। তাছাড়া সরয়ার ফারুকী ২০১৩ সালে  মতিঝিলের শাপলা চত্ত্বরে নিরীহ হেফাজত কর্মীদের উপর আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের চালানো গণহত্যার একজন সমর্থক।

হাআমা/