ইসলামী রাষ্ট্র গঠিত হলে পূর্ণাঙ্গ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে: মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজী
প্রকাশ:
০১ নভেম্বর, ২০২৪, ০৮:২৩ রাত
নিউজ ডেস্ক |
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজী বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পৃথিবীতে আগমনের পূর্বে কন্যা সন্তানদের জীবিত দাফন করা হত। তাঁর আগমনের পরে তিনি এই জঘন্য প্রথা বন্ধ করে কন্যাশিশুদের বেঁচে থাকার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছেন। রাসূলুল্লাহ সা. মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার যে নমূনা পেশ করেছেন তা পৃথিবীর অন্য কোন মতবাদ, রাষ্ট্র কিংবা ধর্ম তার নজীর দেখাতে পারেনি। আধুনিককালে প্রচলিত অনেক স্লোগানের মাধ্যমে উল্টো মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে একমাত্র ইসলাম। ইসলামী রাষ্ট্র গঠিত হলেই পূর্ণাঙ্গ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। অতএব সুন্নাহ মোতাবেক ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের জন্য আমাদের সকলকে কাজ করতে হবে। আজ শুক্রবার (১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৭ টায় রাজধানীর লালবাগ কেল্লার মোড়স্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র আন্দোলন ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে আয়োজিত ‘সীরাতে নববীর আলোকে প্রচলিত মানবাধিকারের ধারণা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ছাত্র আন্দোলন ঢাকা মহানগর সভাপতি হাফেজ আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে ও মহানগর সহ-সভাপতি হাফেজ আতাউল্লাহর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবেদীন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর আমীর হাফেজ মাওলানা মাহবুবুর রহমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর সেক্রেটারী মোফাচ্ছির হোসাইন, ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি হাফেজ জাকির বিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন ও সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীনুর আলম আকন্দ প্রমুখ। প্রধান আলোচকের বক্তব্যে মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবেদীন বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষের স্বাধীনভাবে চিন্তা করার অধিকার, সম্পদের অধিকার ও নিরাপত্তা, যোগ্য লোকদের যথাস্থানে মূল্যায়ন পাওয়ার অধিকার, পিতা, স্বামী, পুত্রের সম্পদে নারীর অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি নারীদের মত প্রকাশের অধিকার ও প্রকাশিত মতামতের প্রতি সম্মান প্রদর্শনসহ সব ধরনের মানবাধিকার নিশ্চিত করেছেন। আজকের যুগে জাতিসংঘের নেতৃত্বে যারা মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার কাজ করছে তারা মূলত জালেমদের রক্ষা করার কাজ করছে। পৃথিবী যদি মহানবী সা. এর আদর্শকে নতুনভাবে বরণ করে নেয় তাহলে এই ভয়সংকুল পৃথিবীতেও শান্তি-নিরাপত্তা ফিরে আসবে, মানুষ তার নিজ নিজ অধিকার, সম্মান বুঝে পাবে। তিনি সকল মানুষের কল্যাণের লক্ষ্যে মহানবীর জীবন সম্পর্কে অধ্যয়ন করা, জানা ও অনুসরণ করার আহবান জানান। মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধু একজন নবীই ছিলেন না, তিনি একজন আদর্শ শিক্ষক ও রাষ্ট্রনায়কও ছিলেন। তিনি আমাদেরকে ব্যক্তিগত জীবন, সামাজিক জীবন, পারিবারিক জীবন, রাষ্ট্রীয় জীবন পরিচালনার জন্য যে শিক্ষা রেখে গিয়েছেন তা বাস্তবায়ন করতে পারলেই প্রকৃত অর্থে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। রাসূলুল্লাহ সা. ও সাহাবায়ে কেরামের যুগে রাষ্ট্রব্যবস্থা এমন ছিল যেখানে অধিকার আদায়ের জন্য কোন আন্দোলন সংগ্রামের প্রয়োজন পড়ত না। বরং প্রত্যেকে তার নিজ নিজ প্রাপ্য অধিকার যথাযথভাবে বুঝে পেতেন। আজকে যারা প্রচলিত মানবাধিকারের কথা বলেন তারা মুখে মানবাধিকারের কথা বললেও বাস্তবে মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের লেশমাত্রও তাদের মাঝে নেই। ফিলিস্তিনের ব্যাপারে তারা নিশ্চুপ। সেমিনারে আলোচকদের বক্তব্যের উপর তাৎক্ষণিক কুইজের মাধ্যমে মনোযোগী শ্রোতা নির্বাচন ও তাদের পুরস্কৃত করা হয়। খেলাফত নেতৃবৃন্দ প্রধান আলোচক মাওলানা যাইনুল আবেদীনকে ‘হাফেজ্জী হুজুর স্মারক গ্রন্থ’ ও অন্যান্য বই উপহার দেন। হাআমা/ |