বড়কাটারা মাদরাসার প্রবীণ উস্তাদ মাওলানা আবু সাঈদ মোহাম্মদ শফী’র ইন্তেকাল
প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর, ২০২৪, ০৫:৩৭ বিকাল
নিউজ ডেস্ক

|| হাসান আল মাহমুদ ||

রাজধানীর চকবাজারে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি বিদ্যাপীঠ জামিয়া হোসাইনিয়া আশরাফুল উলূম বড়কাটারা মাদরাসার প্রবীণ শিক্ষক প্রাজ্ঞ আলেমেদ্বীন ও বিশিষ্ঠ হাদীস বিশারদ এবং মাদরাসার মজলিশে শুরার সদর শায়েখে বুখারী হযরত মাওলানা আবু সাঈদ মোহাম্মদ শফী (৭০) ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

আজ বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ৮:৫০ মিনিটে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৫ ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। ইন্তেকালের সময় তার বয়স ছিল আনুমানিক ৭০ বছর।

হযরতের সন্তানদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দাফনের জন্য কুমিল্লার বরুড়া থানার পয়েল গাছা গ্রামে পারিবারিক গোরস্থানে নির্ধারণ করা হয়েছে।

আওয়ার ইসলামকে এ বিষয়ে তথ্য নিশ্চিত করেছেন বড়কাটারা মাদরাসার মুহতামিম মুফতী সাইফুল ইসলাম

তিনি জানান, হুজুর চলতি (অক্টোবর) মাসেও দরস দিয়ে আসছিলেন। গত এক সপ্তাহ যাবত অসুস্থ ছিলেন।

মুফতী সাইফুল ইসলাম আরও জানান, হযরতুল আল্লাম আবু সাঈদ মুহাম্মদ শফী সাহেব হুজুর ছিলেন আমাদের সকলের মুরুব্বী। ঢাকার উম্মুল মাদারিস বড় কাটারা মাদ্রাসার দীর্ঘ ৪০ বছরের ওস্তাদ, উস্তাদুল আসাতিযা, শায়েখে বোখারী, ও মজলিশে শুরার প্রধান।

তিনি ছিলেন একজন গভীর তাহকিকী মেযাজের আলিম। কিতাব পড়াতেন গভীর মোতালায়া করে। তিনি অনেক বড় ও জটিল বিষয়কে সহজভাবে সংক্ষেপে উপস্থাপন করতে পারংগম ছিলেন। তার সবচেয়ে বড় একটি গুণ ছিল তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ দুনিয়া বিমুখ। শুধুমাত্র মাদ্রাসা ও মসজিদের খেদমতে নিজেকে সীমাবদ্ধ রেখেছেন। মাদ্রাসার পড়ানোর প্রতি একাগ্রতার কারণে বাইরে অন্য কোন কাজ বা স্বাদ গ্রহণ করেননি।

মুফতী সাইফুল ইসলাম বলেন, হুজুর একেবারেই সাদামাটা জীবন যাপন করতেন। সম্পূর্ণ দুনিয়াবী ঝামেলা মুক্ত জীবন যাপন করেছেন। কথাবার্তায় ছিলেন অত্যন্ত সতর্ক। সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিনয়ী ছিলেন।

হুজুরের বাবা দাদা চাচা খালু সবাই বড় বড় আলেম। বরুড়া মাদ্রাসার প্রথম জামানার অনেক ওস্তাদ হুজুরের পূর্বপুরুষ ছিলেন বলে জানান বড়কাটারা মাদরাসার মুহতামিম মুফতী সাইফুল ইসলাম।

এছাড়া, প্রাজ্ঞ এই দরদি শিক্ষকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে জামিয়া হোসাইনিয়া আশরাফুল উলূম বড়কাটারা মাদরাসার পক্ষ হতে।

শোকবার্তায় জানানো হয়, তিনি সুদীর্ঘ ৪০ বছর উম্মুল মাদারিসের ওস্তাদ ও একজন বিচক্ষণ দায়িত্বশীল, নাযেমে তা'লিমাত, কোষাধক্ষ হিসাবে খেদমত করে গেছেন। তিনি তার বিস্তৃত কর্ম জীবনে অসংখ্য আলেম ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি সুদীর্ঘ কাল ইসলামবাগস্থ শ্বাতিউল বাহার জামে মসজিদে ইমাম ও খতিব হিসাবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।

জামিয়া হোসাইনিয়া আশরাফুল উলুম বড় কাটারা মাদরাসার মজলিশে শুরার পক্ষ থেকে তার শোকসন্তপ্ত পরিবার, ছাত্র, ভক্ত বৃন্দ ও শোভানুধ্যায়ীদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন সহ মরহুমের দারাজাত বুলুন্দীর জন্য মহান রাব্বে কারীমের দরবারে বিশেষ ভাবে দুআ করার জন্য সকলের প্রতি আরজ পেশ করা হয়েছে।

হাআমা/