প্রিয় বান্দার তালিকায় নিবন্ধন
প্রকাশ:
২৬ অক্টোবর, ২০২৪, ১১:৪৬ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
|| নাজমুল হুদা মজনু || আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুমিনের জীবনের সব ক্ষেত্রে অনেক কাছে থাকেন; কাছে আছেন। তাঁকে ডাকলেই তিনি সাড়া দেন। তার কাছে চাইতে কোনো মাধ্যম লাগে না। এর অর্থ এই নয় যে, সুন্নাহ লাগবে না; বরং আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ইবাদতের জন্য মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পথ ও পন্থার বিকল্প নেই। আর কখনো আল্লাহ তায়ালার উদ্দেশ্য এই নয় যে, বান্দাকে কষ্ট দেয়া অথবা আজাব-গজব দিয়ে তাকে ধ্বংস করা। তাইতো আল্লাহ জাল্লা শানুহু তাঁর মনোনীত দ্বীন ইসলামকে সুন্দর করে প্রতিপালনের জন্য তাঁর হাবিবের অনুসরণ-অনুকরণ আবশ্যক করেছেন। কুরআন- সুন্নাহর আলোকে চলাই সিরাতুল মুস্তাকিম; অর্থাৎ সহজ-সরল পথ। তবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বান্দাকে বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে একটু যাচাই-বাছাই করে নেন। এভাবে একসময় সমাজ-সংসারে মানুষ সংশোধনের পথ ধরে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে প্রিয় বান্দার তালিকায় নিবন্ধন লাভ করে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন– সবসময় সব যুগেই কিছু অবিশ্বাসী অভাগা চক্র মুমিনদের ক্ষতি করার জন্য ষড়যন্ত্র করে। কিন্তু তারা মূলত নিজেদেরই ধ্বংসের দিকে ধাবিত করে। আর এতে ইন্ধন জোগায় ইবলিশ শয়তান। তবে আল্লাহর রহমতের ছায়ায় আশ্রয় নেয়া মুমিন বান্দাদের আল্লাহ তায়ালাই রক্ষা করেন। আল্লাহ জাল্লা শানুহু বলেন, (হে নবী,) তুমি (এদের আরাে) বলাে, তােমরা আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য করাে, আনুগত্য করো আল্লাহর রাসূলের (হ্যাঁ), তােমরা যদি মুখ ফিরিয়ে নাও (তাহলে জেনে রেখো), আল্লাহ তায়ালার দ্বীন পৌঁছানাের যে দায়িত্ব তার ওপর দেয়া হয়েছে তার জন্য সে দায়ী, (অপর দিকে আনুগত্যের) যে দায়িত্ব তােমাদের ওপর দেয়া হয়েছে তার জন্য তােমরা দায়ী, যদি তােমরা তাঁর কথামতো চলাে তাহলে তােমরা সঠিক পথ পাবে, রাসূলের কাজ হচ্ছে (আল্লাহ তায়ালার কথাগুলাে) ঠিক ঠিক মতাে পৌঁছে দেয়া। (আন-নূর : ৫৪) দয়াময় আল্লাহ রাব্বুল আলামিন অন্তর্যামী; তিনি মানুষের প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সবকিছুই অবগত। তাই মনে রাখতে হবে– রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনুগত্য মানেই আল্লাহ তায়ালার আদেশ-নিষেধ পালন করা। যেকোনো অবস্থায় আল্লাহর হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুকরণ- অনুসরণ মুমিনের জীবনের পরম পাথেয়। সালাত-সিয়াম এবং মুমিনের জীবনের প্রাত্যহিক কর্মকাণ্ডে সবসময় সুন্নতে রাসূল পালন করা অবশ্য করণীয়। সুন্নাহ ব্যতীত যেকোনো আমল পরিত্যাজ্য। এ ব্যাপারে আবু হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করল, সে আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য করল। আর যে আমার অবাধ্যতা করল, সে আল্লাহ তায়ালার অবাধ্যতা করল। আর যে আমিরের (নেতার) আনুগত্য করল, সে আমারই আনুগত্য করল। যে আমিরের অবাধ্যতা করল, সে আমারই অবাধ্যতা করল। প্রকৃতপক্ষে ইমাম (নেতা) হলেন ঢালস্বরূপ। তার পেছন থেকে যুদ্ধ করা হয়, তার দ্বারা (শত্রুদের কবল থেকে) নিরাপত্তা পাওয়া যায়। সুতরাং শাসক যদি আল্লাহর প্রতি ভয় প্রদর্শনপূর্বক প্রশাসন চালায় এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে, তাহলে এর বিনিময়ে সে সাওয়াব (প্রতিদান) পাবে। কিন্তু সে যদি এর বিপরীত কর্ম সম্পাদন করে, তাহলে তার গুনাহও তার ওপর কার্যকর হবে। (বুখারি-২৯৫৭) মুসলিম উম্মাহর শান্তি-সংহতির জন্য বিশ্বাসীদের যেমন পরস্পর সম্প্রীতির প্রয়োজন তেমনি অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর প্রেরিত মহান বাণী কুরআনুল কারিমে। সেই সাথে তিনি মুমিনের পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য লিপিবদ্ধ করেছেন। লেখক : সাংবাদিক ও সাহিত্যিক এনএ/ |